মণ নয়, আম কেনাবেচা করতে হবে কেজি দরে
Published: 6th, June 2025 GMT
রাজশাহী বিভাগে এখন থেকে মণ দরে আম কেনাবেচা করা যাবে না। শুক্রবার (৬ জুন) থেকে আম কেনাবেচা করতে হবে কেজি দরে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আম সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজশাহী অঞ্চলে এক মণ আম কেনার সময় আড়তদাররা ৪২ থেকে ৫৫ কেজি পর্যন্ত আম নিয়ে থাকেন। তবে চাষিদের ৪০ কেজি বা এক মণেরই দাম দেন। বিভিন্ন সময় এই ‘ঢলন’ প্রথা থামাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হলেও কার্যকর হয়নি। তবে এবার কেজি হিসেবে আমের কেনাবেচা হলে ‘ঢলন’ নেয়া বন্ধ হবে বলে প্রশাসন মনে করছে।
এবার এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৮ এপ্রিল বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারা দেশে কেজি প্রতি দরে আম কেনাবেচা করার সাধারণ নির্দেশনা দেয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয় কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পরিপক্ক হলেই আম পাড়া যাবে : ডিসি
লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীদের বর্ণিল পিঠা উৎসব
বর্তমানে আমের বাজার জমজমাট। এখনো বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন পরিমাণে মণ দরে আম বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় সব জায়গায় একই ওজনে আম বিক্রি পদ্ধতি প্রচলনের জন্য বুধবার (৪ জুন) চাঁপাইনবাবগঞ্জের, শিবগঞ্জ ও কানসাটের আমচাষি, আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা বিভাগীয় কমিশনারে কার্যালয়ে আসেন এবং বিষয়টি আলোচনা করেন। তারা সবাই বিভাগের সকল জেলায় যেন একই পদ্ধতিতে আম কেনাবেচা করা হয় তার পক্ষে সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিভাগের সকল জেলায়, বিশেষ করে নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ।
বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ছে, রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত আমের চাহিদা সারা দেশে বিস্তৃত। এই অঞ্চলের আমের গুণগত মান উন্নত হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু আমের কেনাবেচার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে আম চাষিরা ওজন বা পরিমাপগত কিছু সমস্যায় আছেন। আম চাষিরা যখন আড়তে আম বিক্রি করতে যান, তখন আড়তদাররা ৪২ থেকে ৫৫ কেজিতে মণ ধরে আম কিনে থাকেন। আম যেহেতু পচনশীল পণ্য, সেহেতু কৃষকেরা এই পদ্ধতিতে আম বিক্রি করতে বাধ্য থাকেন। এতে কৃষকেরা প্রায়শই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন বা হচ্ছেন।
এ জন্য অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত বিভিন্ন জেলার আম চাষি, আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা খোলামেলা আলোচনা করেন। কৃষকেরা একই ক্যারেটে বিভিন্ন সাইজের আম সাজিয়ে বিক্রি করে থাকেন বলে কেউ কেউ জানান। সভায় আম ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা একটি কমিশন ঠিক করার প্রস্তাব করেন। আলোচনায় বিভিন্নজন তাদের সুচিন্তিত মতামত দেন। তবে সকলে সম্মিলিতভাবে সর্বসম্মতক্রমে কেজি প্রতি দরে আম ক্রয়-বিক্রয়ের পক্ষে মতামত দেন।
আলোচনা শেষে সভায় সর্বসম্মতভাবে জাত, গ্রেড ও গুণগত মান বিবেচনায় আম প্রতি কেজি দরে খুচরা কিংবা পাইকারি যে কোনো পর্যায়ে কেনাবেচা করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এক্ষেত্রে আড়তদাররা কেনাবেচার কোনো পর্যায়েই কোনরূপ কমিশন পাবেন না।
সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয়, সারা দেশে একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত শুক্রবার (৬ জুন) থেকে রাজশাহী বিভাগের সকল জায়গায় একযোগে বাস্তবায়িত হবে। সভার এই সিদ্ধান্তগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সম্মিলিতভাবে সবাই সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন এবং যার যার অবস্থান থেকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রয়োজনে প্রচলিত আইনের প্রয়োগ করা হবে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ আম ক ন ব চ আম ব ক র আড়তদ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অযত্ন-অবহেলার পরও দাঁড়িয়ে আছে ভোলার হাজার কোটি টাকার ডাবের অর্থনীতি
ভোলা সদর উপজেলার আলীয়া মাদ্রাসা রোডের বাসিন্দা আবদুল মতিন। বাড়ির আশপাশে তাঁর ১৫টির মতো ডাবের গাছ আছে। কয়েক বছর আগেও তাঁর প্রতিটি গাছে শতাধিক ডাব ধরত। গাছ লাগানোর পর কখনো যত্ন নেননি উল্লেখ করে আবদুল মতিন বলেন, এখন ২০-৩০টির বেশি ধরছে না।
তবে ভিন্ন চিত্র পাওয়া গেল তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের আড়ালিয়া দত্তপাড়ার বাসিন্দা হিরণ চন্দ্র দের কাছে। তাঁর বাড়িতে শতাধিক নারকেলগাছ আছে। তিনি বছরে তিন দফায় ডাব বিক্রি করেন। গাছের গোড়ায় জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন। এ কারণে তিনি তিন দফায় একটি গাছ থেকে ১৫০-১৬০টি কচি ডাব বিক্রি করতে পারেন। এসব ডাব তিনি ৬০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। গরম পড়লে ডাবের চাহিদা বাড়ে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, ভোলা জেলায় প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে নারকেলগাছ আছে। ২৪৭ শতকে এক হেক্টর হিসেবে মোট জমির পরিমাণ ৩৯ লাখ ৫২ হাজার শতক। প্রতি শতকে গড়ে ৪টি নারকেলগাছ হিসাবে মোট গাছের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১ কোটি ৫৮ লাখ। একটি গাছে বছরে গড়ে ৭০টি নারকেল ধরছে। যা বিগত সময়ের থেকে কম। এ হিসাবে জেলায় বছরে প্রায় ১১০ কোটি ৬৫ লাখ ৬০ হাজার নারকেলের ফলন হচ্ছে। গড়ে একটি নারকেলের দাম ১০০ টাকা ধরলেও ১১ হাজার ৬৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার ডাব–নারকেলের ফলন হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভোলায় ডাব বা নারকেলের ফলন আরও বাড়ত; কিন্তু রোগবালাই, নদীভাঙন ও অযত্ন-অবহেলার কারণে দিন দিন ফলন কমছে। ভোলায় নারকেলগাছের যত্ন নেওয়ার জন্য সরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই। কৃষকেরাও জানেন না কীভাবে নারকেল গাছের যত্ন নিতে হয়। রোগবালাইয়ের চিকিৎসা ও নিয়মিত সার প্রয়োগ করলে ভোলায় আরও বেশি ফলন হতো।
অযত্নে পোকার আক্রমণ, ভাঙনেও কমছে উৎপাদন
সরেজমিন জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে দেখা যায়, কোনো গাছে ৬ থেকে ৭টি, কোনোটিতে ৯০ থেকে ১০০টি পর্যন্ত ডাব ধরে আছে। অনেক গাছে একদমই নেই। এসব গাছের পাতার উপরিভাবে কালো ছাতা পড়া দাগ দেখা গেছে। পাতার ভেতরের দিকে সাদা সাদা ছোপ ছোপ মাকড়সার জালের মতো বাসা দেখা যায়। কৃষি অফিস বলছে, উপরিভাগে কালো ছাতাপড়া দাগ হচ্ছে ছত্রাক। আর সাদা ছোপ ছোপ দাগগুলোর একটি ‘হোয়াইট ফ্লাই’ নামের পোকার বাসা। আরেকটি মাইট নামের মাকড়ের বাসা। এসব পোকামাকড় ও ছত্রাক নারকেলের পাতার রস টেনে খেয়ে ফেলার কারণে পাতা সূর্য থেকে খাদ্য গ্রহণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে বলে জানান কৃষিবিদেরা।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ডাবের আকার আগের চেয়ে ছোট হয়ে আসছে। গায়ে ও মুখের কাছে চিরিচিরি দাগও পড়েছে। গাছের মালিকেরা বলছেন, আগের মতো নারকেল ধরছে না। আগে একটি পূর্ণবয়স্ক গাছে বছরে শতাধিক নারকেল ধরত।
চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড়ের বাসিন্দা নাছিউর রহমান বলেন, তাঁর নিজের ১৭৫টি এবং তাঁর পরিবারের ৫ শতাধিক নারকেলগাছ আছে। এসব গাছে যত সংখ্যক নারকেল ধরে, তার অধিকাংশ ইঁদুর নষ্ট করে ফেলে। সঙ্গে আছে রোগবালাই, ফলে আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন না।
সাগর মোহনার ইউনিয়ন চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকরি-মুকরির বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, তাঁর ৩০টি নারকেলগাছ। প্রতিটি গাছ থেকে বছরে তিনবারে গড়ে ১৩০টি করে নারকেল বিক্রি করতে পারেন। তবে যত্ন করলে আরও বেশি নারকেল বিক্রি করতে পারতেন। চর কুকরি-মুকরিতে অনেকের গাছে আরও বেশি নারকেল ধরে। তিনি এ বছর একটি ডাব ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নে কমপক্ষে তিন হাজার নারকেলগাছ ছিল। ভাঙনের কারণে এখন ৩০টিও নেই। ঢালচরের বাসিন্দা মৎস্য আড়তদার শাহে আলম ফরাজি বলেন, তাঁদের ১৭৫টি ফলন্ত গাছ ছিল। বছরে প্রায় ১৫ হাজার ডাব বিক্রি করতেন। সব মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে।
ঢালচরের মতো ভোলার ৭ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের আংশিক ও সম্পূর্ণ মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ কারণে নারকেলগাছের সংখ্যাও বাড়ছে না।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম মল্লিক বলেন, অতিরিক্ত খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে নারকেলগাছে রোগবালাই বেড়েছে। বর্তমানে বিদেশি জাতের নারকেলগাছে ১০ বছর বয়সের পরে নারকেল কম ধরে। সাবেক জাতগুলোতে ৩৫ বছর পর্যন্ত নারকেল দেয়। তবে যত্ন করলে আজীবন ফলন হয়। এ জন্য বছরে দুইবার, নির্ধারিত পরিমাণে সার প্রয়োগ করতে হবে। এক. বর্ষার আগে জৈ৵ষ্ঠ মাসে, দুই. বর্ষার পরে শীতের আগে। অন্যদিকে পোকামাকড়ের জন্য পাওয়ার ফুড পাম্প দিয়ে সোডা-সাবানের গুঁড়া পানিতে গুলিয়ে নারকেলগাছের পাতায় স্প্রে করতে হবে। পরে ইমিডা ক্লোরফিড ও ভার্টিমেক্স স্প্রে করতে হবে।
দাম পান না গাছের মালিকেরা
ভোলার সদর রোডে বর্তমানে একটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়। ঝুনা নারকেল ভোলায় বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকায়। ক্রেতাদের চড়া দামে ডাব ও নারকেল কিনে খেতে হলেও গাছের মালিকেরা অনেক কম দাম পান।
সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের মিজিবাজার এলাকার পল্লিচিকিৎসক আমির হোসেন বলেন, এবার তিনি তাঁর দুটি গাছের ৩৭টি ডাব ৭০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
ভোলায় সরাসরি মালিকের বাড়ি থেকে ডাব ও নারকেল সংগ্রহের জন্য একধরনের পেশাজীবী রয়েছেন। তাঁদের স্থানীয়ভাবে ‘হকার’ বলা হয়। একজন হকার এক দিনে ৪০টি পর্যন্ত গাছে উঠে ডাব কাটতে পারেন। লালমোহন উপজেলার হকার মো. জাফর ও সিরাজুল ইসলাম জানান, তাঁরা এ বছর ৫০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা দরে ডাব কিনছেন। তবে দাম আরও বাড়বে। গরম বাড়লে দাম বেশি পাওয়া যায়। গত বছর একটি ডাব ৮০ টাকা পর্যন্ত কিনেছেন। তাঁরা একটি ডাবে ১০-১৫ টাকার বেশি লাভ করতে পারেন না। তবে যাঁরা খুচরা কেটে বিক্রি করেন, তাঁরা বেশি লাভ করেন। একটি ডাবে কখনো ৫০ টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে খুচরা বিক্রেতাদের।
শতাধিক আড়তে বিশাল কর্মযজ্ঞ
জেলার নানা প্রান্ত থেকে ডাব সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানোর জন্য ভোলায় শতাধিক ডাবের আড়ত গড়ে উঠেছে। ডাবের আড়তদার, হকার, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি আড়তের অধীন ১৫-২০ জন হকার আছেন। তাঁরা ডাব কিনে বিক্রি করেন আড়তদারের কাছে। জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ও মূল ভূখন্ড থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ ডাব-নারকেল সংগ্রহ করে বাইরে পাঠানো হয়। তবে শীত পড়লে ডাবের চাহিদা অনেক কমে যায়।
একসময় ভোলা থেকে লঞ্চে করে ডাব নেওয়া হতো ঢাকা, রংপুর, বগুড়া, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে। এখন সরাসরি ট্রাকে ঢাকাসহ অন্যত্র নেওয়া হয়। এখনো অনেকে লঞ্চে উঠিয়ে নেন।
লালমোহন বাজারের ডাবের আড়তদার রাসেল বকশি বলেন, তাঁরা ভোলা থেকে নিয়ে ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ডাব বিক্রি করেন। মোকামে তাঁরা একটি ডাব ৮০-৮৫ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারেন না। একটি ডাবে তাদের ২-৩ টাকার বেশি লাভ থাকে না। এখন ডাবের চাহিদা বেশি। লালমোহন থেকে প্রতিদিন ২০-৩০ হাজার ডাব ভোলার বাইরে পাঠাচ্ছেন।
ভোলার কমপক্ষে ৫০টি নারকেলগাছের মালিক বলেন, ভোলায় নারকেলগাছের যত্ন নেওয়ার জন্য সরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই। কৃষকও জানেন না কীভাবে নারকেলগাছের যত্ন নিতে হয়।
তবে জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম মল্লিক বলেন, পৃষ্ঠপোষকতা নেই বললে ভুল হবে, আছে অপ্রতুল।
ভোলার বিসিক শিল্পনগীরর মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. জামাল উদ্দীন খান বলেন, ভোলায় প্রচুর নারকেল উৎপাদিত হলেও কখনোই নারকেলকেন্দ্রিক কলকারখানা গড়ে ওঠেনি। একসময় ভোলায় উৎপাদিত ঝুনা নারকেল ট্রলার-লঞ্চ ভরে ভোলার বাইরে—ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলে যেত। সেখানের কারখানায় তেল হয়ে আবার টিন ভরে ভোলায় আসত। এখন লোকজন ডাব বিক্রি করেন, ট্রাক ভরে ডাব ও ঝুনা নারকেল ভোলার বাইরে যাচ্ছে। যদি সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করে, তবে ভোলায় গড়ে উঠতে পারে নারকেলকেন্দ্রিক কারখানা।