ভারতে পাচারের শিকার ৩৬ কিশোর-কিশোরী দেশে ফিরেছে
Published: 27th, May 2025 GMT
ভারতে পাচারের শিকার দুই শিশুসহ ৩৬ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগের পর দেশে ফিরেছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ পাচার হওয়া বাংলাদেশিদের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ফেরত আসারা যশোর, রাজশাহী, খুলনা, নোয়াখালী, কুড়িগ্রাম, নাটোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কক্সবাজার, ঢাকা, নেত্রকোণা, রংপুর, মাদারীপুর, নরসিংদী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লক্ষীপুর ও চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা।
আইনি সহায়তা দিতে রাইটস যশোর, জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবী সমিতি ও জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, শিশু সুরক্ষা সংস্থা এই ৩৬ বাংলাদেশিকে গ্রহণ করেছে।
দেশের বিভিন্ন সীমান্তপথে তারা অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে সে দেশের পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল।
জাস্টিজ অ্যান্ড কেয়ারের যশোর শাখার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আব্দুল মুহিত জানান, ভালো কাজের প্রলোভনে দেশের বিভিন্ন সীমান্তপথে দালালের মাধ্যমে তারা ভারতে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় যায়। সেখানে বিভিন্ন বাসাবাড়ি বা অন্যান্য কাজ করার সময় পুলিশ তাদের আটক করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশ তাদের জেলে পাঠায়। পরে আইনি সহায়তা দিতে ভারতীয় একাধিক মানবাধিকার সংস্থা তাদের আদালত থেকে ছাড়িয়ে হেফাজতে নেয়।
তিনি আরো জানান, বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগের পর দুই দেশের সরকারের সহযোগিতায় বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তারা দেশে ফেরার সুযোগ পায়। ফেরত আসা বাংলাদেশিরা যদি পাচারকারীদের শনাক্ত করে আইনি সহায়তা চায়, তাহলে দেওয়া হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, “ভারত ফেরত শিশুসহ ৩৬ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরীকে আমরা গ্রহণ করেছি। কার্যক্রম শেষে বেনাপোল পোর্ট থানায় তাদের সোপর্দ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “সেখান থেকে এনজিও সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, রাইটস যশোর, মহিলা আইনজীবী সমিতি ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা তাদের গ্রহণ করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে।”
ঢাকা/রিটন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সংসার করা নিয়ে আদালতে স্বামী–স্ত্রীর ঝগড়া, শাড়িতে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা
ঝালকাঠিতে আদালতের কক্ষে পরনের শাড়িতে কেরোসিন ঢালার পর আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন এক নারী। তবে আদালতে উপস্থিত পুলিশ ও বিচারপ্রার্থীরা তাৎক্ষণিক ছুটে এসে আগুন দেওয়া থেকে তাঁকে নিবৃত্ত করলে কোনো অঘটন ঘটেনি। আজ রোববার দুপুরে নলছিটি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (চতুর্থ তলা) আসামিদের কাঠগড়ার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নলছিটি উপজেলার দপদিপয়া ইউনিয়নের কয়া গ্রামের এইচ এম শাহ আলমের মেয়ে নুসরাত জাহান (২১) তাঁর স্বামী আল আমিনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বর্তমানে আল আমিন কারাগারে আছেন। মামলাটি করার পরই আল আমিন তাঁর স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ দেন। আজ মামলাটির ধার্য তারিখে বাদী নুসরাত জাহান তাঁর স্বামী আল আমিনের সঙ্গে পুনরায় সংসার করার জন্য জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু স্বামী আল আমিন নুসরাতের সঙ্গে সংসার করতে চান না।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, আদালতের বিচারক মিরাজুল ইসলাম এজলাসে ওঠার আগে সংসার করা নিয়ে কাঠগড়ার সামনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে কাঠগড়ার সামনে নিজের পরনের শাড়িতে কেরোসিন ঢালেন নুসরাত জাহান। এরপর তিনি ম্যাচ বের করে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে আদালতে উপস্থিত পুলিশ ও বিচারপ্রার্থীরা তাৎক্ষণিক তাঁকে নিবৃত্ত করেন।
পরে আদালতের বিচারকের নির্দেশে ওই নারীকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়। এদিকে স্বামী আল আমিনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান আদালতের বিচারক মিরাজুল ইসলাম। আজ বিকেলে আদালত পুলিশ ওই নারীকে পরিবারের জিম্মায় দিয়েছে।
নুসরাত জাহানের আইনজীবী হোসেন আকন খোকন বলেন, আদালতের বিচারক এজলাসে ওঠার আগেই কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। স্বামী তালাকের নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও পুনরায় সংসার করার দাবিতে স্বামীর জামিন চেয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক পুলক চন্দ্র রায় বলেন, পুলিশের তৎপরতায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। মানবিক কারণে ওই নারীকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।