চাকরি ফেরত পেলেন নোবিপ্রবিতে ৭ শিক্ষক-কর্মকর্তা
Published: 26th, May 2025 GMT
তুচ্ছ কারণে চাকরিচ্যুত দুই শিক্ষক ও পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) প্রশাসন।
সোমবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চাকরিতে পুনর্বহাল হওয়া শিক্ষকরা হলেন- ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো.
আরো পড়ুন:
বরখাস্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের যবিপ্রবিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ‘নাকাল’ কুবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেন, সেকশন অফিসার (অস্থায়ী) ইব্রাহীম খলিল, এফটিএনএস বিভাগের ল্যাব টেকনিশিয়ান মাহিন হোসেন, নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল মান্নান, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন এবং মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতা ও রাজনৈতিক বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এসব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। অনেক সময় তুচ্ছ কারণ বা যথাযথ তদন্ত ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর চাকরি ফেরত চেয়ে আবেদন করেন তারা।
চাকরি ফিরে পাওয়া কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বলেন, “লঘু কারণ দেখিয়ে আমাকে বরখাস্ত করা হয়। আমি তখন যেসব দায়িত্বে ছিলাম, সততার সঙ্গে পালন করেছি। লোকবল কম থাকায় কিছু কাজ করতে সময় লাগত, কিন্তু তা সংখ্যায় খুবই কম। এজন্য আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে আমি আইনজীবীর মাধ্যমে রিট করি। বর্তমান প্রশাসন আমার চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে বরখাস্ত হওয়া সময়কে লঘুদণ্ড হিসেবে বিবেচনায় রেখেছেন।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “পূর্ববর্তী সময়ে তারা যোগ্যতা দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। তাদের চাকরিতেও যুক্ত করানো হয়। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়া তাদের নিয়োগ স্থগিত এবং বরখাস্ত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত কমিটি ও রিভিউ কমিটির সুপারিশ এবং যথাযথ আইন মেনে রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়োগ স্থগিতকরণের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “একজন প্রভাষকের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে। তার চাকরি ফিরিয়ে দিলেও তিনি প্রভাষক পদে জয়েন করেননি। সহকারী অধ্যাপক পদে পরীক্ষা দিয়ে নিয়োগ পান। এ থেকে বোঝা যায়, প্রকৃতপক্ষে যোগ্য ছিলেন।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত র চ কর সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক পিছিয়ে রাজস্ব আদায়
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৭ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটির ১০ মাসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা প্রায় ৭১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা কম। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে এনবিআরকে পরবর্তী দুই মাসে ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা আহরণ করতে হবে। রাজস্ব আদায়-সংক্রান্ত এনবিআরের সাময়িক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থবছরের ১০ মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ সময় রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে গত এপ্রিল পর্যন্ত আদায় হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। কিন্তু এ সময়ে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ মাসে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায় ১ লাখ ১১ হাজার ২০২ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৮১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এ খাতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আয়কর খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৯৪ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ‘সাধারণত মে-জুন মাসে রাজস্ব আদায় সবচেয়ে বেশি হয়। কিন্তু সরকারের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কর্মসূচির কারণে মে মাসে বড় ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে আগামী মাসে এই ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।’
চলতি মাসে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা বেশ কয়েকদিনের কর্মসূচিতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে রাজস্ব কার্যক্রম। এতে চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টম হাউস এবং বিভিন্ন স্থলবন্দরে শুল্কায়ন কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এতে রাজস্ব আদায়ে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলছে, চলতি পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব ঘাটতির অঙ্ক ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। আগামী ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তার আগেই রাজস্ব ঘাটতির এই চিত্র সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলতি অর্থবছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে এনবিআরের কার্যক্রমে গতি কমে যায়। ডিসেম্বর থেকে কিছুটা গতি পেলেও এপ্রিল-মে মাসে আন্দোলনের ফলে আবারও রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়েছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছে। ফলে গতকাল থেকে রাজস্ব আদায় ও শুল্ক কার্যক্রম অনেকটা স্বাভাবিক রূপ নিয়েছে।