আন্তর্জাতিক বিধি মেনে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর সুযোগ আছে: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব
Published: 27th, May 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী। প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন জাপান সফর নিয়ে গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ কী– এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কাজ করবেন। তবে আদালতের সিদ্ধান্ত দেশে দ্রুত কার্যকর করতে পারলেও দেশের বাইরে সেটা হয় না। আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে এবং সেভাবে কাজ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সন্তুষ্ট কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো অনেক আকর্ষণীয়। এখানে সন্তুষ্টির বিষয় নেই। আমরা ইস্যু নিয়ে কাজ করি এবং তা যদি সমাধান হয়, তাহলে আমাদের সন্তুষ্টি থাকে।’
দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে উভয় দেশের সম্মতি থাকতে হবে। দুই পক্ষ যতক্ষণ পর্যন্ত এ নিয়ে সম্মত হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত ফেরানো যাবে না। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে এ বিষয়গুলো সমাধান হয়।’
ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এ নিয়ে অবশ্যই আমরা ভারতের কাছে বলছি। যারা আমাদের সরকারবিরোধী, স্বার্থবিরোধী– তাদের প্রশ্রয় না দেওয়ার বিষয়ে বলছি। তবে আমরা আলাদা করে তাদের বলি না, সার্বিকভাবে বলি।’
ভারতের তালিকা অনুযায়ী পুশইন করা হচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, যাদের পুশইন করা হচ্ছে, তারা ওই তালিকায় আছেন কিনা তা যাচাই করে দেখতে হবে। এর আগে এটা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো কিছু বলা যাবে না। এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবি সমন্বয় করে কাজ করছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র ক জ কর অন য য়
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি