ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক আচরণের অভিযোগে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। আর ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে আরেক শিক্ষককে দুই বছরের জন্য চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৬৫তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

গতকাল রোববার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের সই করা চিঠিতে তাঁদের বিরুদ্ধে রিজেন্ট বোর্ডের নেওয়া ওই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি জানানো হয়। আজ সোমবার চিঠির বিষয়টি প্রকাশ পায়।

চাকরিচ্যুত শিক্ষক হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান (পূর্বে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান। আর বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো.

আনোয়ার হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) তামজিদ হোসাইন চৌধুরী প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের দাখিল করা প্রমাণ, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে জানার জন্য শিক্ষক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। অপর দিকে শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চিঠি হাতে পাননি। তবে শুনেছেন। চিঠি হাতে পাওয়ার পর চিঠির ভাষার ধরন বুঝে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন।

রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সহকারী অধ্যাপক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বিরুদ্ধে বিভাগের এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগে ‘বিয়ে করার কথা বলে অনৈতিক সম্পর্কের’ বিষয়টি তুলে ধরেন। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পাওয়ায় ১৭ মে অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের সভায় তাঁকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়।

অন্যদিকে সহযোগী অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। তাঁরা বিষয়টি প্রথমে উপাচার্য বরাবর এবং পরে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কমিটির কাছে উপস্থাপন করেন। কমিটি তাঁদের সাক্ষ্য ও অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। সেই ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ড তাঁকে দুই বছরের জন্য বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ বব দ য য ন হয়র ন বরখ স ত র জন য ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

পশুর হাটে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধীর দুই নেতা গ্রেপ্তার

চাঁদাবাজির অভিযোগে কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর পশুর হাটের ‘বৈধ’ ইজারাদার মাহাবুব রহমান ও তাঁর সহযোগী মো. আলমগীর গ্রেপ্তার হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রসিদ ছাড়া চাঁদা তোলার সময় যৌথ বাহিনীর হাতে তারা আটক হন। গতকাল বুধবার সকালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। সেখানে বৈধতার কাগজপত্র দেখালে শুনানি শেষে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।

গ্রেপ্তার মাহাবুব রহমান কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। মো. আলমগীর কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক। গত মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে যাত্রাপুর গরুর হাটে রসিদ ছাড়া চাঁদা তোলার অভিযোগ ওঠে। পরে ফেনী জেলার মহিষ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন আজাদ হাটে টহলরত যৌথ বাহিনীর কাছে অভিযোগ করলে তাদের আটক করা হয়। আলমগীর পুরো ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন।

এজাহারে বলা হয়, ফেনীর ছাগলনাইয়ার মহিষ ব্যবসায়ী আনোয়ার মঙ্গলবার যাত্রাপুর হাট থেকে ১৭টি মহিষ কেনেন। পরে অভিযুক্তরা তাঁকে (আনোয়ার) গরু-মহিষ বিক্রির রসিদ শেডঘরে নিয়ে যান এবং প্রত্যেক মহিষের জন্য ৫০০ টাকা করে ৮ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করেন। এ সময় আনোয়ার তাদের কাছে রসিদ চাইলে তারা তা দেখাতে পারেননি। আনোয়ার বিষয়টি যৌথ বাহিনীকে জানালে এ দু’জনকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, ‘মাহাবুব রহমান ওই হাটের ইজারাদার। তিনি চাঁদাবাজ নন। আমার সঙ্গে মাহাবুব রহমানের কথা হয়েছে। তারা কাগজ প্রদর্শনের সময় পাননি। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের আটক করে যৌথ বাহিনী। সকালে কাগজপত্র দেখালে তাদের জামিন হয়।’ 

কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মো. হাবিবুল্লাহ জানান, মাহাবুব রহমান যাত্রাপুর হাটের বৈধ ইজারা মালিক। তবে ওই সময়ে তাঁর কাছে কাগজপত্র না থাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক করা হয়। সকালে থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. আলমগীর বলেন, দুপুরে যথাযথ কাগজ আদালতে দাখিল করে জামিনে মুক্ত হয়েছি। এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ