গাজায় হামাসের প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যার দাবি নেতানিয়াহুর
Published: 29th, May 2025 GMT
গাজা হামাসের প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বুধবার ইসরায়েলের পার্লামেন্টে (নেসেট) এ কথা বলেন তিনি। তবে সিনওয়ারের মৃত্যু নিয়ে হামাস তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানায়নি।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনাকারী ও হামাসের সাবেক প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ছোট ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার। ২০২৪ সালের অক্টোবরে গাজার রাফা এলাকায় ইয়াহিয়া সিনওয়ারও ইসরায়েলি সেনাদের হাতে প্রাণ হারান। তাঁর মৃত্যুর পর মোহাম্মদ সিনওয়ার গাজায় হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।
মোহাম্মদ সিনওয়ারের অবস্থান নিশানা করে চলতি মাসে দক্ষিণ গাজার একটি হাসপাতালে হামলা চালায় ইসরায়েল। গত ২১ মে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, খুব সম্ভবত মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হয়েছেন। বুধবার নেসেটে নেতানিয়াহু বলেন, মোহাম্মদ সিনওয়ারকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ২০ মাসে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিহত হামাস নেতাদের নামও তুলে ধরেন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘গত দুই দিনে আমরা হামাসের পুরোপুরি পরাজয়ের দিকে একটি নাটকীয় মোড় দেখতে পেয়েছি।’ ইসরায়েল এখন গাজায় ‘খাদ্য বিতরণের নিয়ন্ত্রণও নিচ্ছে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এখানে তিনি গাজায় নতুন ত্রাণ সহায়তা বিতরণ ব্যবস্থার কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি সংগঠন তা পরিচালনা করছে।
নেতানিয়াহুর এই ঘোষণা এমন এক সময় এসেছে যখন ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা তীব্রতর করেছে। চলতি বছরের শুরুতে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ১৮ মার্চ থেকে উপত্যকাটিতে হামলা জোরদার করে ইসরায়েল। ইসরায়েল বলেছে, হামাসের শাসন ও সামরিক ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং গাজায় বন্দী থাকা আটকদের মুক্ত করাই তাদের লক্ষ্য।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্ব ইসরায়েলে হামলা চালানো হয়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। সেদিন ২৫০ এরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা।
হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজায় পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, উপত্যকাটিতে ৫৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলে হামলার মুখে ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি স্থানচ্যুত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহতদের অধিকাংশই নিরীহ নাগরিক। কতজন যোদ্ধা মারা গেছে, সে বিষয়ে তারা কোনো তথ্য দেননি। ইসরায়েলের দাবি, তারা লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। কিন্তু তারা এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ন হত হ ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
শারজাহ ভুলে লাহোরে আশা
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে যে কয়টি দেশ পাকিস্তানে বেশি খেলতে গেছে, বাংলাদেশ তার অন্যতম। ২০২০ সালে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ, ২০২৩ সালের এশিয়া কাপ আর গত মার্চে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ খেলেছে তারা। রাওয়ালপিন্ডি ও লাহোরে খেলা হয়েছে বেশি। লিটন কুমার দাসরা গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টি২০, ওয়ানডে দুই সংস্করণই খেলেছেন। হার-জিত উভয় স্বাদ নেওয়া হয়েছে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের ম্যাচ জিততে পারলেও স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। সাদা বলের ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেননি লিটনরা। এবার গেরো খোলার পালা। কারণ পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো খেলতে না পারলে সমর্থকরা নেতিবাচক ধারণার ভেতরে থাকবেন। বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে সিরিজ হারের ক্ষতকে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করবেন সমালোচকরা। তাই আমিরাতের কাছে সিরিজ হারে হৃত আত্মবিশ্বাস ফেরাতে জয়ের বিকল্প নেই। কোচ ফিল সিমন্সের প্রত্যাশা পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জিতবেন। অধিনায়ক লিটন কুমার দাসও গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, বিশ্বের যে কোনো দলকে হারাতে সক্ষম তারা।
বাংলাদেশ টি২০ ক্রিকেটে অত ভালো খেলে না। পছন্দের ওয়ানডে সংস্করণেও খারাপ সময় পার করছে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে।
লাহোরের সংবাদ সম্মেলনে তা মেনে নিয়ে লিটন বলেন, ‘আমরা ধারাবাহিক দল হলে র্যাঙ্কিংয়ের ওপরের দিকে থাকতাম। আমরা যেহেতু পেছনের দল, তার মানে আমাদের কোথাও না কোথাও খুঁত আছে। সে খুঁত সারানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি, সামনে ভালো কিছু হবে।’
ভারতের সঙ্গে সামরিক লড়াইয়ের পর কিছু সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে সিরিজ আয়োজন করে পিসিবি। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ কমে হয়েছে তিন ম্যাচ, ডিআরএস ছাড়াই খেলতে হচ্ছে। এর পরও বাংলাদেশ সিরিজ খেলায় কৃতজ্ঞ দেশটি। তবে দেশটির সাংবাদিকরা ঠিকই লিটনকে দলের নেতিবাচক দিকগুলো মনে করিয়ে দেন।
ইউএইর কাছে হারের পর দলকে উজ্জীবিত করার চ্যালেঞ্জ কতটা জানতে চাইলে লিটন বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারিনি। তবে এটি একটি নতুন সিরিজ। দক্ষতা কাজে লাগানোর চেষ্টা থাকবে। এটা ভিন্ন বলের গেম। আমাদের বিশ্বাস আছে, যে কোনো দলকে হারাতে পারি। অতীতে কী হয়েছে, সেগুলো নিয়ে ভাবছি না। আমরা আগামীর কথা ভাবছি।’
বাংলাদেশের মতো পাকিস্তান দলটিও ২০২৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপ মাথায় রেখে গড়া। যে কারণে শাহিন আফ্রিদি, বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে নতুনদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমান প্রজন্ম আবার টি২০ পারদর্শী। চার-ছক্কা হাঁকাতে পারে। এই ব্যাটারদের বড় ইনিংস খেলার সুযোগ দিতেই গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উইকেট করা হয়েছে ব্যাটিংবান্ধব। পিএসএলের মতো আজকের ম্যাচেও বড় স্কোর হবে বলে মনে করেন টাইগার দলপতি। সমস্যা হচ্ছে লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতা নেই টাইগারদের। ২০২০ সালে খেলা দুই ম্যাচ টি২০ সিরিজে দলীয় সংগ্রহ ছিল ১৪১ ও ১৩৪ রানের। এশিয়া কাপের ওয়ানডে ম্যাচেও লড়াই জমাতে পারেনি।
তবে এবার ভালো খেলতে প্রেরণা তাড়া দিচ্ছে ইউএইর কাছে হারের ক্ষত আর লাহোরে আগে খেলার অভিজ্ঞতা। এ ভেন্যুতে বর্তমান দলের ৯ জন ম্যাচ খেলেছে। এ কারণে সিরিজে দল হিসেবে জ্বলে ওঠার সম্ভাবনা দেখেন লিটন। তাঁর মতে, ‘আমার ব্যাটিং রোল গুরুত্বপূর্ণ। আমি চেষ্টা করব ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। তবে আমাদের দলের অনেক ব্যাটার ভালো ছন্দে আছে। দল হিসেবে ছন্দ দেখাতে পারলে ভালো কিছু হবে।’ এই ভালো শুরুতেই হোক।