১৮ বছর পর শৈশবের ক্লাবে ফিরে বৃত্ত পূরণ দি মারিয়ার
Published: 30th, May 2025 GMT
অবশেষে বৃত্তটা পূরণ করেই ফেললেন আনহেল দি মারিয়া।
১৯৯২ সালে রোজারিও সেন্ট্রালে যখন দি মারিয়া প্রথম খেলতে গিয়েছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র চার বছর। ২০০৫ সালে সেই একই ক্লাবের মূল দলের হয়ে পেশাদার ফুটবলের পথে যাত্রা শুরু করেন এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি।
এরপর ২০০৭ সালে রোজারিও সেন্ট্রালকে বিদায় জানিয়ে শুরু হয় দি মারিয়ার ইউরোপ মিশন। অবশেষে ১৮ বছর পর আবার সেই রোজারিও সেন্ট্রালে ফিরে বৃত্ত পূরণ করলেন বিশ্বকাপজয়ী এই উইঙ্গার।
এক বছরের চুক্তিতে দি মারিয়ার ফেরার খবর জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় রোজারিও সেন্ট্রাল জানিয়েছে, ‘একসঙ্গে আমাদের ইতিহাসটা আরও কয়েক পৃষ্ঠা লেখা হবে। ঘরে স্বাগতম।’
আরও পড়ুন‘বিদায় বেনফিকা’ বলে দিলেন দি মারিয়া, গন্তব্য কোথায়১৮ মে ২০২৫ঘরে ফেরার প্রতিক্রিয়ায় দি মারিয়া লিখেছেন, ‘ঘরে ফিরতে পারাটা দারুণ আনন্দের। বাড়ি। আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারাটাও উচ্ছ্বাসের বিষয়! প্রিয় রোজারিওতে বাস করা এবং আমাদের প্রিয় রোজারিও সেন্ট্রালের জার্সি পরতে পারা—আজ আমাদের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনগুলোর একটি।’
৩৭ বছর বয়সী দি মারিয়া গত বছরের কোপা আমেরিকা শেষে আন্তজার্তিক ফুটবল থেকে অবসর নেন। তবে আন্তজার্তিক ফুটবল ছাড়লেও বেনফিকায় নিজের ক্লাব ক্যারিয়ার অব্যাহত রাখেন। সেই ধারাবাহিকতাতেই এবার বেনফিকাকে বিদায় জানিয়ে এলেন রোজারিও সেন্ট্রালে।
ইউরোপে দি মারিয়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল বেনফিকা দিয়েই। এরপর একে একে খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজি এবং জুভেন্টাসের মতো বিশ্বসেরা ক্লাবে। ২০২৩ সালে বেনফিকায় ফিরে নিজের ইউরোপিয়ান বৃত্ত পূরণ করেন দি মারিয়া।
আরও পড়ুনআর্জেন্টিনাকে বিদায় বলা দি মারিয়া বেনফিকায় কত বেতন পান০৮ মে ২০২৫আর এবার পাকাপাকিভাবে ইউরোপ ছেড়ে চলে এলেন নিজের ঘরে। তবে ইউরোপ ছাড়ার আগে দি মারিয়ার নামের পাশে লেখা হয়েছে ৩০ ট্রফি। এই সংখ্যা অবশ্য বাড়তে পারে। রোজারিওতে যাওয়ার আগে বেনফিকার হয়ে আগামী মাসের ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেবেন দি মারিয়া। সেখানে আরেকটি ট্রফি জেতার সুযোগ আছে তাঁর।
এর আগে গত বছরের গ্রীষ্মেই দি মারিয়ার রোজারিও সেন্ট্রালে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তদের হত্যার হুমকির পর সেই সিদ্ধান্ত বদল করেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত নাড়ির টান উপেক্ষা করতে পারলেন না দি মারিয়া।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।