‘ট্যাকা দিয়া কীতা করবাম, আমার শাহজাহানরে ফিরাইয়া দেও’
Published: 29th, May 2025 GMT
এক নিদারূণ শোক আর অব্যক্ত বেদনার ছবি হয়ে থাকলো ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ মিলনায়তনের চেক বিতরণ অনুষ্ঠান। গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারগুলোর জন্য সরকারি অনুদানের চেক নিতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শহীদ শাহজাহানের মা মোছা. সাজেদা খাতুন।
ছেলের জন্য বরাদ্দের ২ লাখ টাকার চেক হাতে নিয়ে কেবলই আহাজারি করছিলেন আর বলছিলেন, ‘অনেক কষ্ট করে পোলাডারে বড় করেছি। ট্যাকা দিয়া আমি কীতা করবাম, তোমরা আমার শাহজাহানরে আমার কোলে ফিরাইয়্যা দেও।’ একজন মায়ের এমন আকুল আর্তনাদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়, মুহূর্তেই শোকাবহ স্তব্ধতা নেমে আসে পুরো মিলনায়তনে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান-২০২৪’ এর শহীদ পরিবারে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। শুধু শহীদ শাহজাহানের মা নন, ময়মনসিংহের প্রথম শহীদ কলেজ শিক্ষার্থী রেদোয়ান হাসান সাগারের বাবা আসাদুজ্জামান আসাদও কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁর বুকফাটা আর্তনাদ দেখে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে অশ্রুসজল হয়ে পড়েন স্বয়ং বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ।
শহীদ শাহজাহান ধোবাউড়া উপজেলার জৈকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। মোছা.
তিনি জানান, কার্টন ফ্যাক্টরির কর্মচারী মো. শাহজাহান গত বছরের ৫ আগস্ট আন্দোলনের সময় ঢাকার মহাখালী রেলস্টেশন এলাকায় শহীদ হন। সাজেদা বলেন, আন্দোলনের অনেক আগেই শাহজাহান চাকরি ছেড়ে গ্রামে চলে এসেছিলেন। কিন্তু মার্চ ফর ঢাকা আন্দোলনের খবর পেয়ে পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়েই ঢাকায় যান এবং সেখানেই শহীদ হন। পরে খবর পেয়ে তাঁর নিথর দেহ নিজ এলাকায় এনে দাফন করা হয়।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের তথ্যমতে, গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া জেলার ৪১টি পরিবারের অনুকূলে ২ লাখ টাকা করে সরকারি অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার সদস্য সচিব আলী হোসেন সমকালকে বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছে। শহীদদের রক্ত আর ত্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা সেই স্বপ্ন পূরণ করব। যতদিন পর্যন্ত জনগণের সব অধিকার নিশ্চিত না হবে, ততদিন আমাদের সংগ্রাম চলবে। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, শুধু আর্থিক অনুদান নয়, শহীদ পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসনের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করুন।’
জেলা পরিষদ আয়োজিত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) তাহমিনা আক্তার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জিয়া আহমেদ সুমন, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, বিভাগীয় কমিশনারের ব্যক্তিগত সহকারী ইবনে মিজান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার সদস্য সচিব আলী হোসেন প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ চ ক ব তরণ শ হজ হ ন অন ষ ঠ ন পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
মাহিদুল ও মজিদের সেঞ্চুরি, ৮ রানের জন্য পাননি মুমিনুল
মজিদের সেঞ্চুরি ও হায়দারের ঝড়ে ময়মনসিংহের ৫৫৫
জাতীয় ক্রিকেট লিগে নবাগত ময়মনসিংহ দারুণভাবে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। প্রথম ইনিংসে মোহাম্মদ নাঈম ও মাহফিজুল ইসলামের পর এবার সেঞ্চুরি পেয়েছেন আবদুল মজিদ। অধিনায়ক শুভাগত হোম ও আবু হায়দারও খেলেছেন ঝোড়ো ইনিংস। তিনজনের ব্যাটে ভর করে ময়মনসিংহ ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে। কক্সবাজার একাডেমি গ্রাউন্ডে বল হাতে শুরুও করেছে ভালো—প্রতিপক্ষ রংপুর দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ১৮ রান তুলে ফিরেছে ড্রেসিংরুমে।
২ উইকেটে ২৮১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে ময়মনসিংহ। তবে ২২ রান যোগ করতেই পড়ে যায় আরও দুটি উইকেট। এরপর মজিদ ও শুভাগত গড়েন ১৩০ রানের জুটি। ৮৬ বলে ৬৫ রান করে শুভাগত আউট হওয়ার পর মজিদ জুটি গড়েন তাহজিবুল ইসলামের সঙ্গে (২১)। ষষ্ঠ উইকেটে আসে ৩৪ রান। এরপর হায়দারকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র ৪২ বলেই সপ্তম উইকেটে তোলেন ৭৭ রান। ৩৪ বলে ৫ ছক্কায় ৬০ রান করেন হায়দার। অপর প্রান্তে ১৮৬ বলে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৯ রানে অপরাজিত থাকেন মজিদ। ১১০ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে এটি তাঁর ১৪তম সেঞ্চুরি।
সেঞ্চুরি হাতছাড়া মুমিনুলের৯২ রানে আউট হয়েছেন চট্টগ্রামের মুমিনুল হক