খাগড়াছড়িতে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে হাজারো পরিবার। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার পরিবারসহ পুরো জেলায় প্রায় ৩৫ থেকে ৩৬ হাজার পরিবার কষ্ট আর ঝুঁকি নিয়ে বাস করেন পাহাড়ের পাদদেশে। বর্ষা এলেই তারা আতঙ্কে থাকেন—যেকোনো পাহাড়ধসের হারাতে পারেন সর্বস্ব, ঘটতে পারে প্রাণহানি। 

চলমান টানা বৃষ্টিতে খাগড়াছড়িতে ছোট-বড় পাহাড়ধস ঘটেছে। এতে কারো প্রাণহানি না ঘটলেও অনেক বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের শালবন খাগড়াপুর, কুমিল্লা টিলা, সবুজবাগ, ঠাকুরছড়া এলাকায়। এছাড়াও জেলার রামগড়, লক্ষ্মীছড়ি, দীঘিনালাসহ বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে বাস করছে হাজারো পরিবার।   

খাগড়াছড়ি সদরের শালবাগান গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় মসজিদের ঈমাম মাওলানা আবুল কাশেম ও নুর নাহার বেগম, রামগড়ের কালাডেবা গ্রামের বাসিন্দা মো.

সেলিম ও লক্ষ্মীছড়ির জুর্গাছড়ির রামেন্দ্র চাকমার সঙ্গে কথা বলেছেন রাইজিংবিডি ডটকমের এ প্রতিবেদক। 

তারা জানিয়েছেন, বর্ষা এলেই তারা পাহাড়ধসের আতঙ্কে থাকেন। কিন্তু, কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই, বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে বাস করতে হয় তাদেরকে। 

তাদের দাবি, পাহাড় যাতে না ভাঙে, সেজন্য সরকার ধারক দেয়াল বা অন্য কোনো ব্যবস্থা করে দিলে তারা নিরাপদে থাকতে পারবেন।  

পাহাড়ের পাদদেশের বাসিন্দারা আরো জানিয়েছেন, টানা বর্ষনের সময় প্রশাসন তাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খুললেও তারা সেখানে যেতে চান না। কারণ, আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে তাদের গবাদি পশু ও বাড়ির জিনিসপত্র সব সেখানে নেওয়া সম্ভব নয়। অনেক সময় তারা আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে অন্যরা তাদের ঘর-বাড়ির জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। 

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল খন্দকার বলেছেন, টানা বৃষ্টির সময় পাহাড়ে বসবাসকারীদের জান-মাল রক্ষার জন্য তাদেরকে নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়। আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। 

তিনি আরো বলেন, পাহাড়ধসের স্থায়ী সমাধান কীভাবে করা যায়, তা ভেবে দেখা হচ্ছে। পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারী কেউ যদি পুনর্বাসনে আগ্রহী হন, তাহলে উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

ঢাকা/রূপায়ন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প হ ড়ধস র ব স কর পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, ধীর গতি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মহাসড়কটিতে এই অবস্থা দেখা গেছে। ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কেও ধীর গতিতে চলছে যানবাহন। মহাসড়ক দুটিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ।

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর থেকে বাড়ি ফিরছেন কর্মজীবীরা। ফলে মহাসড়কগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি যানবাহন চলাচল করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। রাতে বেশ কয়েকটি স্থানে যানবাহন বিকল হয়ে মহাসড়কের দুইদিকে যানজটের সৃষ্টি হয়।

পুলিশ, যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দুটিতে যানবাহনের চাপ থাকায় থেমে থেমে যানজট তৈরি হয়েছে। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘ ভোগান্তি এড়াতে অনেকেই পায়ে হেঁটে এগিয়ে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের গাড়ি ধরতে চাইছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা ধীরে ধীরে চলাচল করছে যানবাহন।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল শিল্পাঞ্চলগুলোর পোশাক কারখানায় ছুটি হওয়ায় লাখো মানুষ একই সঙ্গে নিজেদের গন্তব্যে যাত্রা করেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহনের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। এতে রাতভর মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট তৈরি হয়। ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষদের দীর্ঘসময় যানবাহনে বসে থাকতে হচ্ছে। গরম ও যানজটে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েন শিশু, নারী ও বয়োজ্যেষ্ঠরা।

আজ সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বোর্ডবাজার থেকে সালনা ৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজট তৈরি হয়েছে। এসব এলাকায় থেমে থেমে চলছে গাড়ি। এর মধ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক যানবাহন না পেয়ে পেয়ে অনেকেই বিভিন্ন যানবাহনের খোলা ছাদ, ট্রাক ও পিকআপে করেই গন্তব্যে উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

রাজশাহী যাওয়ার উদ্দেশে চন্দ্রা থেকে আলম এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের একই বাসে উঠেন আকবর আলী। যানজটে আটকে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কষ্ট করছি। কখন যানজট শেষ হয় কে জানে? রাস্তায় কোনো পুলিশও দেখছি না।’

রাজধানীর মহাখালী থেকে ৫ ঘণ্টা আগে রওনা হয়ে আস সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরে চন্দ্রা এলাকায় আটকে ছিলেন জেঁকে পরিবহনের বাসচালক ময়নাল হোসেন। তিনি বলেন, চন্দ্রার আগে এসে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেক বয়স্ক ও শিশু যাত্রী আছে, তাঁরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের (ওসি) সওগাতুল আলম। তিনি জানান, সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি যানবাহনের গতি সচল রাখতে হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট আছেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্যাসেঞ্জার তোলায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ে। যানবাহনের চাপ ও রাতে কয়েকটি স্থানে পরিবহন বিকল হওয়ায় এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ