আগামী ৪ বছরে দেড় ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়তে পারে: জাতিসংঘ
Published: 29th, May 2025 GMT
বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২০২৯ সাল পর্যন্ত দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। জাতিসংঘের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) বার্ষিক জলবায়ু প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জাতিসংঘ গতকাল বুধবার সতর্ক করে বলেছে, গড় উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক অতিক্রম করার ৭০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। খবর এএফপির।
ডব্লিউএমওর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে রেকর্ড উষ্ণতম বছর পার করার পর পৃথিবী উষ্ণতার ঐতিহাসিক স্তরে থাকবে। ডব্লিউএমওর উপমহাসচিব কো ব্যারেট বলেন, ‘আমরা রেকর্ডে থাকা ১০টি উষ্ণতম বছর পার করেছি। দুর্ভাগ্যবশত ডব্লিউএমওর এই প্রতিবেদন আগামী বছরগুলোতে উষ্ণতা বাড়ার ক্ষেত্রে কোনো বিরতির সংকেত দিচ্ছে না। ফলে আমাদের অর্থনীতি, দৈনন্দিন জীবন, বাস্তুতন্ত্র এবং গ্রহের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ ডব্লিউএমওর সর্বশেষ এই প্রক্ষেপণ যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিসের (বিএমও) জাতীয় আবহাওয়া দপ্তরের সংকলিত তথ্য। সংস্থাটি একাধিক বৈশ্বিক পূর্বাভাস কেন্দ্রের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন তৈরি।
এদিকে, সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে প্রতি বছর ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের চেয়ে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকবে।
মেনুথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইরিশ জলবায়ু বিশ্লেষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক পিটার থর্ন বলেন, ‘২০২৭ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি আমাদের ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’ ডব্লিউএমও বলছে, ২০২৯ সালের মধ্যে অন্তত একটি বছর উষ্ণতার আগের রেকর্ড (২০২৪) ভাঙার ৮০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ার এই প্রবণতাকে বিপজ্জনক বলে মনে করছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। গত সপ্তাহে চীনের কিছু এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কিছু এলাকায় ছিল প্রায় ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাকিস্তানেও ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের জলবায়ুবিদ ফ্রিডেরিখ অটো বলেছেন, ‘আমরা এরই মধ্যে উষ্ণায়নের একটি বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছেছি। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, আলজেরিয়া, ভারত, চীন এবং ঘানায় ভয়াবহ বন্যা, কানাডায় দাবানল দেখা দিয়েছে। এ সময়ে তেল, গ্যাস এবং কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভর করা সম্পূর্ণ পাগলামি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স লস য
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থীর সনদ-ছাত্রত্ব বাতিল
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, র্যাগিংসহ নানা অভিযোগ এনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল এমন ১০ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, ছাত্রত্ব ও সনদপত্র বাতিল করেছে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বহিষ্কৃতরা হলেন, বিশ্বজিৎ শীল, সাইদুজ্জামান পাপ্পু, জাহাঙ্গীর আলম অপু, মহিউদ্দিন মুন্না, হাসু দেওয়ান, আকিব মাহমুদ, আবির, অন্তু কান্তি দে, জাকির হোসেন ও রিয়াদ।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি ড. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে যাদের শিক্ষাজীবন শেষ হয়েছে, তাদের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। যারা এখনো অধ্যয়নরত তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ছাত্রলীগের বিচারসহ ৯ দাবি জবি ছাত্রদলের
রাবিতে প্রভাষক হলেন জাসদ ছাত্রলীগ নেতা, ক্ষোভ
ভিসি আরো জানান, ২০২৪ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানান অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়, যা সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অনুমোদিত হয়েছে। গত পরশু তাদের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃত ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব মাহমুদ বলেন, ‘‘জুলাই-আগস্ট মাসে এমন কোনো ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটেনি, যে কারণে আমাদের বহিষ্কার করা হতে পারে। ক্যাম্পাসে কোটা প্রত্যাহার দাবিতে একদিন বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে প্রোগ্রাম হয়েছে, সেদিনও কিছু হয়নি। আমরা সম্পূর্ণভাবে ভিসি ও ছাত্রদল-শিবিরের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। একদিন নিশ্চয়ই এই অবিচারের বিচারও হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘কিছু শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের কিছু বলার নেই। শুধু জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনাই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক ঘটনাও আছে অভিযোগে। তারই প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’’
২০১৫ সালে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত কমিটি দেয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের ব্যানারে নানান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যেত। বহিষ্কৃত ও সনদ বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকজন ৫ আগস্টের আগে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। গ্রেপ্তার হয়ে বেশ কিছু দিন কারাবরণ শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা বহিষ্কৃত ১০ জনের একজন বিশ্বজিৎ শীল।
ঢাকা/শংকর/বকুল