উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন গতকাল বৃহস্পতিবার একটি নতুন যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধনের সময় ঘটে যাওয়া গুরুতর দুর্ঘটনাকে ‘অপরাধমূলক কাজ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি এই ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, এটি এমন একটি কাণ্ড, যা সহ্য করা যায় না।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর শহর চংজিনের এক জাহাজ কারখানায় পাঁচ হাজার টন ওজনের একটি ডেস্ট্রয়ার যুদ্ধজাহাজের তলা নষ্ট হয়ে গেছে এবং জাহাজটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। কিম জং উন স্বয়ং উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং ঘটনাটি এক মুহূর্তের মধ্যেই জাতির মর্যাদা ও গৌরবকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দুর্ঘটনার জন্য কিম নির্মাণ প্রকল্পে নিয়োজিতদের চরম অবহেলা, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অজ্ঞানতাকে দায়ী করেছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী মাসে (জুন) অনুষ্ঠিতব্য গুরুত্বপূর্ণ পার্টি সম্মেলনের আগেই যুদ্ধজাহাজটি ফের সংস্কার করে প্রস্তুত করতে হবে এবং জাহাজের নকশার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। এই ঘটনায় কোনো হতাহত বা প্রাণহানির তথ্য পাওয়া যায়নি।

উত্তর কোরিয়ার মতো নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রে এ ধরনের স্থানীয় দুর্ঘটনার খবর প্রকাশ করা অত্যন্ত বিরল। তবে এর আগেও কিছু ঘটনার তথ্য সীমিতভাবে প্রকাশ পেয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে একটি সামরিক স্যাটেলাইটের মাঝ আকাশে বিস্ফোরণকে ‘গভীর ব্যর্থতা’ বলে স্বীকার করেছিল তারা। ২০২৩ সালের আগস্টে আরেকটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ব্যর্থতার কারণ হিসেবে জরুরি উৎক্ষেপণ ব্যবস্থার ত্রুটিকে দায়ী করা হয়েছিল।

সর্বশেষ দুর্ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগেই উত্তর কোরিয়া তাদের পশ্চিম উপকূলে একটি পাঁচ হাজার টন ওজনের নতুন যুদ্ধজাহাজটি প্রদর্শন করেছিল। দেশটির দাবি, এই জাহাজে ৭০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র বহনের সক্ষমতা রয়েছে। কিম এই যুদ্ধজাহাজকে নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে ‘অগ্রগতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন এবং জানিয়েছিলেন, এটি আগামী বছরের প্রথম দিকে মোতায়েন করা হবে।

উত্তর কোরিয়ায় মানুষের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বহু আন্তর্জাতিক উদ্বেগ রয়েছে। অনেক সময় সাধারণ কাজের জন্যই কাউকে জেল খাটতে হয়। এখন দেখার বিষয়, এই যুদ্ধজাহাজের ব্যর্থতায় জড়িত ব্যক্তিদের কী ধরনের শাস্তির মুখোমুখি করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ম জ উন দ র ঘটন ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

৩ লাখ মানুষ নিয়ে শুটিং, গিনেস বুকে রেকর্ড

বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমার অধিকাংশ গল্পে যৌথ পরিবারের আবহ দেখা যায়। যার ফলে পাত্র-পাত্রীর সংখ্যাও থাকে অধিক। আবার ঐতিহাসিক সিনেমার জন্য এলাহি আয়োজন করে থাকেন নির্মাতারা। গল্পের প্রয়োজনে দৃশ্যে দেখা মেলে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি। এসব দৃশ্য কখনো কখনো গ্রাফিক্সের মাধ্যমেও সম্পন্ন করে থাকেন। তবে একটি সিনেমায় সত্যি সত্যি ৩ লাখ মানুষের উপস্থিতি ছিল; যা গিনেস বুকে রেকর্ড গড়ে।

সিয়াসাত ডটকমের তথ্য অনুসারে, ‘গান্ধী’ সিনেমায় একটি দৃশ্য ইতিহাস তৈরি করেছে। এটি অন্য কোনো দৃশ্য নয়, মহাত্মা গান্ধীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের দৃশ্য। যে দৃশ্যে ৩ লাখ মানুষ সত্যি সত্যি অংশ নেন। মানুষের উপস্থিতি বোঝাতে এতে কোনো প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়নি।

গিনেস ওয়ার্ল্ডের ওয়েব সাইটের তথ্য অনুসারে, ১৯৮১ সালের ৩১ জানুয়ারি দিল্লিতে ‘গান্ধী’ সিনেমার এই দৃশ্যের শুটিং করেন পরিচালক রিচার্ড। মহাত্মা গান্ধীর সত্যিকারের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের ৩৩ বছর পর। শুটিং টিম দৃশ্যটির জন্য টাকার বিনিময়ে ৯৪ হাজার এবং ২ লাখ স্বেচ্ছাসেবীকে একত্রিত করেছিলেন।

আরো পড়ুন:

জন্মদিনে বিশালের বিয়ে: ১২ বছরের ছোট কনেকে নিয়ে চর্চা

হাঁটুর বয়সি নায়িকাকে চুমু, সমালোচনার মুখে কমল হাসান

সিনেমাটিতে গান্ধী চরিত্রে অভিনয় করেন বেন কিংসলে। এ অভিনেতা যখন চুপচাপ শুয়ে ছিলেন, তখন তার চারপাশে হাজার হাজার মানুষ হাঁটছিলেন। যা সত্যিকার অর্থে খুবই আবেগঘন পরিবেশ তৈরি করেছিল। আর এই দৃশ্যের জন্য কোনো গ্রিন স্ক্রিন বা কোনো কৌশলই ব্যবহার করেননি নির্মাতারা।    

 

‘গান্ধী’ সিনেমায় দৃশ্যটির দৈর্ঘ্য মাত্র ২ মিনিট ৫ সেকেন্ড। এজন্য এলাহি আয়োজন করতে হয়েছিল। শুটিংয়ের জন্য করা হয়েছিল সুপরিকল্পনা। এতে ভারতীয় সেনাবাহিনী, স্থানীয় কিছু গ্রুপ সহযোগিতা করেছিলেন। এই দৃশ্যটি গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে রেকর্ড গড়েছে। সিনেমায় অত্যাধিক এক্সট্রা ব্যবহারের দিক থেকে এই রেকর্ড গড়ে সিনেমাটি। এখনো এই রেকর্ড কোনো সিনেমা ভাঙতে পারেনি।

ভারতের স্বাধীনতাসংগ্রামের অন্যতম অগ্রনায়ক মহাত্মা গান্ধী। শান্তি, মুক্তি ও মানবতার প্রতীক তিনি। ভারতের স্বাধীনতার ৬ মাসের কম সময়ের ব্যবধানে অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান তিনি।

১৯৮২ সালে মহাত্মা গান্ধীর বায়োপিক নির্মিত হয়। এটি নির্মাণ করেন ব্রিটিশ অভিনেতা-নির্মাতা রিচার্ড অ্যাটেনবরো। ‘গান্ধী’ সিনেমা নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ২২ মিলিয়ন ডলার। ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পায় এটি। মুক্তির পর সিনেমাটি আয় করে ১২৭.৮ মিলিয়ন ডলার।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ