চার দিনের সফরে আগামী সোমবার যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সফরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী। বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

রুহুল আলম বলেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক গভীর ও জটিল। সেই বিবেচনায় দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আসন্ন দ্বিপাক্ষিক সফরটি গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিকভাবেও দেশটি বাংলাদেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আইন ও সরকার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আমরা এখনও যুক্তরাজ্যকে অনুসরণ করি।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সুশাসন ইত্যাদি বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেয়। এর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে দেশটির সহায়তা দরকার।

এ সফরের গুরুত্বের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যুক্তরাজ্যের মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে। দুই দেশের অর্থনীতি গতিশীল করবে এবং নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ১২ জুন বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন ইউনূস। ওইদিন বিকেলে সেন্ট জেমস প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত থেকে কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করার কথা সরকারপ্রধানের। আগামী ১১ জুন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা। এ ছাড়া, তিনি যুক্তরাজ্যের নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নেওয়ার কথা।

বিগত সরকারের অনেক নেতা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তাদের ফেরানোর বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে রুহুল আলম বলেন, আমাদের এ মুহূর্তে প্রধান বিষয়টি হচ্ছে, পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধার। আমরা ব্যক্তি বিষয়ে যতটা পদক্ষেপ নিচ্ছি, তার চেয়ে বেশি পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার করাটা বেশি জরুরি। আমরা পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সব দেশের সঙ্গে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর অংশ হিসেবে অবশ্যই যুক্তরাজ্যে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিষয়টি উপস্থাপন করব।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের প্রক্রিয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেসব দেশে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করা হয়েছে, সেসব দেশের সঙ্গে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্সের (এমএলএ) আওতায় আমরা কাজ করছি। এসব বিষয়ে স্বল্প সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের মিটিংয়ে এত বিস্তারিত আলোচনা করার সুযোগ থাকে না। সেজন্য সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

প্রধান উপদেষ্টার সফরে যুক্তরাজ্যের দিক থেকে দেশটি থেকে এয়ারবাস কেনার বিষয়ে আলোচনা হবে কিনা, জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ প্রশ্নের উত্তর আমি ঠিক জানি না। এটা নির্ভর করছে যুক্তরাজ্যের দিক থেকে কেউ আমাদের কাছে তুলে ধরবে কিনা। এ মুহূর্তে এ ব্যাপারে আমাদের কোনো পলিসি বা সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই।

লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে রুহুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তার যে কর্মসূচি উল্লেখ করেছেন, সে অনুযায়ী এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।’

প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কোনো সমঝোতা স্মারক বা কোনো চুক্তি হচ্ছে না। আগামী ১৪ জুন দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড ইউন স য ক তর জ য য ক তর জ য র পরর ষ ট র প চ র হওয় র হ ল আলম অর থ ফ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বকাপে টিকিট পেল ১০ দেশ , বাকিরা আসবে কিভাবে

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে এশিয়ার দুটি দেশ জর্ডান আর উজবেকিস্তান। সেই সঙ্গে এগারোতম বারের মতো বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এ নিয়ে এশিয়া থেকে মোট পাঁচটি দেশ আগামী বছরের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে। 

আগামী বছর ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই যুক্তরাস্ট্র, কানাডা আর মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হবে ফিফা বিশ্বকাপ। যেখানে প্রথমবারের মতো সর্বাধিক ৪৮ দল অংশগ্রহন করবে। যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১০ টি দেশ তাদের বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করেছে। স্বাগতিক হিসাবে যুক্তরাস্ট্র, কানাডা আর মেক্সিকো এমনিতেই অংশগ্রহন করবে। বাকিদের মধ্যে জাপান, নিউজিল্যান্ড, ইরান, আর্জেন্টিনা, উজবেকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া ও জর্ডান যোগ্যতা অর্জন করেছে। এখন বাকি ৩৭ দলের ভাগ্য নির্ধারন। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিশ্বের কোন অঞ্চল থেকে কোন দেশ যেতে পারে আগামী বিশ্বকাপে।

লাতিন অঞ্চল: দক্ষিন আমেরিকার এই অঞ্চলের বাছাই পর্বের শীর্ষ ছয়টি দল বিশ্বকাপে যাবে। যেখান থেকে এরই মধ্যে আর্জেন্টিনা তাদের জায়গা নিশ্চিত করেছে। তালিকার সাত নম্বরে থাকা দলটি প্লে অফ খেলে শেষ একটি সুযোগ পাবে। এই মুহুর্তে লাতিন অঞ্চলের বাছাই পর্বের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ রয়েছে আর্জেন্টিনা, তারপর ইকুয়েডর, প্যারাগুয়ে, ব্রাজিল, উরুগুয়ে আর কলম্বিয়া। সাত নম্বর দল হিসাবে আছে ভেনিজুয়েলা। আঠারোটি ম্যাচের মধ্যে দল গুলোর আর তিনটি করে ম্যাচ বাকি।

এশিয়া অঞ্চল: এশিয়া থেকে বাছাই পর্ব খেলে আটটি দল বিশ্বকাপের টিকিট পাবে। বাকি একটি দল প্লে অফ খেলার সুযোগ পাবে। এরই মধ্যে এশিয়া থেকে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে জাপান, ইরান, উজবেকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জর্ডান। আর দুটি দল বাকি আছে বিশ্বকাপের যাওয়ার।

আফ্রিকা অঞ্চল: আফ্রিকা থেকে বাছাই পর্ব খেলে মোট নয়টি দল বিশ্বকাপে যাবে। বাকিট একটি দল প্লে অফের সুযোগ পাবে। এখনো পর্যন্ত এখান থেকে কোন দেশের বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত হয়নি। তবে মিশর, কঙ্গো, দক্ষিন আফ্রিকা, কেপ ভারডে, মরোক্কো, আইভরি কোস্ট, আলজেরিয়া, তিউনেশিয়া ও ঘানার নিজেদের গ্রুপে এগিয়ে রয়েছে।

সেন্ট্রাল, উত্তর আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল: এই অঞ্চল থেকে মোট ছয়টি দেশ অংশগ্রহন করবে। যার মধ্যে স্বাগতিক হিসাবে যুক্তরাস্ট্র, কানাডা আর মেক্সিকো এরই মধ্যে অংশগ্রহন নিশ্চিত। 

ইউরোপ: এই অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বেশি ১৬ টি দেশ অংশগ্রহন করবে। যার মধ্যে বারোটি গ্রুপের শীর্ষ দলগুলো সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে যাওয়ার। এখনো পর্যন্ত কোন দলেরই বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়নি। আগামী মার্চ পর্যন্ত চলবে বাছাই পর্ব।

প্রশান্ত মহাসাগরিয় অঞ্চল: দুটি দল যাবে এই অঞ্চল থেকে। যার একটি নিউজিল্যান্ড এরই মধ্যে টিকিট নিশ্চিত করেছে। বাকি দলটি প্লে অফ খেলে বিশ্বকাপে যাওয়ার সুযোগ পাবে। এই প্লে অফে মোট ছয়টি দল অংশগ্রহন করবে। যেখান থেকে মোট দুটি দলের ভাগ্যে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ মিলবে। এই ছয়টি দল আসবে আফ্রিকা, এশিয়া, দক্ষিন আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরিয় অঞ্চল থেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ