সিরাজগঞ্জের তাড়াশের তালম ইউনিয়নের স্কুলছাত্রী তানিয়াকে (১৫) কামড় দেয় একটি গোখরা সাপ। সেসময় সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। এরপর সেই সাপ নিয়ে টিকটক বানায় তানিয়া। পরে বিষক্রিয়া শুরু হলে বিষয়টি তার মাকে জানায় সে।

গত রবিবার (২৫ মে) রাত ১০টার ঘটনা। তানিয়া স্থানীয় তালম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি টিকটক  তৈরির নেশা তার।

জানা গেছে, নিজ বাড়িতে রাতে টয়লেটে যাওয়ার সময় তানিয়াকে গোখরা সাপ কামড়ে দেয়। বিষয়টি আমলে না নিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে সে। এরপর মরা সাপটিকে নিয়ে টিকটকের রিল বানায় তানিয়া। পরে বিষক্রিয়া শুরু হলে বিষয়টি তার মাকে জানায় সে। 

মায়ের চিৎকার শুনে তার বাবা ছুটে এসে ক্ষতস্থানের ওপরে বাঁধন দিয়ে এলাকার বিভিন্ন ওঝার কাছে নিয়ে বিষ নামানোর চেষ্টা করেন। তাতে পরিস্থিতির অবনতি হয়ে পড়ে। পরদিন সকালে তানিয়াকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ততক্ষণে মেয়েটি কোমায় চলে যায়।

তানিয়ার বাবা আবু তাহের বলেন, “সাপের কামড়ে আমার মেয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যায়। আল্লাহর নাম নেওয়া ছাড়া আমাদের আর কিছু করার ছিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পরে চিকিৎসকরা জরুরিভাবে বোর্ড বসিয়ে মৃত সাপের ছবি দেখে সাপের প্রজাতি চিহ্নিত করেন। সে অনুযায়ী তাকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়।’’

তিনি আরো বলেন, “অ্যান্টিভেনম দেওয়ার পর ধীরে ধীরে কোমা থেকে স্বাভাবিক হতে থাকে তানিয়া। ঘটনার দুই দিন পর আমার মেয়ের জ্ঞান ফিরে আসে। বর্তমানে সে সুস্থ আছে। তবে চিকিৎসকরা আরো কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন।’’

ঢাকা/অদিত্য/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট কটক

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে নির্যাতন, টাকা আদায়, অভিযোগ বিএনপি নেতা ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে

যশোরের অভয়নগরে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বুকসমান বালুতে পুঁতে রেখে কয়েক দফায় চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পদ স্থগিত হওয়া স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীর স্ত্রী সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর ওরফে টিপু (৪৮) নওয়াপাড়া এলাকার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। তিনি ও তাঁর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এলাকা ছেড়ে গেছেন তিনি।

ঘটনার বিচার চেয়ে গত ৩১ জুলাই অভয়নগরের রাজঘাট সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীরের স্ত্রী আসমা খাতুন। অভিযোগে তিনি বলেন, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে সৈকত হোসেন ওরফে হিরা নামে এক ব্যক্তি তাঁর স্বামীকে কৌশলে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (পদ স্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনির ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে আসাদুজ্জামান তাঁকে মারধর করেন এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা দাবি করেন। এরপর আসমা খাতুন সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে আসাদুজ্জামানের প্রতিষ্ঠানের হিসাবে দুই কোটি টাকা পাঠান। টাকা পেয়ে তাঁরা শাহনেওয়াজ কবীরকে ছেড়ে দেন।

আসমা খাতুন অভিযোগে বলেন, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে তাঁর স্বামী চলিশিয়া থেকে মোটরসাইকেলে নওয়াপাড়া বাজারে যাওয়ার পথে সৈকত তাঁর পথ রোধ করেন। এরপর বেলা ৩টা পর্যন্ত তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে জানতে পারেন, তাঁর স্বামীকে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামানের কনা ইকোপার্কে নেওয়া হয়েছে। আসমা সেখানে গেলে জনি, সম্রাট হোসেন ও নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন তাঁর ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে হামলা চালান।

এরপর শাহনেওয়াজ কবীরের বুকপর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে বালু চাপা দিয়ে আরও দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ করেন আসমা খাতুন। তিনি বলেন, এ সময় তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ বাধ্য হয়ে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপককে ফোন করে টাকা দিতে বলেন। সাংবাদিক মফিজের হিসাব নম্বরে পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ টাকা পাঠানো হয়। এ সময় সাংবাদিক মফিজ আরও এক কোটি টাকার চেক আদায় করেন। এরপর কাউকে কিছু বললে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেন।

প্রথম আলোকে আসমা খাতুন বলেন, ‘বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনি ও সাংবাদিক মফিজের নেতৃত্বে কয়েকজন আমার ব্যবসায়ী স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েক দফায় চার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আমার স্বামী ভয়ে এলাকাছাড়া। আমরাও চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি। ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। চার শতাংশ জমির ওপর বাড়ি ছাড়া আর কিছুই এখন নেই আমাদের। আমাদের একমাত্র ছেলে বিবিএ পড়ে। ছেলের বউ বিএ পড়ছে। তাদের পরীক্ষার ফরম পূরণ সামনে। সেই ফরম পূরণের টাকা পর্যন্ত এখন আমার কাছে নেই। আমরা একেবারে পথে বসে গেছি। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনির মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে অভিযুক্ত সাংবাদিক মফিজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আপনি যাকে খুঁজছেন আমি সে মফিজ না।’ এরপর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

আসমা খাতুন অভিযোগ করেন, ‘সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু তিন দিনেও ওখান থেকে কেউ যোগাযোগ করেননি। থানায় গিয়ে ওসিকে (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) সব কাগজপত্র দিয়েছি। মৌখিকভাবেও সব জানিয়েছি।’

এ বিষয়ে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ এখনো কেউ করেননি। তবে মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। এখনই এ বিষয়ে আর কিছু বলতে পারছি না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়েতে উড়োজাহাজের সঙ্গে কুকুরের ধাক্কা
  • কিশোরীকে অপহরণের পর বিয়ে, সালিসে বাবাকে পিটিয়ে হত্যা
  • ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে নির্যাতন, টাকা আদায়, অভিযোগ বিএনপি নেতা ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে
  • সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • জামায়াত আমিরের হার্টে ৩ ব্লক, বাইপাস সার্জারির সিদ্ধান্ত