মোদির ব্যক্তিপূজার পররাষ্ট্রনীতি ভারতকে বন্ধুহীন করেছে
Published: 1st, June 2025 GMT
১৬ মে মোদি সরকার ঘোষণা করল, তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠাবে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে। এই ঘোষণায় অনেকেই বিস্মিত হন। কারণ, তখন সরকার ও ক্ষমতাসীন শিবির ছিল পাকিস্তানকে যুদ্ধে পরাজিত করবার বিজয়োল্লাসে মাতোয়ারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ‘অপারেশন সিঁদুর’কে ভারতের নিরাপত্তানীতিতে এক বাঁকবদল হিসেবে তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেন ‘দৃঢ় নেতৃত্ব’ দেওয়ার কৃতিত্ব। ভারত দাবি করে, তারা পাকিস্তানের চীন-নির্মিত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে সফলভাবে আঘাত হেনেছে।
তবু কেন মোদি সরকারের বিদেশে নিজেদের ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য এমন দল পাঠানোর দরকার পড়ল? এমন শক্তিশালী সরকারকে কেন বিরোধীদেরও পাশে টানতে হলো? এসব প্রশ্ন তখনই উঠতে শুরু করে।
সর্বমোট ৫৯ জন সংসদ সদস্যকে ৩২টি দেশে পাঠানো হয়। এর মধ্যে কিছু প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দেন বিরোধী দলের সদস্যরা। কিছু আবার এনডিএর নেতারা। এই দলগুলো বিদেশি সংসদ সদস্য, গবেষক, সাংবাদিক ও থিঙ্কট্যাংকের সঙ্গে দেখা করে সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান ব্যাখ্যা করে।
কিন্তু শুরু থেকেই এই সর্বদলীয় উদ্যোগ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। আগের প্রধানমন্ত্রীদের সময়ে এমন উদ্যোগে সব দলের সঙ্গে আলোচনার রেওয়াজ থাকলেও এবার তা হয়নি। সরকার নিজেই বিরোধী দলের মধ্য থেকে নিজের পছন্দের ব্যক্তি বেছে নেয়। যেমন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যাঁদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল, তা উপেক্ষা করে সরকার নিজেই শশী থারুরকে নির্বাচন করে, যিনি আদর্শবিহীন রাজনীতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত।
ভারতের ইতিহাস বলে, সংকটকালে সব দল একসঙ্গে দাঁড়িয়েছে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর আইপিইউ সম্মেলনে লোকসভা স্পিকার জি এস ধিলনের নেতৃত্বে প্রণব মুখার্জি, জ্যোতি বসু ও শঙ্কর দয়াল শর্মার মতো নেতারা ভারতীয় প্রতিনিধিদলে ছিলেন।জটিলতা এড়াতে কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি, কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিনিধিদলে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সরকারের পক্ষ থেকে কিছুটা ছাড় দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাতিজা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একইভাবে, শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরের হুমকির পর প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীকেও দলে রাখা হয়।
শশী থারুরের বিষয়টি অবশ্য আরও জটিল। গত এক বছরে তিনি কখনো কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের প্রশংসা করছেন, কখনো মোদি সরকারের মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছেন। বোঝাই যাচ্ছে, তাঁর অবস্থান তাঁর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর নির্ভর করছে। একসময় যিনি মোদিকে ‘৫০ কোটি টাকার গার্লফ্রেন্ড’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন, তিনিই কি এখন তাঁর সঙ্গে মিলমিশ করতে চাইছেন? নাকি মোদিই থারুরকে আপন করে নিচ্ছেন?
'নমস্তে ট্রাম্প' আয়োজন, ২০২০ সাল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
বন্ধুদের নিয়ে ‘উড়াল’
আট বছর আগে জোবায়দুর রহমানকে গল্পটা শুনিয়েছিলেন সম্রাট প্রামানিক। জোবায়দুর তখন সহকারী পরিচালক, স্বপ্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা হওয়া। কয়েক বছর পর সত্যি সত্যিই যখন সিনেমা নির্মাণের কথা ভাবলেন, শুরুতেই তাঁর সেই গল্পের কথা মনে পড়ল। সম্রাটকে ফোন করলেন জোবায়দুর, চায়ের দোকানে বসে আবারও গল্পটা শুনলেন। ঠিক করলেন, এ গল্প থেকেই ছবি বানাবেন তিনি।
পেশাদার কোনো প্রযোজকের কাছে যাননি জোবায়দুর, নিজেরাই স্বাধীনভাবে ছবিটি নির্মাণ করেছেন; পাশে ছিলেন ভাই-বন্ধুরা। নির্মাতা বললেন, ‘এটাই আমার প্রথম নির্মাণ, আগে কোনো কাজ করিনি। কী করা যায়? আশপাশের ভাই–বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। শরীফ সিরাজ, সম্রাট প্রামানিক, জহিরুল ইসলামসহ তিন-চারজন মিলে কাজটা শুরু করি।’ তাঁরা কেন বিনিয়োগ করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মাতা জোবায়দুর বলেন, ‘গল্পের কারণে আগ্রহী হয়েছেন তাঁরা।’
শুটিংয়র ফাঁকে তোলা ছবি