চুয়াডাঙ্গায় যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ রাসেলের বাড়ির রান্নাঘরে বিস্ফোরণে এক কিশোর আহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে শহরের মসজিদপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহত কিশোরের নাম সিহাব হোসেন (১৫)। তিনি শেখ রাসেলের খালাতো ভাই। চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়েছে।

ওই যুবলীগ নেতার পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে।

তবে আলামত পর্যবেক্ষণের পর স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা ভিন্ন কথা জানান। তাঁরা বলছেন, রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার, গ্যাসস্টোভ ও পাইপ অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নেমেছে।

শেখ রাসেলের বোন সেবু খাতুন বলেন, গতকাল রাতে তাঁর মা বিনা খাতুন রান্নাঘরে গিয়ে গ্যাসের চুলা জ্বালাতে পারেননি। এরপর নিচে নেমে সিহাবকে ডেকে নিয়ে যান। সিহাব রান্নাঘরে ঢুকেই বৈদ্যুতিক বাতির সুইচ অন করতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিনা খাতুনের ভাষ্য, গ্যাসস্টোভ বন্ধ না করায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চুয়াডাঙ্গার স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাস সিলিন্ডারের কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও আলামত তা বলছে না। কারণ, রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার (বোতল), গ্যাসস্টোভ ও পাইপ অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ কারণে অধিকতর তদন্ত দরকার।

বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আলামত সংগ্রহ করেছে জানিয়ে পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও ঝিনাইদহের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ন ন ঘর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

কোরবানি ঈদেও চাঙ্গা রেমিট্যান্স

রমজানের পর কোরবানি ঈদেও চাঙ্গা রেমিট্যান্স। ঈদের আগে গত মে মাসে প্রবাসীরা ২৯৭ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি। আর একক কোনো মাসে এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে গত রোজার ঈদের আগে মার্চ মাসে। মূলত অর্থ পাচার কমে যাওয়ায় হুন্ডি চাহিদা কমে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় এভাবে বাড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে পর্যন্ত ১১ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৭৫১ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার। এর মানে ১১ মাসে বেশি এসেছে ৬১৩ কোটি ডলার বা ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ। রেমিট্যান্সের এই উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দর বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। এর পরও ডলার ১২২ থেকে ১২৩ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে। আবার আগের মতো ডলার নিয়ে হাহাকার নেই। এই সরকার আগের বিভিন্ন বকেয়া ৩৭০ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে। এর পরও টানা ২০ মাস পর গত এপ্রিল শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল। অবশ্য গত মে মাসে আকুতে ১৮৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর কমে যায়। বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ২০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। আওয়ামী লীগের পতনের সময় যেখানে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে রিজার্ভ উঠেছিল ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে। চলতি
মাসে আইএমএফের ঋণের দুই কিস্তিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ৩৫০ কোটি ডলার পাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভ অনেক বাড়বে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উচ্চ ধারা বজায় থাকার অন্যতম উপাদান রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রপ্তানি আয়েও ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ৪ হাজার ২১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই ছাড়া প্রতি মাসে রেমিট্যান্স বাড়ছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে অর্থ পাচার ঠেকাতে কড়াকড়ি করছে সরকার। আগে

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত
আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অর্থ পাচার নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবার ও ১০ ব্যবসায়ী গ্রুপের বিষয়ে ১১টি যৌথ তদন্ত চলমান। এরই মধ্যে এসব ব্যক্তির ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর দেশে দেশে লকডাউনের মধ্যে রেমিট্যান্সে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার, যা  আগের অর্থবছরের তুলনায় ছিল ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ