ঈশ্বরদীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আরও ১২০, নারীর মৃত্যু
Published: 2nd, June 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদীতে ডায়রিয়া পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানিবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে কণা খাতুন (২৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঈশ্বরদী ইপিজেডের আইএইচএম কোম্পানির কোয়ালিটি কাটিং সেকশনের কর্মী হিসবে কর্মরত ছিলেন। রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে তিনি মারা যান।
কণা খাতুন উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের খমিন ইসলামের স্ত্রী। খমিন ইসলাম একই কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত।
তিনি জানান, কণা খাতুন শনিবার দুপুরে কোম্পানিতে খাবার ও পানি খাওয়ার পর থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। অসুস্থ শরীর নিয়ে রোববারও তিনি কর্মস্থলে কাজ করেন। এরপর সেখানে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টারে তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কণা কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে সন্ধ্যায় তাকে বাড়িতে নিয়ে গেলে রাত থেকেই তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতিকালে বাড়িতেই কণা মারা যায়।
ঈশ্বরদী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম শহীদুল ইসলাম এই মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টিম ঈশ্বরদী ইপিজেডের কেন্দ্রীয় পানি শোধনাগার ও পানির প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে আজ সোমবারও ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন করে আরও রোগী ভর্তি হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
প্রসঙ্গত, ঈশ্বরদী ইপিজেডের সাপ্লাই পানি পান করে কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানার শত শত শ্রমিক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিন ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এ পর্যন্ত ঈশ্বরদীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫০০ ছাড়িয়েছে।
ডায়রিয়া আক্রান্ত সব রোগীই ঈশ্বরদী ইপিজেডের নাকানো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি, আইএমবিডি কোম্পানি, ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও লিমিটেড (এ্যাবা) ও রেনেসাঁ বারিন্দ লিমিটেডসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী।
ঈশ্বরদী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম শহীদুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরদী ইপিজেডে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রাথমিকভাবে দূষিত পানি পান করার কারণে গণহারে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সাপ্লাই পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় কোরবানির পশুর হাটে ছোট ও মাঝারি গরু বিক্রি বেশি
রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা ইমদাদ উল্লাহ। ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য গাবতলী পশুর হাট থেকে মাঝারি আকারের একটি গরু কেনেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ইমদাদের সঙ্গে কথা হয়। তখন তিনি হাটের হাসিল আদায় কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
এ বছর হাটে গরুর দরদাম নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে ইমদাদ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিক্রেতা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দাম চেয়েছিলেন। গরুটি পছন্দ হওয়ায় দেড় লাখ টাকা দাম বলি। পরে আরও ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বনিবনা হয়।’ বাজারে গরুর দাম স্বাভাবিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজধানীর হাটগুলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল থেকে কোরবানির পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। গতকাল হাট শুরুর প্রথম দিন বিকেলে গাবতলী পশুর হাটে গিয়ে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। প্রথম দিনের তুলনায় হাটে গরু-ছাগল বেশ বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন হাটসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও হাটে কোরবানির পশু আনা বিক্রেতারা। ক্রেতারাও দাম নিয়ে তাঁদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনকোরবানির পশু বিক্রি আজ, দুই সিটিতে ১৯ হাট২০ ঘণ্টা আগেসরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী হাটের নির্ধারিত এলাকা ছাড়িয়ে ইট-বালু বিক্রির জায়গাতেও (গদি) ত্রিপলের ছাউনি ও প্যান্ডেল খাটিয়ে গরু রাখা হয়েছে। সারা দেশ থেকে গরু নিয়ে আসা পাইকার, ব্যবসায়ী ও খামারিরা নিজেদের গরু এসব ছাউনির নিচে বেঁধে রেখেছেন। হাটে প্রবেশের মূল ফটকে ক্রেতাদের সমাগম দেখা গেছে। কেউ পছন্দের গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলেন, কেউ আবার কোরবানির পশু কিনতে হাটে ঢুকছিলেন।
বিকেল চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টায় শতাধিক ক্রেতাকে পছন্দের পশু কিনে ওই ফটক দিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে। ছোট ও মাঝারি আকারের গরু বেশি বিক্রি হতে দেখা গেছে। এসব গরু ৭২ হাজার থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকার মধ্যে কিনেছেন বলে জানালেন ক্রেতারা।
মিরপুর ২ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা বাবুল খন্দকার পছন্দের খাসি কিনে হাসিল ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁর ভাই সেলিম খন্দকার হাসিল জমা দিচ্ছেন বলে জানান তিনি। সঙ্গে ছিল বাদামি রঙের মাঝারি আকারের চেয়ে কিছুটা বড় আকারের একটি খাসি। দাম জানালেন ২৩ হাজার টাকা।
বাবুল খন্দকার বলেন, ‘প্রথমে গাবতলী হাটে এসেছি। এখানে এসেই এই খাসি আর এর দাম পছন্দ হয়ে গেছে। তাই দেরি না করে কিনে ফেলেছি।’ এরই মধ্যে হাসিল পরিশোধ করে পাশে এসে দাঁড়ালেন বাবুলের ভাই সেলিম। ভাইকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘সুযোগ থাকলে আজকেই গরুটাও কিনে ফেললে ভালো হতো।’
সিরাজগঞ্জের গরু ব্যবসায়ী আলতাফ মিয়া জানালেন, এবার তিনি মোট ২৪টি গরু হাটে এনেছেন। তিনি রোববার রাতে হাটে পৌঁছান।
গতকাল বিকেলে তাঁর তিনটি গরু বিক্রি হয়েছে। এর একটি ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। অন্য দুটির একটি ১ লাখ ৩০ হাজার, অপরটি ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়।