একদিকে ঢল, বন্যা, ফসলহানি, বাঁধ ভাঙার কষ্ট। অন্যদিকে অবারিত জলরাশি, শস্যের মাঠ আর অতুল্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের সম্ভার। নিজের কষ্ট আড়াল করে সেই সৌন্দর্যে অতিথিদের ক্লান্তি ভুলায় তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার অধ্যুষিত প্রাকৃতিক লীলাভূমি। ঈদ-পার্বণের ছুটিতে এই হাওরের পাড়ে ছুটে যান পর্যটকরা। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

ঈদুল আজহার ছুটিতে এরইমধ্যে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকা। ঈদের দিন সন্ধ্যার পর থেকে আশেপাশের পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে হাওর এলাকায়। রোববার সকাল থেকেই সেখানে ভিড় বাড়তে থাকে। পর্যটকরা সকাল থেকেই হাউজবোট ও কান্ট্রি বোট চড়ে টাঙ্গুয়ার হাওরের দিকে রওয়ানা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নীল জল দ্যা প্রিমিয়াম হাউজ বোটের মালিক আবিকুল ইসলাম।

এই বোট মালিক আরো জানান, প্রতিটি হাউজবোট একদিন-এক রাতের জন্য ৮০ থেকে এক লাখ টাকায় বুকিং হয়। আর কাট্রি বোটগুলো ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায়।

হাউজবোটগুলো অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন নৌকা। আর কান্ট্রিবোট বলতে দেশীয় সাধারণ ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলোকে বোঝায়।

টাঙ্গুয়ার হাওরসহ অনেকগুলো দর্শনীয় স্থানের সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে তাহিরপুর উপজেলায়। সারা বছরেই এই উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো দেশ-বিদেশের সৌন্দর্য পিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে থাকে।

তবে ঈদের ছুটিতে প্রকৃতিপ্রেমীদের মিলন মেলায় পরিণত হয় টাঙ্গুয়ার হাওর, লাকমা ছড়া, নিলাদ্রি লেক, বারিক্ক্যার টিলা ও যাদুকাটা নদী। এখানে ঈদ উৎসব ছাড়াও ছুটির দিনে আসেন সহস্রাধিক পর্যটক। এই ঈদেও পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানায়, ঈদের ছুটি কাটাতে পর্যটকদের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য এ উপজেলায় রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর, ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প নীলাদ্রী লেক, বারিক্ক্যা টিলা, লাকমাছড়া, রূপের নদী যাদুকাটা ও জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান। এ ছাড়াও রয়েছে ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে ট্যাকেরঘাট পাহাড়ি ছড়া, রাজাই ঝর্ণা, লালঘাট ছড়া, লালঘাট ঝর্ণা।

তারা বলেন, পর্যটকরা সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে নৌকায় উঠে দুপুর ২টার মধ্যে টাঙ্গুয়ার হাওরে পৌঁছাতে পারেন। সেখানে হাওরের সচ্ছ পানিতে গোসল করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া দুপুরের খাবারের বন্দোবস্ত রয়েছে হাওরেই। বিকেলে নৌকা নিয়ে ট্যাকেরঘাট নীলাদ্রি লেকে ঘোরার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া নিরাপদ রাত্রিযাপন করতে পারবেন হাওরেই। 

নীলাদ্রী লেক থেকে পায়ে হেঁটেই সীমান্তের ছোট ছোট পাহাড়ে উঠে সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় মেঘালয়ের। এ ছাড়াও হাতে সময় থাকলে নীলাদ্রীর পাড়ে থাকা মোটরসাইকেলে করে বারিক্ক্যাা টিলা, রূপের নদী যাদুকাটা ও শিমুল বাগানসহ সবকটি পর্যটনস্পট ঘুরা যায় সহজেই।

তাহিরপুর ইউএনও আবুল হাসেন বলেন, তাহিরপুরে সারা বছরেই পর্যটক আসেন। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। পর্যটকদের উপস্থিতি আরও বাড়বে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ ট ঙ গ য় র হ ওর ট ঙ গ য় র হ ওর স ন দর য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১০ দিনের লম্বা ছুটি পেয়েছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। ছুটি উপভোগ করতে এ সময় অনেকেই বেড়ানোর পরিকল্পনা করেন। পর্যটকদের সেই পরিকল্পনা সার্থক এবং আনন্দময় করতে সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ করেছেন রাঙামাটির পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাদের ধারনা, টানা ছুটিতে পর্যটকদের আগমন বাড়বে। 

পাহাড় ও হ্রদঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙামাটি বরাবরই পছন্দের তালিকায় থাকে পর্যটকদের। ভ্রমণপিপাসুরা যান্ত্রিক শহরের ক্লান্তি দূর করতে এখানে ছুটে আসেন। জেলার সাজেক ভ্যালি, ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই হ্রদ, পলওয়েল পার্ক, আরণ্যক ও সুবলং ঝরনাসহ মনোমুগ্ধকর সব পর্যটন স্পটগুলো মুখরিত হয়ে উঠবে পর্যটদের উপস্থিতিতে। 

টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঝরনাগুলো তাদের যৌবন ফিরে পেয়েছে। বর্তমানে যেসব পর্যটক রাঙামাটিতে অবস্থান করছেন তাদের অনেকেই ঝরনা দেখতে যাচ্ছেন।

আরো পড়ুন:

তিন শর্তে খুলল রুমা ও থানচির পর্যটন

এভারেস্ট দিবস
এ দেশে যে প্রশ্ন শুনতে হয় ‘এভারেস্টে উঠলে কী হয়?’ 

রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে ঝুলন্ত সেতু। ইতোমধ্যে ঝুলন্ত সেতু এবং এর আশপাশ রঙ করেছে কর্তৃপক্ষ। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যারা কাপ্তাই হ্রদে যাবেন তাদের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে ট্যুরিস্ট বোট ব্যবসায়ীরা।

রাঙামাটি পর্যটন নৌযান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, “পর্যটক বরণে আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ। বোটগুলো সংস্কার, রঙ করাসহ সব কাজ শেষ। আমরা এখন পর্যটকদের জন্য অপেক্ষা করছি।”

জেলার আরেক অন্যতম বিনোদন স্পট পলওয়েল পার্কও প্রস্তত পর্যটক বরণে। পুরো পার্ক নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে পার্কের একমাত্র ঝুলন্ত সেতুটিও। 

পার্কটির দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান বলেন, “আমাদের ১১টি কটেজ আছে। যেখানে ৩৬ জন থাকতে পারেন। ৮ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত আমাদের কটেজগুলো শতভাগ বুকিং রয়েছে।”

হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ বলেন, “টানা ছুটির কারণে এবার রাঙামাটিতে ভালো পর্যটকের সমাগম হবে। এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভালো। সবমিলে এবারের ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসবেন বলে আশা করছি।” 

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে হোটেলগুলোর ৮০ ভাগ পর্যন্ত অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।”

পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, “আমাদের হোটেল-মোটেল মিলে ৮৭টি রুমে ১৭০ জন থাকতে পারেন। ৯ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ৮০ ভাগ রুম অগ্রিম বুকিং আছে।”

ঢাকা/শংকর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঈদের ছুটি কাটাতে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ভিড় বাড়ছে
  • ফাটল-ধসে বিপর্যস্ত মাধবকুণ্ড, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে লাল পতাকা
  • দর্শণার্থীদের পদভারে মুখর রাঙামাটি
  • খাগড়াছড়িতে হোটেল-মোটেল খালি, ভিড় রেস্তোরাঁ ও পর্যটনকেন্দ্রে
  • কাঙ্ক্ষিত পর্যটক নেই কুয়াকাটায়
  • পাহাড়, নদী ও লেকের অপার সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর
  • পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি
  • ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটক টানতে ছাড়ের প্রতিযোগিতা 
  • তিন শর্তে খুললো রুমা ও থানচি