আগামী ছয় মাস হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী আসতে পারবেন না। গতকাল বুধবার এক নির্বাহী আদেশ জারি করে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্তকে প্রতিশোধমূলক বলে আখ্যা দিয়েছে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ।

হার্ভার্ডের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘এটি প্রশাসনের নেওয়া আরেকটি বেআইনি ও প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ, যা (যুক্তরাষ্ট্রের) সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে পাওয়া হার্ভার্ডের অধিকারের লঙ্ঘন।’

হার্ভার্ড তাদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে বলেও ওই বিবৃতিতে বলেছেন হার্ভার্ডের মুখপাত্র।

এদিন আরও একটি নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। আগামী সোমবার থেকে এটি কার্যকর হবে। এই নিষেধাজ্ঞার মধ্য দিয়ে নিজের প্রথম মেয়াদের অন্যতম বিতর্কিত পদক্ষেপের পুনরাবৃত্তি ঘটালেন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট।

নতুন এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকেরা।

এ ছাড়া ট্রাম্প আরও সাতটি দেশের ওপর আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। দেশগুলো হলো বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমিনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা।

কয়েক সপ্তাহ ধরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর একের পর এক ‘শাস্তিমূলক’ ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছেন ট্রাম্প। কয়েক দফায় বিশ্ববিদ্যালয়টির বেশির ভাগ অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির ওপরও নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সময় বিভিন্ন অভিযোগও তুলছেন। হার্ভার্ডে ডেমোক্র্যাট ও কট্টর বামপন্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুননতুন করে হার্ভার্ডের ৪৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান বাতিল করল ট্রাম্প প্রশাসন১৪ মে ২০২৫আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের৪ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ব শ বব দ য কর ছ ন র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেওয়ায় মহিলা দলের নেত্রীকে মারধর, অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

চাহিদামতো ভিজিএফের স্লিপ না পাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদে তালা দিয়েছিলেন ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়ন মহিলা দলের সভাপতি মালেকা বেগম। ওই ঘটনার জেরে মারধরের শিকার হন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের লোকজন তাঁর ওপর হামলা করেন।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ভিজিএফের চাল নিতে আসা নারীদের হামলায় মালেকা বেগম আহত হয়েছেন।

এদিকে মালেকা বেগমের ওই অভিযোগের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভ করেছেন এলাকার লোকজন। বিকেল চারটা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়।

গত মঙ্গলবার সকালে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদে মালেকা বেগমকে মারধর করা হয়। পরে তিনি তজুমদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তিনি ইউপির সাবেক সদস্য। ওই ঘটনা সম্পর্কে মালেকা বেগম বলেন, ‘গত সোমবার ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইয়াজউদ্দিনের কাছে ঈদে বরাদ্দ ভিজিএফের ১০০টি স্লিপ চেয়েছিলাম। তিনি ৪০ জনের তালিকা দিতে বলেছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেন। তখন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহীম হাওলাদারের ভাই কালিমুল্লাহ ও ইউপির দফাদার মো. আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে একদল নারী তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। তাঁরা তাঁর ছবি ফেসবুকেও ছড়িয়ে দিয়েছেন।

এ সম্পর্কে বিএনপি নেতা ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ‘ওই দিন (মঙ্গলবার) নারীদের মধ্যে চাল বিতরণের কথা ছিল। তাঁরা এসে পরিষদে তালা মারা দেখেন এবং মালেকা বেগমকে তালা খুলে দিতে বলেন। এ সময় কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে মালেকা বেগম হতদরিদ্র নারীদের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করেন। তখন তাঁরা তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় আমার পরিবারের বা বিএনপির কেউ জড়িত নন।’

চাঁচড়া ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইয়াজউদ্দিন বলেন, ‘তাঁদের ইউনিয়নে ১ হাজার ৬৭৪ জন হতদরিদ্রের নামে ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফের চাল এসেছে। মহিলা সভাপতি (মালেক বেগম) একাই ১০০টি স্লিপ দাবি করেন। তাঁকে বলেছিলাম, আইডি কার্ড জমা দেন, চেষ্টা করব। ঘটনার দিন (মঙ্গলবার) সাড়ে ১০টার সময় পরিষদে গিয়ে জানতে পেরেছি তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।’

তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত খান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ