বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২০২৯ সাল পর্যন্ত দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। জাতিসংঘের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) বার্ষিক জলবায়ু প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

জাতিসংঘ গতকাল বুধবার সতর্ক করে বলেছে, গড় উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক অতিক্রম করার ৭০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। খবর এএফপির।

ডব্লিউএমওর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে রেকর্ড উষ্ণতম বছর পার করার পর পৃথিবী উষ্ণতার ঐতিহাসিক স্তরে থাকবে। ডব্লিউএমওর উপমহাসচিব কো ব্যারেট বলেন, ‘আমরা রেকর্ডে থাকা ১০টি উষ্ণতম বছর পার করেছি। দুর্ভাগ্যবশত ডব্লিউএমওর এই প্রতিবেদন আগামী বছরগুলোতে উষ্ণতা বাড়ার ক্ষেত্রে কোনো বিরতির সংকেত দিচ্ছে না। ফলে আমাদের অর্থনীতি, দৈনন্দিন জীবন, বাস্তুতন্ত্র এবং গ্রহের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ ডব্লিউএমওর সর্বশেষ এই প্রক্ষেপণ যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিসের (বিএমও) জাতীয় আবহাওয়া দপ্তরের সংকলিত তথ্য। সংস্থাটি একাধিক বৈশ্বিক পূর্বাভাস কেন্দ্রের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন তৈরি।

এদিকে, সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে প্রতি বছর ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের চেয়ে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকবে।

মেনুথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইরিশ জলবায়ু বিশ্লেষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক পিটার থর্ন বলেন, ‘২০২৭ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি আমাদের ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’ ডব্লিউএমও বলছে, ২০২৯ সালের মধ্যে অন্তত একটি বছর উষ্ণতার আগের রেকর্ড (২০২৪) ভাঙার ৮০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ার এই প্রবণতাকে বিপজ্জনক বলে মনে করছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। গত সপ্তাহে চীনের কিছু এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কিছু এলাকায় ছিল প্রায় ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাকিস্তানেও ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের জলবায়ুবিদ ফ্রিডেরিখ অটো বলেছেন, ‘আমরা এরই মধ্যে উষ্ণায়নের একটি বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছেছি। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, আলজেরিয়া, ভারত, চীন এবং ঘানায় ভয়াবহ বন্যা, কানাডায় দাবানল দেখা দিয়েছে। এ সময়ে তেল, গ্যাস এবং কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভর করা সম্পূর্ণ পাগলামি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স লস য

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • চ্যাম্পিয়নস লিগ: কোথায় হবে ২০২৮ ও ২০২৯ সালের ফাইনাল
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা