মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেকে ছেড়ে দিয়ে পিএসজি কীভাবে ভালো দল হয়ে উঠল
Published: 31st, May 2025 GMT
২০২১–২২, ২০২২–২৩ এই দুই মৌসুমেই পিএসজিতে ছিলেন লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। সময়ের সেরা তিন তারকাকে নিয়েও এ দুই মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে কোয়ার্টার ফাইনালও খেলতে পারেনি প্যারিসের ক্লাবটি। দুবারই বিদায় নেয় শেষ ষোলো থেকে।
সেই পিএসজিতে এখন মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেদের কেউ নেই। ২০২৩ সালে মেসি ও নেইমার আর ২০২৪ সালে এমবাপ্পে পিএসজি ছেড়ে গেছেন। তবে বড় নামবিহীন পিএসজিই এখন চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে। আগামীকাল মিউনিখে ইউরোপসেরার মঞ্চে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে খেলবে পিএসজি।
শেষ পর্যন্ত পিএসজি চ্যাম্পিয়ন হোক বা না হোক, কোনো বড় নাম ছাড়াই যে দলটি ফাইনালে উঠেছে, এতে বিস্মিত অনেকেই। কী এমন জাদুবলে মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেবিহীন পিএসজি এতটা ভালো দল হয়ে উঠল?
২০২৪–২৫ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের শুরুটা ভালো ছিল না পিএসজির। গ্রুপে ৮ ম্যাচের চারটিতে হেরে লিগ পর্বে ৩৬ দলের মধ্যে অবস্থান ছিল ১৫তম। শেষ ষোলোয় খেলার জন্য প্লে–অফও খেলতে হয়েছে। তবে টুর্নামেন্ট যত সামনে এগিয়েছে, ততই গোছালো এবং উপভোগ্য ফুটবল খেলেছে পিএসজি। শেষ ষোলোয় প্যারিসের ক্লাবটি যাদের হারিয়েছিল, সেই লিভারপুলের ভার্জিল ফন ডাইক বলেছেন, ‘গত তিন বছরে আমি যাদের বিপক্ষে খেলেছি, এই দলটিই সেরা।’
আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলে পাওয়া যাবে ১৫০০ কোটি টাকারও বেশি০৬ মে ২০২৫এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির ছন্দে ফেরার বাঁকবদল লিগ পর্বেই। ২২ জানুয়ারি গ্রুপের সপ্তম ম্যাচের প্রতিপক্ষ ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। সে দিন সিটির কাছে ২–০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে ৪–২ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় পিএসজি। উসমান দেম্বেলের গোলে শুরু হয় সেই প্রত্যাবর্তন।
পাঁচ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠেছে পিএসজি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ য ম প য়নস ল গ এমব প প প এসজ
এছাড়াও পড়ুন:
দুদকের মামলায় স্ত্রী-কন্যাসহ ফেঁসে যাচ্ছেন এসকে চৌধুরী
দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করলেও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে সম্পদের বিবরণী দাখিল করেননি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর চৌধুরী। এছাড়া তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীও সম্পদের বিবরণী দাখিল করেননি।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলার তদন্ত শেষে তাদের অভিযুক্ত করে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন
তারেক রহমান সব মামলায় খালাস পাওয়ায় ‘সন্তুষ্ট’ ইউট্যাব
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর চৌধুরী, স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরী এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।”
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর চৌধুরী), তার স্ত্রী ও কন্যার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর মামলা করে দুদক।
এর আগে, ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট এস কে সুর চৌধুরী, তার স্ত্রী ও কন্যার আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেন আদালত। ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।
ওইদিন দুদকের উপপরিচালক মো. নাজমুল হুসাইন তাদের আয়কর নথি জব্দ চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়েছিল, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী এবং তার স্ত্রী সুপর্ণা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।
অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ১৯ ধারা ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ এর ২০ বিধি অনুযায়ী অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তার স্ত্রী, সন্তানের আয়-ব্যয়ের সঠিকতা এবং তাদের মালিকানাধীন অন্য কোনো সম্পদ রয়েছে কি না, তা যাচাই/পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য শুরু থেকে ২০২১-২২ করবর্ষ পর্যন্ত সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী, সুপর্ণা সুর চৌধুরী এবং নন্দিতা সুর চৌধুরীর আয়কর নথি পর্যালোচনা করা অবশ্যক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) সব ধরনের ব্যাংক হিসাব তলব করে দুদক। একইসঙ্গে তার স্ত্রী সুপর্ণা রায় চৌধুরী ও মেয়ে নন্দীতা সুর চৌধুরীর হিসাবের তথ্য চেয়ে সংস্থাটি গত ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা পাঠাতে সময় বেঁধে দেয়। পরে গত বছরের আগস্টে এই পরিবারের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক।
ব্যাংকগুলোর উদ্দেশে চিঠিতে বলা হয়, সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী এবং তার স্ত্রী সুপর্ণা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এস কে সুর চৌধুরী, তার স্ত্রী সুপর্ণা রায় চৌধুরী ও মেয়ে নন্দীতা সুর চৌধুরীর নামে আপনাদের ব্যাংকের কোনো শাখায় কোনো ধরনের ব্যাংক হিসাব, ঋণ হিসাব, এফডিআর বা সঞ্চয়পত্র থাকলে তা জানাতে বলা হচ্ছে। একইসঙ্গে হিসাব খোলার ফরম, দাখিলের রেকর্ডপত্র, কেওয়াইসি, নমিনি, টিপি, সিগনেচার কার্ড ও হিসাব বিবরণীসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পাঠাতে বলা হয়।
অভিযোগ আছে, এস কে সুর ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন ও সুবিধা নিয়েছেন।
২০২২ সালে এস কে সুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের মার্চে এস কে সুর কে তলব করে দুদক। এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান। গত ১৪ জানুয়ারি এসকে সুরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী