পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে গত ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিজনিত পৃথক দুর্ঘটনায় মোট ২২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করে গত ২৬ জুন বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪১ জনে দাঁড়িয়েছে।

শনিবার (১৬ আগস্ট) পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) এ তথ্য  জানিয়েছে। খবর সিনহুয়ার। 

উদ্ধারকারী সংস্থাগুলোর মতে, প্রবল বৃষ্টিপাত, আকস্মিক বন্যা এবং বজ্রপাত খাইবার পাখতুনখেয়া প্রদেশের কিছু অংশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, যার ফলে অনেক নিখোঁজ ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছে।

আরো পড়ুন:

পঞ্চগড়ে রাতভর বর্ষণে স্লুইসগেটের সংযোগ সড়কে ধস

সাগরে লঘুচাপ, ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

বেসরকারি সংস্থা আলখিদমত ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক মুহাম্মদ খালিদ সিনহুয়া বলেন, “বন্যায় গ্রামগুলো ডুবে যাওয়ায় পুরো পরিবার ভেসে গেছে, অন্যদিকে অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসের ফলে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।”

এনডিএমএর মতে, এবারের বর্ষা মৌসুমে খাইবার পাখতুনখেয়া প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেঘ ভাঙনের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় গত দুই দিনে বেশ কয়েকটি এলাকা ভেসে গেছে। 

এনডিএমএ আরো জানিয়েছে, জুনের শেষের দিক থেকে এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলে বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় ২৮৫ জন মারা গেছে। এছাড়া পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশে ১৬৪ জন, দক্ষিণ সিন্ধুতে ২৮ জন এবং উত্তর গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে ২৪ জন মারা গেছে, আরো ৪০ জন মারা গেছে অন্যান্য প্রদেশ এবং ইসলামাবাদে।

নাগরিকদের সতর্ক থাকার, বৃষ্টিপাত এবং বন্যার সময় সতর্কতা অবলম্বন করার এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে অনুরোধ করা হয়েছে। বিশেষ করে পর্যটকদের, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আগামী পাঁচ থেকে ছয় দিন উত্তরাঞ্চলে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

দেশটির আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ২১ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে বেশ কয়েকটি এলাকাকে ইতিমধ্যে দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জেনে জি এম কাদের কাউন্সিল স্থগিত করেন

জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরবিরোধী অংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, গত ২০ মে দলের প্রেসিডিয়াম সভায় ২৮ জুন জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জেনে জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিত করেন। পরে আদালতের নির্দেশে সদস্যপদ ফিরে পেয়ে তাঁরা সম্মেলন আয়োজন করেন। তাই জি এম কাদের আর আইনত চেয়ারম্যান নন।

আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই অভিযোগ করেন।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে দাবি করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আদালতে যাই, আদালত আমাদের সদস্যপদ বহাল করেন ও কাদেরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। আমরা রায় পেয়েছি ৩০ জুলাই। কাউন্সিল হয় ৯ আগস্ট। এই মধ্যবর্তী সময়ে জি এম কাদের আদালতে যাননি। এখন তিনি বাইরে চিল্লাচিল্লি করছেন। সুতরাং বিষয়টি আপনাদের বুঝতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা কাউন্সিল করেছি।’

সম্মেলন আয়োজনে কোনো তড়িঘড়ি বা লুকোচুরি করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। তিনি বলেন, অনৈতিকভাবে জি এম কাদের যে সম্মেলন স্থগিত করেছিলেন, সেই সম্মেলন তাঁরা আবার আয়োজন করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘লাঙ্গল’ এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নম্বর–১২ তাঁরা ব্যবহার করবেন।

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁরা সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেবেন।

জি এম কাদের সম্মেলনের ট্রেন মিস করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন কাদেরবিরোধী অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, কাউন্সিল হয়ে গেছে। এখন আর কোনো আকুতির সুযোগ নেই। তাঁরা পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস ব্যবহার করছেন, এটা অন্যায় করছেন। শিগগির এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাদেরবিরোধীদের কাউন্সিলে জি এম কাদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ৯ আগস্ট কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। আগের কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। তাই আইনত জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান পদের ভিত্তি নেই। তাঁরা মিলেমিশে কাজ করার জন্য জি এম কাদেরকে আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতীয় পার্টির কাদেরবিরোধী অংশের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের সর্বাত্মক সংস্কারে কাজ করেছিলেন। বর্তমানে যে ক্রান্তিকাল চলছে, তার উত্তরণে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব দরকার।

আরও পড়ুননির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি চেয়ে আনিসুল-হাওলাদার কমিটির চিঠি১৩ আগস্ট ২০২৫

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন, শফিকুল ইসলাম, নাজমা আক্তার, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম, মাসরুর মাওলা, সাইদুর রহমান, ইয়াহইয়া চৌধুরী, সরদার শাহজাহান, নুরুল ইসলাম মিলন, লিয়াকত হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, হারুন আর রশিদ, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, মো. ইয়াকুব হোসেন, শেখ আলমগীর হোসেন, নীগার সুলতানা, মো. বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, নাসির উদ্দিন সরকার, হাফেজ মাহমুদুর রহমান, সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, শারমিন পারভীন লিজা, মিজানুর রহমান, তাসলিমা আকবর রুনা, শারমিন আকতার, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

আরও পড়ুনজাতীয় পার্টির নিয়ন্ত্রণ নিতে তৎপর আনিসুল, ঠেকাতে সক্রিয় জি এম কাদের১৩ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ