ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় নির্ধারিত বৈঠকে অংশ নিতে চাওয়া পাঁচ আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সফর আটকে দিয়েছে ইসরায়েল। আজ শনিবার এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দেশের নেতারা।

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আগামীকাল রোববার রামাল্লায় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়া প্রতিনিধিদলের সফর আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়, আমরা এর নিন্দা জানাই।’

আরও পড়ুনপশ্চিম তীরে আরও ২২টি বসতি স্থাপনের ঘোষণা ইসরায়েলের২৯ মে ২০২৫

সৌদি আরব, মিসর, জর্ডান, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ওই সফরে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তাঁদের সঙ্গে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আরব লিগের মহাসচিবেরও থাকার কথা ছিল।

ইসরায়েল গতকাল শুক্রবার রাতে ঘোষণা দেয়, তারা [আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের] সফরে কোনো ধরনের সহযোগিতা করবে না। অধিকৃত পশ্চিম তীরের স্থল ও আকাশপথের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে থাকায় দেশটির অনুমতি ছাড়া কোনো বিদেশির সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।

আরও পড়ুনপ্রতি ২০ মিনিটে গাজায় একটি শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে: জাতিসংঘ৭ ঘণ্টা আগে

ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ (পিএ) একটি উসকানিমূলক বৈঠকের আয়োজন করতে যাচ্ছিল। ইসরায়েল এমন কোনো পদক্ষেপে সহযোগিতা করবে না, যা তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তিনি কিছুটা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সব ধরনের চুক্তির লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে। এর দ্বারা তিনি ঠিক কোন কোন চুক্তির কথা বলেছেন, তা স্পষ্ট নয়।

১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধের পর জর্ডানের কাছ থেকে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় অবস্থিত। ১৯৬৭ সালের পর থেকে সৌদি আরবের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখন পর্যন্ত রামাল্লা সফর করেননি। এই পরিস্থিতিতে ৫০ বছরের মধ্য প্রথম সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আগামীকাল রোববার প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের রামাল্লা সফরের ঘোষণা এসেছিল। কিন্তু বিষয় সংশ্লিষ্ট একটি সৌদি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার পর প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের রামাল্লা সফর স্থগিত করা হয়েছে।

গতকাল পশ্চিম তীরে একটি নতুন বসতি স্থাপনা এলাকায় গিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনে একটি ইহুদি ইসরায়েলি রাষ্ট্র গড়ে তুলব।’ আন্তর্জাতিক সমর্থনে কাগজে-কলমে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই কাগজ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে, আর ইসরায়েল রাষ্ট্র হবে আরও সমৃদ্ধ।’

গত বৃহস্পতিবার পশ্চিম তীরের জুদিয়া ও সামারিয়া অঞ্চলে নতুন করে আরও ২২টি বসতি স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। ‘রুট ৪৪৩’ ধরে এসব বসতি গড়ে উঠবে। সড়কটি মোদিইন হয়ে জেরুজালেম ও তেল আবিবকে যুক্ত করেছে। নতুন বসতি স্থাপনের পাশাপাশি গত কয়েক বছরে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে যেসব অবৈধ বসতি গড়ে উঠেছে, সেগুলোকেও অনুমোদনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। হামাস ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্ভবত দুই সপ্তাহ আগে মন্ত্রিপরিষদের এক গোপন বৈঠকে নতুন বসতি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু জানানো হয়েছে বৃহস্পতিবার। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ও ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ গতকাল মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত জানান। স্মোট্রিচ নিজেই পশ্চিম তীরের কেদুমিম বসতিতে থাকেন।

কাটজ নতুন বসতি স্থাপনের সিদ্ধান্তকে ‘কৌশলগত পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ঠেকানো যাবে, যার প্রতিষ্ঠা ইসরায়েলের জন্য হুমকি হতে পারে।

আগামী জুনে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সৌদি আরব ও ফ্রান্স যৌথভাবে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের প্রক্রিয়া আবারও সক্রিয় করা এই সম্মেলনের লক্ষ্য।

গাজা যুদ্ধ শুরুর আগে সৌদি আরব ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছিল বলে অনেকে মনে করেন। তবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান স্পষ্ট বলেছেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রমন ত র র পরর ষ ট র ইসর য় ল র ত ন কর মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রস্তুত হাট, আসছে গরু- অপেক্ষা ক্রেতার

আগামী ৭ জুন দেশজুড়ে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। ঈদের আর মাত্র বাকি চার দিন। রাজধানীতে বসতে শুরু করেছে কোরবানীর হাট।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে দনিয়া কলেজ মাঠে প্রতিবারের মতো এবারও বসেছে গরুর হাট। নামে দনিয়া কলেজ মাঠ হলেও এর বিস্তৃতি রায়েরবাগ-শনিরআখড়া-কাজলা এলাকার সড়কের পাশ জুড়ে। ট্রাক ভর্তি করে বিভিন্ন জেলা থেকে হাটে গরু আসছে । গরুর রাখার স্থানও প্রস্তুত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন অপেক্ষা শুধু ক্রেতার।

সোমবার (২ জুন) সকালে হাট ঘুরে দেখা গেছে, সারি সারি গরু বাঁশের সঙ্গে বাঁধা। ব্যবসায়ীরা গরুর দেখভাল করছেন। ক্রেতার সামনে গরুকে আকর্ষণীয় করতে তুলতে একটু বেশিই যত্ন নিচ্ছেন। এদিকে হাট সংশ্লিষ্টরা ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় সর্বদা প্রস্তুত রয়েছেন। শেষ সময়ে যেটুকু কাজ বাকি আছে সেরে ফেলছেন। এই হাটে ফরিদপুরের গরু ব্যবসায়ীদের আধিক্য বেশি।

আরো পড়ুন:

খুলনার জোড়াগেট হাটে হাসিল কমেছে ১ শতাংশ

খুলনায় ২২ হাটে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু

হাটের কাউন্টারের ক্যাশিয়ার আমির হোসেন বলেন, হাট মোটামুটি প্রস্তুত। গরু নিয়ে ব্যবসায়ীরা এসেছে, আরো আসতেছে। আবহাওয়া খারাপ, মাঝে মধ্যে বৃষ্টি নামছে। যদি বৃষ্টি না নামে তাহলে হয়তো কাল থেকে বিক্রি শুরু হবে। বুধ/বৃহস্পতিবার পুরোদমে বিক্রি হবে। আমরা ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় প্রস্তুত রয়েছি।

গরুর দামের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এখনো বোঝা যাচ্ছে না দাম। ব্যবসায়ীরা এখন যা দাম তার বেশি চাচ্ছেন। কাস্টমার কেনা শুরু করলে হয়তো দাম কেমন জানা যাবে।

ফরিদপুরের সদরপুর থেকে গরু নিয়ে আসা সুরুজ মিয়া বলেন, ২৬টি গরু নিয়ে এসেছি। জায়গা দখল করতে আগেই চলে এসেছি। বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একটু ঝামেলাতেই পড়ে গেছি। মশা, মাছি বেশি। তারপরও আল্লাহ ভরসা। আশা করছি, সবগুলো গরু বিক্রি করেই বাড়ি ফিরবো।

এদিকে বৃষ্টির কারণে হাটের অনেক জায়গায় প্ল্যাস্টিকের শামিয়ানা তাবু টাঙানো হয়েছে। বুধবার থেকে পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে এমনটাই আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

ঢাকা/এম/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ