গভীর নিম্নচাপটি এখন স্থলভাগে, ৫ বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে
Published: 30th, May 2025 GMT
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি এখন স্থলভাগে উঠে এসেছে। পরিণত হয়েছে স্থল গভীর নিম্নচাপে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই এটি স্থলভাগে উঠে আসে। আর ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। যদিও এর প্রভাব আজ শুক্রবার সারা দিন ধরেই থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদেরা। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর প্রভাবে আজ দেশের পাঁচ বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আগামীকাল শনিবারও এর প্রভাবে বৃষ্টি হতে পারে বেশ কিছু এলাকায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সর্বশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি গতকাল রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে সাতক্ষীরা এবং এর কাছাকাছি অঞ্চলে ছিল। পরবর্তীতে এটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ধীরে ধীরে আরও দুর্বল হয়ে উত্তর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে আজ ময়মনসিংহ ,খুলনা , বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
ভারী বৃষ্টি বলতে ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিকে বোঝায় আর অতি ভারী বৃষ্টি হয় ৮৮ মিলিমিটারের ওপর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক আজ সকাল সাতটায় প্রথম আলোকে বলেন, গভীর নিম্নচাপটি এখনো স্থল গভীর নিম্নচাপ রূপে আছে। এটি ধীরে ধীরে উত্তর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে এগোচ্ছে। এর প্রভাবে আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টি হবে।
আজ সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশ মেঘলা এবং বৃষ্টি হচ্ছে ঝিরঝির করে। রাজধানীতেও আজ সারা দিন এভাবে বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে।
এটিএম নাজমুল হক বলেন, আগামীকাল শনিবার রংপুর , রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের পরবর্তী সময়ে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি হতে পারে।
গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। পরদিন বুধবার এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে প্রথমে নিম্নচাপ পরে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। গতকাল সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে ১৬৮ মিলিমিটার। রাজধানীতে ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
নিম্নচাপের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টির মধ্যে গতকাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় অতি বর্ষণের কারণে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। উঁচু জোয়ারে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভোলা-পটুয়াখালীসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। টানা বৃষ্টিতে অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন উপকূলের বাসিন্দারা।
আরও পড়ুনভারী বৃষ্টি ও উঁচু জোয়ারে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুর্ভোগে উপকূলবাসী৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
পদত্যাগ করতে পারেন ফারুক, আমিনুলকে নিয়ে আলোচনা
গত কিছুদিন ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) হট সিটে রদবদলের খবর শোনা যাচ্ছিল। নানা কারণে প্রবল সমালোচিত হয়ে আসছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সমালোচনার ব্যাখ্যা প্রতিবার দিলেও আশাব্যঞ্জক উন্নতি হচ্ছিল না। যার কারণে সরকারও তাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে।
সেই সূত্রেই গতকাল রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাসভবনে দেখা করেছেন ফারুক। দুজনের আলোচনায় বিসিবির আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে আসলেও ক্রীড়া উপদেষ্টা ফারুককে বার্তা দিয়েছেন বিসিবির শীর্ষ পদে তারা পরিবর্তনের কথা ভাবছে।
যে কারণে পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে বেছে নিতে যাচ্ছেন ফারুক। সরকার সামনে এসে তাকে সরিয়ে দিলে আইসিসির নজরে আসবে। দেশের ক্রিকেটের ওপর সরকারের প্রভাবের প্রমাণ পেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধও হতে পারে বাংলাদেশ। বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে, এ জন্য ফারুক নিজ থেকে সরে যেতে চাচ্ছেন। দুয়েক দিনের মধ্যেই ফারুক নিজের পদত্যাগপত্র বোর্ডকে দেবেন। এ ব্যাপারে ফারুকের সঙ্গে রাতেই রাইজিংবিডির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।
গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিসিবি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন নাজমুল হাসান পাপন। এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের যোগসাজশে আরো কয়েকজন পরিচালক নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিসিবির জন্য ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরবর্তীতে ফারুক বিসিবির সভাপতি নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
কিন্তু শুরু থেকে তার কাজ নিয়ে প্রবল সমালোচনা হচ্ছিল। ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এসেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া মাঠের ক্রিকেটেও নেই কোনো সুখবর। যার কারণে বিসিবি সভাপতি হিসেবে প্রবল সমালোচিত হচ্ছিলেন তিনি।
সরকার মনোনীত প্রতিনিধি হওয়ায় ফারুককে সরাতে খুব বেশি জটিলতার মধ্যে পড়বে না সরকার। ফারুককে নিজেদের ভাবনা পরিস্কার করে বলে দেওয়ায় তার পদত্যাগ করাটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
এদিকে হঠাৎ ঢাকায় এসে আলোচনা তুঙ্গে তুলেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। শুরুতে শোনা গিয়েছিল, জরুরী পারিবারিক কাজেই ঢাকা পা পড়েছে আমিনুল। আইসিসির চাকুরী করায় বিভিন্ন দেশে যেতে হয় তাকে। ছুটি নিয়ে ঢাকায় এসেছেন তিনি। কিন্তু এখন শোরগোল শুরু হয়েছে, আমিনুল হতে যাচ্ছেন পরবর্তী বিসিবি সভাপতি। যদিও এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।
ফারুকের পদত্যাগ, আমিনুলের নিয়োগ সবকিছু হতেই সময়ের প্রয়োজন। আগামী কয়েক দিন ক্রিকেটাঙ্গন মাঠের ক্রিকেটকে পাশ কাটিয়ে বিসিবির হট চেয়ার নিয়ে ব্যস্ত থাকবে তা বোঝাই যাচ্ছে।
ঢাকা/ইয়াসিন