অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ নিরপেক্ষ নয় অভিযোগ করে সেখানে সংস্কার করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

বিএনপির প্রতিষ্ঠা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আজ বিদেশে একটি বক্তৃতায় আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, একটি মাত্র দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে। যদি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হয়, তাহলে নাকি খুব তাড়াহুড়া করে সংস্কার করতে হবে; কিন্তু আমাদের কথা হলো আপনার উপদেষ্টা পরিষদের সংস্কার করুন। আপনার উপদেষ্টা পরিষদ নিরপেক্ষ নয়, এখানে দুজন ছাত্র উপদেষ্টা বসে আছেন, তাঁরা একটি দলের। আরেকজন উপদেষ্টার বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। আরও কয়েকজন ফ্যাসিবাদের দোসর আপনার উপদেষ্টামণ্ডলীর মধ্যে আছে। সংস্কার করুন, নাম বলতে চাই না বিব্রত হবেন। সরিষার মধ্যে ভূত রেখে আপনি সংস্কার সংস্কার করেন, সংস্কার হবে না।’

যেসব সংস্কারের ক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্য রয়েছে, সেগুলো এক সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘যদি আপনি না পারেন, আমাদের দেন। শুধু যেসব সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি হবে, সেসব সাংবিধানিক সংশোধনীগুলো নির্বাচিত সংসদের মধ্যেই করতে হবে। এটাই হলো, আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য। সুতরাং সংস্কার সংস্কার বলে যে আপনারা ফেনা তুলছেন মুখে, কয়টা সংস্কার করেছেন? কোন কোন ডিপার্টমেন্টে কোন আইনে যে সংস্কারগুলো আপনারা আনতে চান, সেগুলো নির্বাহী আদেশে সম্ভব করে দেন।’

সংস্কারের বাহনা দিয়ে নির্বাচনকে বিলম্বিত না করতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করবেন না। গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার মতো সুযোগ কোনো শক্তিকে দেবেন না।’

ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজ জাতিকে আবার গণতন্ত্রের জন্য কথা বলতে হচ্ছে, সংগ্রাম করতে হচ্ছে। আজ আবার লাখো মানুষকে নিয়ে আমাদের নেতা তারেক রহমানকে বলতে হচ্ছে, নির্বাচন দিন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের মানুষের মধ্য থেকে গণতন্ত্রকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আবার জাতিকে বিরাজনীতিকীকরণের ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা হচ্ছে। এখান থেকে জাতিকে উদ্ধার করা জাতীয়তাবাদী দলের দায়িত্ব।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ, হাফিজ উদ্দিন আহমদ, অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন র উপদ ষ ট স স ক র কর ন ন উপদ ষ ট দ ন আহমদ ব এনপ র ন ব এনপ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত
  • আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি