ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাব্য পরমাণু চুক্তি নিয়ে তেহরানে যেমন কিছুটা আশা দেখা যাচ্ছে, তেমনি বাড়ছে অনিশ্চয়তাও। একদিকে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তির ব্যাপারে ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছেছেন, অন্যদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি নতুন কোনো চুক্তির সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন।

তেহরানের উত্তরাঞ্চলের তুলনামূলক ধনী এলাকা তাজরিশের বাসিন্দারা সিএনএনকে জানান, নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সম্ভাবনা সুখবর হলেও ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আস্থাশীল হতে পারছেন না তারা। স্থানীয় বাসিন্দা হোমান ঘারুনজাদে বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র আমাদের নিরস্ত্র হওয়ার শর্তে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে চায়, তবে সেটা কোনো ভালো চুক্তি নয়।’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক ও সংসদীয় বাধাই মার্কিন ব্যবসাগুলোকে ইরানের ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার থেকে দূরে রেখেছে। তিনি দাবি করেন, ‘চুক্তি হলে সেটি একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করবে।’

এমন আলোচনার মধ্যেই রোমে শুরু হচ্ছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম দফার পরমাণু আলোচনা। তবে ইরানি সূত্রগুলো বলছে, তারা আলোচনায় বড় কোনো অগ্রগতির আশা করছে না। তেহরানের ধারণা, শুধু চাপ সৃষ্টি করতেই আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে পঞ্চম দফা আলোচনায় বসার ঠিক আগে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ইরানের নির্মাণ খাত প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ‘আইআরজিসি’র নিয়ন্ত্রণে। পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত অন্তত ১০টি কৌশলগত উপাদান তারা ব্যবহার করছে বলেও মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। তাই নতুন এ নিষেধাজ্ঞা। এ বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে পরমাণু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সদিচ্ছা নেই বলে প্রমাণিত হচ্ছে।’

অন্যদিকে, ইসরায়েল তেহরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোয় সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র। যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনা ভেঙে গেলে ইসরায়েল এমন হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, শুধু ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করার শর্তেই চুক্তি হতে পারে।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র পরম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।

‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।

আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।

চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ