সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস সোমবার (২৬ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজারে পতন ঘটল, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪ হাজার ৭২০ পয়েন্টে।

সোমবার ডিএসই ও সিএসইতে আগের কার্যদিবসের চেয়ে টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। তবে, উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম কমেছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৬.

৯৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭১৯ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ০.৭৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৩ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৪.৬১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

আরো পড়ুন:

বিডি সার্ভিসেসের ৯ মাসে লোকসান বেড়েছে ৩৪ শতাংশ

পুঁজিবাজারে কারসাজির শাস্তি হয় না, এটাই মূল সমস্যা: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

ডিএসইতে মোট ৩৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১৪৮টি কোম্পানির, কমেছে ১৬৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭টির।

এদিন ডিএসইতে মোট ২৮২ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৩৫ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩৫.৫৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৬৯ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫২.৭৯ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ২১৪ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ০.৮৪ পয়েন্ট কমে ৮৫৩ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১০১.৭০ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ১৯০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ১৭২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৭৬টি কোম্পানির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮টির।

সিএসইতে ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

ঢাকা/এনটি/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল খ ট ক র শ য় র ও ইউন ট স এসই ড এসই

এছাড়াও পড়ুন:

টানা পতনে ডিএসইর সূচক কমে পাঁচ বছর আগের অবস্থানে

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গত প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। আজ মঙ্গলবার লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স ৪১ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ৪ হাজার ৬৭৮ পয়েন্টে।

গত পাঁচ দিনের টানা দরপতনে সূচকটি গত প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এর আগে সর্বশেষ ২০২০ সালের ১২ আগস্ট ডিএসইএক্স সূচকটি ৪ হাজার ৬৩৩ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল। টানা পতনে সূচক এখন আবার ২০২০ সালের আগস্টের অবস্থানে ফিরে গেছে। সেই সঙ্গে লেনদেনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমেছে। এ অবস্থায় বাজারে এখন শুধু হতাশা বিরাজ করছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচকটি ১২৩ পয়েন্ট বা আড়াই শতাংশের বেশি কমেছে। প্রতিদিনই লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতন হয়। বাজারের পতন এতটাই ভয়াবহ পর্যায়ে নেমেছে যে লোকসান এড়াতে ভালো কোম্পানির শেয়ার বিক্রি দিয়েও বাজার ছাড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি এখন শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউস, স্টক এক্সচেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ  সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও বড় ধরনের দুশ্চিন্তায় পড়েছে। কারণ, বাজারের যে অবস্থা, তাতে এসব প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকা এখন সংকটের মুখে।

শীর্ষস্থানীয় একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি দৈনন্দিন খরচের আয়ও উঠছে না। ফলে কর্মীদের বেতন–ভাতাসহ নিয়মিত খরচ জোগাতেই দেনা বা ঋণ করতে হচ্ছে। ব্রোকারেজ হাউসের পাশাপাশি স্টক এক্সচেঞ্জগুলোও পরিচালন লোকসান গুনছে।

বাজারের দরপতন এতটাই ভয়াবহ যে গত বছর রেকর্ড মুনাফার পরও গত দুই দিনে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারের দাম ৬ টাকা বা সাড়ে ১১ শতাংশ কমে গেছে। আজ মঙ্গলবার দিন শেষে ব্যাংকটির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমে ৪৫ টাকা ৯০ পয়সায় নেমেছে। অথচ গত রোববারও ব্যাংকটির প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৫২ টাকা। গত দুই দিনে বড় ধরনের দরপতনের কারণে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম গত ৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ৭ আগস্ট ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ছিল প্রায় ৪৩ টাকায়। আগস্টে দেশের বড় ধরনের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটির দাম সেপ্টেম্বরের শুরুতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫৭ টাকায় উঠেছিল। সেখানে থেকে এখন তা ৪৬ টাকায় নেমে এসেছে।

একই ভাবে গত দুই দিনে স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের দাম ৭ টাকা কমে ২০০ টাকায় নেমে এসেছে। গত ৯ মাসের মধ্যে এটিই স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের সর্বনিম্ন বাজারমূল্য। সর্বশেষ গত বছরের ১১ জুন স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের বাজারমূল্য সর্বনিম্ন ১৯৮ টাকায় নেমেছিল। প্রায় এক বছরের ব্যবধানে এখন আবার তা একই পর্যায়ে নেমেছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে বাজারের মন্দাভাবের কারণে এখন ভালো কোম্পানির শেয়ারেও আস্থা পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে লোকসানে ভালো শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে অনেকে বাজার থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজার নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে বিনিয়োগকারীসহ বাজার অংশীজনেরা বাজার নিয়ে হতাশায় ভুগছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নীরবতা এই হতাশাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এ কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপরও আস্থা হারাতে বসেছেন বাজার অংশীজনেরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পতনের ধারা গভীর হচ্ছে সূচক ৫ বছরে সর্বনিম্ন
  • পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতন, বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ
  • টানা পতনে ডিএসইর সূচক কমে পাঁচ বছর আগের অবস্থানে
  • সিএসইতে কমোডিটি ডেরিভেটিভস মার্কেট চালুর অনুমতি
  • পুঁজিবাজারে পতন অব্যাহত