তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন (বিজিএমই) এর এবারের নির্বাচনে জয়জয়কার অবস্থা নির্বাচন কেন্দ্রীক প্যানেল ফোরামের। আগামী ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে মোট ৩৫ পরিচালক পদের মধ্যে ৩১টিতেই জিতেছেন মাহমুদ হাসান খান বাবুর নেতৃত্বাধীন এ প্যানেল। ফলে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের শীর্ষ পদ ফোরামেই থাকছে, তা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে। বিজিএমইএর ফেসবুকে পেইজে ঘোষিত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
শনিবার রাজধানীর ঢাকা ও চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু হোটেলে সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে চলেছে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভোট গণনা শুরু হয়।
ফলাফলের চিত্রে দেখা গেছে, ফোরামের ঢাকা অঞ্চল থেকে ২৬ প্রার্থীর মধ্যে মাত্র একজন ফেল করেছে। অর্থাৎ ২৫ জনই জয়লাভ করেছেন। এছাড়া চট্টগ্রামের ৯টি পরিচালক পদের মধ্যে ফোরাম জয় লাভ করেছে ৫টিতে।
এদিকে সম্মিলিত পরিষদ প্যানেলের ঢাকা অঞ্চলের ২৬ প্রার্থীর মধ্যে শুধু জয়ী হয়েছেন একজন। তিনি হলেন- বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান। তার প্রাপ্ত ভোট ৮১৩টি। এই প্যানেলের চট্টগ্রাম থেকে জয়ী হয়েছেন তিনজন। তবে এবারের নতুন নির্বাচনী জোট ঐক্য পরিষদের ছয় প্রার্থীর কেউই পাশ করতে পারেননি।
বিজিএমইএর আগামী ২০২৫-২৭ মেয়াদের এই নির্বাচনে ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে ৭৬ জন প্রার্থী লড়েছেন।
ফোরামের ৩৫ প্রার্থীর ৩১ জনই জয়ী
ফোরামের প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ১,১৪৯টি। এই প্যানেল থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন শাহ রাঈদ চৌধুরী, তিনি পেয়েছেন ১,১২৩ ভোট। এছাড়া ১,০৬৬ ভোট পেয়ে ফোরাম থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন মিজানুর রহমান। এরপর যথাক্রমে এম এ রহিম পেয়েছেন ১,০১৪ ভোট, ফয়সাল সামাদ ৯৯২, ইনামুল হক খান ৯৬৬, ভিদিয়া অমৃত খান ৯৫৭, মো.
ফোরাম থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন সেলিম রহমান। তিনি মোট ১,০৫৮ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে ফোরামের প্রার্থী এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ৯৭৯, সাকিফ আহমেদ সালাম ৯৪৪, মো. সাইফ উল্লাহ ৯২৭, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী ৯১৯ এবং এনামুল আজিজ চৌধুরী ৮৯০ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন।
সম্মিলিত পরিষদ থেকে চারজন জয়ী
সম্মিলিত পরিষদের ঢাকা থেকে একজন জিতলেও চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে জয়ী হয়েছেন তিনজন। এরমধ্যে সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর ৯৫০, এস এম আবু তৈয়ব ৮৩৫ এবং রাকিবুল আলম চৌধুরী ৮৩১ ভোট পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে জীয় হয়েছেন। সমিমিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার আবুল কালাম ৬৬৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে মোট ১ হাজার ৮৬৪ জন ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ৬৩১ জন ভোট দেন- যা ভোটার উপস্থিতির হিসেবে প্রায় ৮৭ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৩৭৭টি এবং চট্টগ্রামে ২৫৪টি ভোট কাস্ট হয়। চট্টগ্রামে ৬টি ভোট বাতিল হয়।
জানা গেছে, নির্বাচিত পরিচালকরা আগামী ১১ জুন বিজিএমইএর সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচনের জন্য ভোট দেবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ এমইএ ব জ এমইএর ল ভ কর ছ ম হ ম মদ কর ছ ন হয় ছ ন রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিজিএমইএ’র ৩৫ পরিচালক পদে ভোটগ্রহণ চলছে
গণঅভ্যুত্থানের পর পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর পর্ষদ ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এর সাত মাস পর নতুন নেতৃত্ব ঠিক করতে বিজিএমইএর ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার ঢাকায় এবং চট্টগ্রামে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য শেষ মূহূর্তে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ নির্বাচনের প্রার্থীরা। ছোট উদ্যোক্তাদের সহায়তা, গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান এবং পোশাক খাতের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনে উদ্যোগ নেওয়ার মতো নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২৫-২৭ মেয়াদের এই নির্বাচনে ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে ৭৬ জন প্রার্থী লড়ছেন। আজ শনিবার ঢাকায় এবং চট্টগ্রামে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। মোট ভোটার ১ হাজার ৮৬৫ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন।
প্রার্থীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এর আগে বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। এবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসকের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে। তাই নির্বাচন যেন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়, তা নিশ্চিত করার দাবি তুলছেন অনেকেই। তারা বলছেন, এবার ভোটের মাঠে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ নামে তিনটি প্যানেলের অধীনে অংশ নিচ্ছেন প্রার্থীরা। এর মধ্যে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ ঢাকায় ২৬টি, চট্টগ্রামে ৯টিসহ ৩৫ পদে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করলেও ঐক্য পরিষদ মাত্র ছয়জন প্রার্থী দিয়েছে।
নির্বাচনী ইশতেহারে ১৪ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফোরাম। ফোরামের প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান সমকালকে বলেন, ‘নির্বাচিত হলে পোশাক খাতের অগ্রগতির জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব। উৎপাদন সচল রাখতে গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান, বিজিএমইএর সব কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ছোট কারখানা মালিকদের টিকে থাকার জন্য সহায়তা করার চেষ্টা করব।’ এ প্যানেলের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, পোশাকশিল্প শুধু ব্যবসা নয়, এটি উদ্যোক্তাদের শ্রম, আত্মত্যাগ ও দীর্ঘদিনের স্বপ্নের প্রতিফলন। তাই বিপদে-আপদে বিজিএমইএর সদস্যদের পাশে থাকবেন।
১২ দফা ইশতেহার দিয়েছে সম্মিলিত পরিষদ। সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার মো. আবুল কালাম সমকালকে বলেন, প্রতিপক্ষ প্যানেল নানা কারণে বন্ধ থাকা ৬৯০টি কারখানার মালিককে ভুয়া ভোটার বলে যে অপপ্রচার চালিয়েছে তার নিন্দা জানান তারা। নির্বাচিত হলে তাদের কারখানা চালু ও এসএমই কারখানাগুলোকে সহায়তা করবেন। পরিষদের প্রার্থী মনজুরুল ফয়সাল হক সমকালকে বলেন, বিদ্যুৎ সংকট, এলসি জটিলতা, উচ্চ সুদহার, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পড়ে থাকে দিনের পর দিন–এ জাতীয় নানা সমস্যায় আছে পোশাক খাত। নির্বাচিত হলে এসব বিষয়ে কাজ করব।
ফোরামের প্রার্থী
ফোরামের থেকে ঢাকায় প্রার্থী হয়েছেন– মাহমুদ হাসান খান, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, কাজী মিজানুর রহমান, মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, ইনামুল হক খান, মো. হাসিব উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ, ভিদিয়া অমৃত খান, এম এ রহিম, শাহ রাঈদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, জোয়াদ্দার মোহাম্মদ হোসনে কামার আলম, এ বি এম শামছুদ্দিন, নাফিস-উদ-দৌলা, সুমাইয়া ইসলাম, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মজুমদার আরিফুর রহমান, মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া, ফাহিমা আক্তার, আসেফ কামাল পাশা, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, রুমানা রশীদ, সামিহা আজিম, রেজওয়ান সেলিম ও ফয়সাল সামাদ।
চট্টগ্রামের প্রার্থীরা হলেন– সেলিম রহমান, মো. শরীফ উল্লাহ, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী, এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাকিফ আহমেদ সালাম, এনামুল আজিজ চৌধুরী, এমদাদুল হক চৌধুরী, মির্জা মো. আকবর আলী চৌধুরী ও রিয়াজ ওয়াইজ।
সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী
পরিষদের ঢাকা থেকে প্রার্থী হয়েছেন– মো. আবুল কালাম, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, মির্জা ফায়েজ হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম, তামান্না ফারুক থিমা, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দিন রুবেল, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, মো. শাহদাৎ হোসেন, মো. রেজাউল আলম, ফারুক হাসান, এ কে এম আজিমুল হাই, লিথি মুনতাহা মহিউদ্দিন, মো. আশিকুর রহমান, এস এম মনিরুজ্জামান, মো. মশিউল আজম, মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান, আবরার হোসেন সায়েম, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, সয়েদ সাদিক আহমেদ, মোস্তাজিরুল শোভন ইসলাম, মাঞ্জুরুল ফয়সাল হক, সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন, ফিরোজ আলম ও আসিফ আশরাফ।
চট্টগ্রামের প্রার্থীরা হলেন– এস এম আবু তৈয়ব, রাকিবুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, অঞ্জন কুমার দাশ, নাফিদ নবি, সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, মোস্তফা সারোয়ার রিয়াদ, মো. আবসার হোসেন ও গাজী মো. শহীদ উল্লাহ।