হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার ইকরাম গ্রামে ফুটবল খেলা নিয়ে ঝগড়ার জেরে দুইদল লোকের সংঘর্ষে নারীসহ ৩০ জন আহত হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ মে) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত টেঁটাবিদ্ধ আমির আলী, বাবুল মিয়া ও তামিম মিয়াসহ কয়েকজনকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখান থেকে আমির আলীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকীরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের সাহাবুদ্দিনের ছেলে আমির আলী ও সাত্তার মিয়ার ছেলের মধ্যে ফুটবল খেলার সময় ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ও মুরুব্বিরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলে, “অভিযোগ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।”
ঢাকা/মামুন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঘরে হাঁটুপানি, ভেলায় করে অন্তঃসত্ত্বাকে নেওয়া হলো হাসপাতালে
সকাল থেকে ঘরে পানি উঠতে শুরু করে। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা কামরুন নাহারকে (২৩) নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তাঁর মা ও চাচি। দুপুর পর্যন্ত ঘরে হাঁটুপানি। বাধ্য হয়ে কলাগাছের ভেলায় করে কামরুন নাহারকে নিয়ে রওনা হন তাঁরা।
গতকাল বুধবার দুপুরে ভেলাটি যখন বুকসমান পানি মাড়িয়ে ফুলগাজী উপজেলা বাজারের সামনে পৌঁছে, তখন আশপাশে কোনো যানবাহন ছিল না। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফেনী থেকে আসা এক সাংবাদিক একটি পিকআপ ভাড়া করে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
ফেনীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে গতকাল সন্ধ্যায় কন্যাসন্তানের জন্ম দেন কামরুন নাহার। তাঁর স্বামী মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, অস্ত্রোপচার ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে সন্তানের জন্ম হয়েছে। নবজাতক ও মা দুজনেই সুস্থ আছেন।
গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে ইউসুফের সঙ্গে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, স্ত্রীর প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল আগস্টের প্রথম সপ্তাহে। তাই তাঁকে ফুলগাজী উপজেলার পূর্ব ঘনিয়ামোড়া গ্রামে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে তিনি নিজে কর্মস্থল রাঙামাটিতে চলে যান। গত মঙ্গলবার রাত থেকে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করলে রাঙামাটি থেকে স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না। একপর্যায়ে স্ত্রীর প্রসবব্যথা ওঠে। তখন তাঁর শাশুড়ি ও চাচিশাশুড়ি কলাগাছের ভেলায় করে কামরুনকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দেন। প্রথমে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলেও সেখান থেকে তাঁকে সরাসরি ফেনীর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। বেলা দেড়টার দিকে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুনফেনীর ২ নদী বইছে বিপৎসীমার ওপরে, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে কাল থেকে১৭ ঘণ্টা আগেহাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স রত্না রানী বসাক বলেন, কামরুন নাহার স্বাভাবিকভাবে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। নবজাতক ও মা উভয়েই সুস্থ আছেন, তবে রাতের দিকে মায়ের বুকের দুধ না পাওয়ায় শিশুটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
পানি থেকে ভেলায় তুলে হাসপাতালে পাঠানোর সময় সহযোগিতা করা স্বেচ্ছাসেবক ও গণমাধ্যমকর্মী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, মুঠোফোনে বন্যার ভিডিও ধারণ করার সময় দেখতে পান, দুজন বয়স্ক নারী এক প্রসূতিকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তিনি দ্রুত নিজের মোটরসাইকেলে গিয়ে একটি পিকআপ ভাড়া করেন। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে প্রসূতি তখন একটি দোকানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
আরও পড়ুন‘চোখের পলকে ঘরটি নদীতে ভেঙে পড়ল, এক কাপড়ে বের হয়েছি’ ২২ ঘণ্টা আগেফেনীর সিভিল সার্জন মোহাম্মাদ রুবাইয়াত বিন করিম বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব উপজেলা পর্যায়ে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বন্যা চলাকালীন ও পরবর্তী সময়েও এসব টিম কাজ করে যাবে।