ধারের টাকায় কেনা ছাগল দিয়ে শুরু, এখন ৪৫ পশুর মালিক স্নাতকের শিক্ষার্থী
Published: 1st, June 2025 GMT
এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে চাচার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে পাঁচটি ছাগল কিনেছিলেন নাঈমুল ইসলাম। এরপর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের ফারুকীপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতেই ছাগল পালন শুরু করেন তিনি। প্রথমে বড় অঙ্কের লোকসানে পড়েন, তবে দমে যাননি। টানা ছয় বছর ছাগল পালন ও বিক্রি করতে থাকেন। ধীরে ধীরে লাভের মুখ দেখেন নাঈমুল। বর্তমানে তাঁর ‘ফারুকীয়া অ্যাগ্রো ফার্মে’ ২৮টি ষাঁড় কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন।
নুরুল ইসলামের চার সন্তানের মধ্যে নাঈমুল ইসলাম মেজ। পটিয়া এ এস রাহাত আলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে এসএসসি পাস করেন তিনি। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকে পড়াশোনা করছেন। কচুয়াই ইউনিয়নের ফারুকীপাড়ায় নাঈমুলের খামারে গিয়ে দেখা যায়, বসতঘরের সঙ্গে লাগোয়া খামারে গরুকে ঘাস খাওয়াচ্ছেন তিনি। ২০১২ সালে প্রবাসী চাচা আবু তাহেরের কাছ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ধার নেন নাঈমুল। সে টাকায় পাঁচটি পাঁঠা ছাগল কিনে লালনপালন শুরু করেন। কিছুদিন পর হঠাৎ দুটি পাঁঠা অসুস্থ হয়ে মারা যায়। পরে বাকি ৩টি ছাগল ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। এতে খরচসহ প্রায় ৬০ হাজার টাকা লোকসানে পড়েন তিনি। পরের বছর চাচার কাছ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়ে আবারও ২টি বড় পাঁঠা ছাগল কেনেন। চার মাস পর ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন সেগুলো। এভাবে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর চার থেকে পাঁচটি ছাগল লালনপালন করেছেন। ২০১৯ সালে ছাগল বিক্রির জমানো ৮০ হাজার টাকায় ২টি দেশি গরু কেনেন। ২০২০ সালে পটিয়া সমাজ সেবা থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ঘরের পাশে টিনশেডের খামার নির্মাণ করেন। এরপর শুরু করেন গাভি ও ষাঁড় পালন। বর্তমানে ১৪টি গাভি, ৩টি বাছুরসহ তাঁর খামারে পশুর সংখ্যা ৪৫টি।
নাঈমুল বলেন, প্রতিটি গাভি থেকে ২০–২৫ কেজি করে দুধ সংগ্রহ করেন প্রতিদিন। দুধ থেকে টক দইও তৈরি করেন বিক্রির জন্য। দুধ ও দই পাশের একটি দোকানে বিক্রি হয়। খামারে এসেও পাইকারি হারে ক্রেতারা দুধ-দই নিয়ে যান। এতে প্রতিদিন আয় হয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের সময়ে পশুখাদ্য ও ওষুধের দাম বেড়ে যায়। তখন পশুখাদ্যের জন্য নিজেদের চার কানি জমিতে ভুট্টা এবং সাড়ে চার কানি জমি বর্গা নিয়ে নেপিয়ার ঘাসের চাষ শুরু করেন। ২ বছর আগে ১২ হাজার টাকা বেতনে একজন কর্মচারী রাখেন। সব মিলিয়ে খরচ কমানোর পাশাপাশি খামারের উৎপাদন বাড়াতে সব চেষ্টাই করেন তিনি। খামারে গরুর গোবরও যেন নষ্ট না হয়, তার জন্য জৈব সার তৈরির প্রজেক্ট করারও পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর।
নাঈমুল ইসলামের খামারের নামফলক। খামারে পশু বিক্রির পাশাপাশি দুধও বিক্রি করেন তিনি। বিক্রির তৈরি করছেন টক দইও.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
জন্মদিনে দেশে নেই দেশবরেণ্য অভিনয়শিল্পী ববিতা। তিনি এখন আছেন কানাডায়, একমাত্র ছেলে অনিকের কাছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ছেলের কাছে উড়াল দিয়েছেন ববিতা। থাকবেন আগামী নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর দেশবরেণ্যে এই অভিনয়শিল্পীর ঢাকায় ফেরার কথা। আজ বুধবার কানাডার স্থানীয় সময় সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে কথা প্রসঙ্গে জানালেন ববিতা।
আজ ৩০ জুলাই ববিতার জন্মদিন। কয়েক বছর ধরে এই দিনে ঢাকায় থাকলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে গুলশানের বাসায় গান শোনা, আড্ডা দেওয়া, খাওয়াদাওয়া হয়। এর বাইরে পরিচিতজনেরা শুভেচ্ছা জানান। এবার ওসব নেই, যেহেতু কানাডায় আছেন তিনি। ববিতা প্রথম আলোকে জানান, জন্মদিন নিয়ে সেভাবে কোনো ধরনের পরিকল্পনা নেই। কখনো এটা থাকেও না। বললেন, ‘আমার ছেলের আজকে অফিস আছে। বিকেল পাঁচটায় ওর অফিস শেষ হবে। এরপর মা–ছেলে দুজন মিলে ঘুরতে যাব। ছবি তুলব। রাতের খাবার খাব। কেক কাটব। তারপর দুজন মিলে বাসায় ফিরব। ছেলের কাছে আছি, এটাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার।’
ফরিদা আক্তার ববিতা