ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী। প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন জাপান সফর নিয়ে গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ কী– এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কাজ করবেন। তবে আদালতের সিদ্ধান্ত দেশে দ্রুত কার্যকর করতে পারলেও দেশের বাইরে সেটা হয় না। আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে এবং সেভাবে কাজ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সন্তুষ্ট কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো অনেক আকর্ষণীয়। এখানে সন্তুষ্টির বিষয় নেই। আমরা ইস্যু নিয়ে কাজ করি এবং তা যদি সমাধান হয়, তাহলে আমাদের সন্তুষ্টি থাকে।’ 

দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে উভয় দেশের সম্মতি থাকতে হবে। দুই পক্ষ যতক্ষণ পর্যন্ত এ নিয়ে সম্মত হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত ফেরানো যাবে না। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে এ বিষয়গুলো সমাধান হয়।’ 

ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এ নিয়ে অবশ্যই আমরা ভারতের কাছে বলছি। যারা আমাদের সরকারবিরোধী, স্বার্থবিরোধী– তাদের প্রশ্রয় না দেওয়ার বিষয়ে বলছি। তবে আমরা আলাদা করে তাদের বলি না, সার্বিকভাবে বলি।’ 

ভারতের তালিকা অনুযায়ী পুশইন করা হচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, যাদের পুশইন করা হচ্ছে, তারা ওই তালিকায় আছেন কিনা তা যাচাই করে দেখতে হবে। এর আগে এটা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো কিছু বলা যাবে না। এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবি সমন্বয় করে কাজ করছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র ক জ কর অন য য়

এছাড়াও পড়ুন:

পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করল পাকিস্তান-সৌদি আরব

পাকিস্তানের ওপর কেউ হামলা চালালে সৌদি আরব তাদেরকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। আবার সৌদি আরবের ওপর কেউ আগ্রাসন চালালে পাকিস্তানও সৌদি আরবকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। ঠিক এমনই একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান।

জিও নিউজের খবর অনুসারে, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সৌদি আরব সফরের সময় এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শাহবাজের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ চুক্তির কথা জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

এক সপ্তাহে সৌদি আরবে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার

২০ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেলেন সৌদির ‘ঘুমন্ত যুবরাজ’

চুক্তি স্বাক্ষরের পর উভয় দেশ একটি যৌথ বিবৃতিতে জানায় যে, ভ্রাতৃত্ব, ইসলামিক সংহতি ও অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে এবং প্রায় আট দশকের দীর্ঘ অংশীদারত্বের ওপর দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

ক্রাউন প্রিন্সের আমন্ত্রণেই শরিফ সৌদি আরব সফরে গেছেন বলেও তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সৌদি আরবের সঙ্গে হওয়া এই প্রতিরক্ষা চুক্তির ফলে এখন ‘এক দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনকে উভয়ের বিরুদ্ধে আগ্রাসন’ বিবেচনা করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা এই চুক্তিকে 'ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন অগ্রগতি' বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, এটি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতিতে উন্নীত করেছে। তারা বলছেন যে, এই পদক্ষেপ কেবল পাকিস্তান-সৌদি সম্পর্ককে দৃঢ় করছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়া এবং মুসলিম বিশ্বের জন্যও এর গুরুত্ব রয়েছে। এটি পাকিস্তানকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার সবচেয়ে সক্ষম মুসলিম শক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে।

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন যে, সাম্প্রতিক আঞ্চলিক অস্থিরতা, ইসরায়েলের হামলা, দোহা সম্মেলন এবং আরব বিশ্বে সার্বভৌমত্ব নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই চুক্তির তাৎপর্য অনেক বেশি। এটি প্রমাণ করে যে, বর্ধিত হুমকির সময়ে সৌদি আরব পাকিস্তানকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে বিশ্বাস করছে। 

পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়, চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করতে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, যাকে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ