বৃহস্পতিবারের মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি
Published: 26th, May 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে টানা ১২ দিন কলমবিরতি ও কর্মবিরতি পালনের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে গত রোববার কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। তবে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ২৯ মে বৃহস্পতিবারের মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে অপসারণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে আন্দোলনের জন্য গঠিত ওই পরিষদ।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এনবিআর বিলুপ্তির জন্য পাস হওয়া অধ্যাদেশের বিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান লুকোচুরির আশ্রয় নেন এবং যথাযথ ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হন। অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুতি থেকে প্রতিটি ধাপে তিনি লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছেন এবং চরম অসহযোগিতা করেছেন। সেই সঙ্গে সরকারকে ভবিষ্যৎ রাজস্ব কাঠামো নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা জানানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে তারা এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানের
পদত্যাগ চান।
গত বৃহস্পতিবার রাজস্ব সংস্কার ঐক্য পরিষদ প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া স্মারকলিপিতে চারটি দাবি করে। এগুলো হলো– এনবিআর অধ্যাদেশ বাতিল, চেয়ারম্যানকে অপসারণ, রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ এবং অংশীজনের মতামত নিয়ে রাজস্ব সংস্কার নিশ্চিত করা। গত সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থাকবে এবং একে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগে উন্নীত করা হবে। রাজস্বনীতির পৃথক কাঠামো কীভাবে হবে তা এনবিআর, রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটি এবং অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে রাজস্ব বোর্ডের ডেপুটি কমিশনার শাহাদাত জামিল বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যানের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট তৈরি হওয়ায় তাঁর সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন এবং উপকর কমিশনার রইসুন নেসা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করার পর দেশের সব কর, ভ্যাট ও কাস্টমস অফিসের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। আন্দোলনের কারণে কাজ যতটুকু কম হয়েছে, আগামী দিনগুলোতে অতিরিক্ত সময় কাজ করে তা পুষিয়ে দেবেন।
আগামী মাসে ‘কেমন এনবিআর চাই’– এই শিরোনামে সেমিনারের আয়োজনের কথাও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। এর আগে গতকাল রোববার রাতে চলমান আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশের সব দপ্তরে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির কর্মসূচিও আপাতত স্থগিত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গত ১৪ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে কলমবিরতি ও কর্মবিরতি পালন করা হয়। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, রপ্তানি ও বাজেট কার্যক্রমকে আন্দোলনের আওতামুক্ত রাখা হয়। এখন কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত হলেও এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে অসহযোগিতা চলবে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আশা করে, সরকার যথাসময়ে চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে রাজস্ব প্রশাসনে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনবে। অন্যথায় তারা নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দেবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সায়েমের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে পাকিস্তানের জয়ে শুরু
জয়ের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় শেষ টি-টোয়েন্টি জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতেও জয় পেয়েছে তারা।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক সায়েম আইয়ুব। তার ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান লাডারহিলে ৬ উইকেটে ১৭৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেননি। দারুণ ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে সায়েম ২০ রানে ২ উইকেট নেন। ১৪ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান শুরুতে শাহিবজাদা ফারহানের উইকেট হারায়। ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তিনে নেমে ফখর সায়েমকে সঙ্গ দেন। দুজন ৮১ রানের জুটি গড়েন। এ সময়ে ফখর ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ২৮ রান করেন। বাকি রান আসে সায়েমের ব্যাটে। এ সময়ে তিনি তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। হোল্ডারের বলে এলবিডব্লিউ হলে থেমে যায় তার ইনিংস।
এরপর হাসান নওয়াজের ১৮ বলে ২৪, সালমান আগার ১০ বলে ১১, ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৫ রানে পাকিস্তান লড়াকু পুঁজি পায়। শেষ দিকে ১ বল খেলার সুযোগ পান হারিস। ছক্কায় উড়িয়ে পাকিস্তানের শেষটা ভালো করেন তিনি।
বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা ছিলেন শামার জোসেফ। ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৭২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর হঠ্যাৎ ছন্দপতন। ৫ রান পেতেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওই ধাক্কার পর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জনসন চার্লস ও জুয়েল অ্যান্ড্রু ৩৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। শেই হোপ (২), গুদাকেশ মোটি (০), শেফরন রাদারফোর্ড (১১) ও রস্টন চেজ (৫) দ্রুত আউট হন। শেষ দিকে পরাজয়ের ব্যবধান কমান হোল্ডার ও জোসেফ। হোল্ডার ১২ বলে ৪ ছক্কায় ৩০ রান করেন। ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২১ রান করেন জোসেফ ।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে সেরা ছিলেন হাসান নওয়াজ। ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার। সায়েমের ২ উইকেট বাদে ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।
আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/ইয়াসিন