ভারতীয় বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতি গৌতম আদানি সর্বশেষ ২০২৪–২৫ অর্থবছরে মোট ১০ কোটি ৪১ লাখ রুপি বেতন পেয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। তবে পারিশ্রমিকের দিক থেকে তিনি ভারতের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের তুলনায় ঢের পিছিয়ে রয়েছেন। এমনকি নিজস্ব মালিকানাধীন আদানি শিল্পগোষ্ঠীর কয়েকজন শীর্ষ নির্বাহীর চেয়েও তাঁর বেতন কম। অর্থাৎ কোম্পানির চেয়ারম্যান তথা মালিক হয়েও তিনি গ্রুপের শীর্ষ নির্বাহীদের চেয় কম বেতন পান কিংবা নেন।

আদানি গ্রুপের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সে দেশের গণমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এই সংবাদ পরিবেশন করেছে। ভারতের অর্থবছর হচ্ছে আগের বছরের ১ এপ্রিল থেকে পরের বছরের ৩১ মার্চ।

পবন মুঞ্জাল, এমডি ও সিইও, হিরোমোটো করপোরেশন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

১১ মাসে ২৮ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয়

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা এখনো দেশে আয় পাঠাচ্ছেন। চলতি মাসের প্রথম ৩ দিনে দেশে এসেছে ৬০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৭ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। এর ফলে চলতি অর্থবছরের প্রায় ১১ মাসে (জুলাই–মে) প্রবাসী আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় এসেছিল ২১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে ৬ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার বেশি প্রবাসী আয় এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, প্রবাসী আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ এখন ২০ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। এর আগে গত মে মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৯৭ কোটি ডলার প্রবাসী আয় দেশে পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। গত মার্চে; অর্থাৎ রোজার ঈদের সময় প্রবাসীরা ৩২৯ কোটি ডলার প্রবাসী আয় দেশে পাঠিয়েছিলেন। যদিও পরের মাসে; অর্থাৎ এপ্রিলে তা কমে নেমে আসে ২৭৫ কোটি ডলারে। তবে সার্বিকভাবে প্রবাসী আয়ের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে।

ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রবাসী আয়ের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ডলারের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করবে। অবৈধ পথে অর্থ পাঠানোর বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ এবং বৈধ পথে প্রবাসী আয় প্রেরণকে উৎসাহিত করতে নানা প্রণোদনা প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে। সাধারণত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো বড় ধর্মীয় উৎসব সামনে রেখেও প্রবাসীরা বেশি পরিমাণে অর্থ দেশে পাঠিয়ে থাকেন। দেশে বসবাসকারী পরিবারের সদস্যরা যাতে আনন্দে ঈদ উদ্‌যাপন করতে পারেন, সে জন্য এই সময়ে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি অর্থ পাঠান প্রবাসীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ভালো পরিমাণে প্রবাসী আয় আসবে বলে ব্যাংকাররা আশা করছেন।

প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংক খাতে ডলারের যে সংকট চলছিল, তা অনেকটা কেটে যাচ্ছে বলে মনে করেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, তা-ও কিছুটা কমে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে। তবে খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা দামে।

দেশে গত বছরের আগস্টে চাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর টানা ৭ মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁরা পাঠান প্রায় ২৫৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। এর আগে জানুয়ারিতে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় ৩ শতাংশ বেশি আসে।

প্রবাসী আয় হলো দেশে মার্কিন ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না বা কোনো দায় পরিশোধ করার দরকার পড়ে না। অন্যদিকে রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। এ ছাড়া বিদেশি ঋণ পরিশোধেও ডলারের প্রয়োজন হয়। সার্বিকভাবে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের রিজার্ভ বা মজুত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পণ্য রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ে ভর করে বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে উন্নতি
  • আবারও নীতি সুদহার কমাল ভারতের শীর্ষ ব্যাংক আরবিআই
  • ১১ মাসে ২৮ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয়