তিন দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিল শিশু আয়েশা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর লাশ পাওয়া যায় বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত টয়লেটের গর্তে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি আজ শনিবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

কিন্তু ঈদের দিন হওয়ায় ময়নাতদন্ত করার কোনো চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। আবার মরদেহ পচে গেছে বলে হিমঘরেও জায়গা দেয়নি কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত সেখানকার ডোমদের সহায়তায় মরদেহটি লাশকাটা ঘরে রাখা হয়েছে। নিহত আয়েশার চাচা মো.

লালন আক্ষেপ করে বলেন, ‘পচুক, শেষ হয়ে যাক, আমার বাচ্চাকে লাশকাটা ঘরেই রাখতে হবে। এ জন্য গুনতে হবে তিন হাজার টাকা।’

আয়েশা সিদ্দিকা (৪) রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার দীঘলকান্দি গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের মেয়ে। তিনি পেশায় বাসচালক।

গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নিজ বাড়িসংলগ্ন মসজিদের সামনে থেকে আয়েশা নিখোঁজ হয়। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে পাশের বাড়ির একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের গর্ত থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

লাশটি যেখানে পাওয়া গেছে, সেই জায়গার মালিকের নাম সাইদুল ইসলাম। তিনি বাইরে চাকরি করেন; মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসেন। বাড়ি সংস্কারের সময় নতুন একটি বাথরুম নির্মাণ করেন। এর পর থেকে পরিত্যক্ত ওই গর্তে ময়লা–আবর্জনা ফেলা হতো। সেখানেই পাওয়া যায় আয়েশার লাশ।

এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এক কিশোরসহ তিনজনকে আটক করে। এর মধ্যে ওই কিশোরের বাবা ও মা রয়েছেন। আজ দায়ের করা হত্যা মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়েছে।

এদিকে আয়েশার লাশ উদ্ধারের পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পুলিশের কাছ থেকে আটক তিনজনকে ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করার চেষ্টা করেন। এ সময় আরেক পক্ষ তাঁদের বাধা দেয়। এক পক্ষ আবার ওই কিশোরের বাড়িতেও হামলার চেষ্টা করে।

আজ সকালে মেয়েটির স্বজনেরা পুলিশের সঙ্গে লাশ নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে যান। দুপুরে আয়েশার চাচা লালনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, আজ ঈদ বলে লাশের ময়নাতদন্ত করার কেউ নেই। মেডিকেল কলেজের হিমঘরে রাখা হবে, তাতেও আপত্তি। তারা জানিয়েছে, লাশ পচে গেছে। এ লাশ হিমঘরে রাখা যাবে না।

লালন বলেন, লাশ নিয়ে তাঁরা যাবেন কোথায়? শেষ পর্যন্ত ডোমের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তিন হাজার টাকার বিনিময়ে লাশকাটা ঘরে রাখতে সম্মত হয়। দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা শিশু আয়েশা সিদ্দিকার লাশ রেখে বাড়িতে রওনা দেন। তখন ঈদের নামাজ পার হয়ে গেছে। তাঁদের এবার ঈদ হলো না।

আজ দুপুরে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাদী হয়েছেন মেয়ের বাবা। এ মামলায় এক কিশোর ও তার বাবা-মাকে আসামি করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ মঘর

এছাড়াও পড়ুন:

চোখে আলো ফেলা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে কৃষককে হত্যা

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় চোখে টর্চলাইটের আলো পড়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ছুরিকাঘাতে এরশাদ আলী (৩৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত এরশাদ আলী উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খবর পেয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে মানিক মিয়ার মুদিদোকানে যান এরশাদ আলী। এ সময় এরশাদ আলীর চোখে টর্চলাইটের আলো ফেলে বিরক্ত করেন একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সাকিব মিয়া। এ নিয়ে দুজন বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ালে স্থানীয় লোকজন মিটমাট করে দেন। পরে এরশাদ আলীসহ সবাই যে যার মতো বাড়িতে চলে যান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে এরশাদ আলীকে ডেকে নিয়ে আবার কথা-কাটাকাটি ও মারামারিতে জড়ান সাকিব ও তাঁর সঙ্গে আসা কয়েকজন। একপর্যায়ে এরশাদ আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয় লোকজন আহত এরশাদ আলীকে উদ্ধার করে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে অভিযুক্ত সাকিব মিয়াসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।

ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন সরকার বলেন, পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। নিহত এরশাদ আলীর শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা
  • চোখে আলো ফেলা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে কৃষককে হত্যা