ঈদের তৃতীয় দিন কুয়াকাটা পর্যটকে মুখর
Published: 9th, June 2025 GMT
ঈদুল আজহার প্রথম ও দ্বিতীয় দিন আশানুরূপ পর্যটক ছিল না সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে। তবে সেই চিত্রে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।
সোমবার (৯ জুন) সকাল থেকেই সৈকতে পর্যটক সমাগম বাড়তে শুরু করেছে। ফলে হতাশা কেটেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। বিক্রি বেড়েছে সব দোকানে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পর্যটক কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার সকালে পর্যটকদের সৈকতের জিরো পয়েন্টের বালিয়াড়িতে হই হুল্লোড়ে মেতে থাকতে দেখা গেছে। অনেকেই সমুদ্রের পানিতে গা ভাসিয়েছেন। অনেকে ফুটবল খেলে এবং প্রিয়জনের হাত ধরে ঘুরে দেখছিলেন সৈকতের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত। পর্যটকদের ঘোড়া, ওয়াটারবাইক ও মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। তাদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ, নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে সমুদ্র সৈকতে।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়ির বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে স্থানীয়দের ভিড়
পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি
রাজশাহী থেকে আসা নাহিদ-লামিয়া দম্পতি বলেন, “রবিবার (৮ জুন) রাত ৩টায় কুয়াকাটা এসে পৌঁছেছি। রাতে আর ঘুমাতে পারিনি। সকাল সকাল সৈকতে এসেছি। সমুদ্রে সাঁতার কাটতে পেরে খুব আনন্দ লাগেছে।”
শরীয়তপুর থেকে আসা রূপম উদ্দিন বলেন, “বন্ধুরা মিলে সৈকতে বেড়াতে এসেছি। এখানের সবকিছু আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশেষ করে উন্মুক্ত সৈকতে ফুটবল খেলা এবং সমুদ্রের পানির গর্জন আমাদের বিমোহিত করেছে।”
ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটা (টোয়াক) এর সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, “ঈদের প্রথম দিন ও দ্বিতীয় দিন খুব কম সংখ্যক পর্যটক ছিল কুয়াকাটায়। শনিবার বিকেল থেকে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। আশা করছি, কয়েক লাখ পর্যটকের আগমন ঘটবে সৈকতে।”
তিনি বলেন, “আমরা ট্যুর অপারেটর সদস্যরা গতকাল সৈকত এলাকায় ঘুরেছি এবং পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তাপ চন্দ্র রায় বলেন, “পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমাদের টিম নিয়মিত টহল দিচ্ছে। সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কাজ করছে। পাশাপাশি নৌ পুলিশ ও থানা পুলিশের সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছে। আশা করছি, পর্যটকরা নিরাপদে তাদের ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ রমণ পর যটক আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে হোটেল-মোটেল খালি, ভিড় রেস্তোরাঁ ও পর্যটনকেন্দ্রে
নদী, পাহাড় ও ঝরনা দেখতে পর্যটকদের পছন্দের জায়গা খাগড়াছড়ি। রাঙামাটির সাজেকে যেতে হয় খাগড়াছড়ি দিয়েই। সাজেকে যাওয়ার পর্যটক যথেষ্ট থাকলেও খাগড়াছড়ির হোটেল-মোটেলগুলো প্রায় খালি পড়ে আছে। এর ফলে হোটেল-মোটেলমালিকসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বাইরে থেকে পর্যটক না আসায় পিকআপ আর চান্দের গাড়ির বুকিং নেই বললেই চলে।
জিপ মালিক সমিতির লাইনম্যান সৈকত চাকমা বলেন, আজ রোববার সকালে সাজেকে গাড়ি গেছে মাত্র ২১টি। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা বেশ কম। আগামীকাল সোমবার বুকিং আছে ৭০টি গাড়ির। গত ঈদের ছুটিতে পাঁচ শর বেশি গাড়ি বুকিং ছিল।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫টি হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস আছে। দুই–তিনটা হোটেল-মোটেল সম্পূর্ণ বুকিং হলেও বাদবাকিগুলোয় এখনো কোনো বুকিং নেই।
শহরের শাপলা চত্বরের পাশে গ্রিন ভ্যালি হোটেলের ব্যবস্থাপক রহিত ত্রিপুরা বলেন, তাদের হোটেলে ১০০টি কক্ষ আছে, তবে বুকিং হয়েছে মাত্র ২০টি।
খাগড়াছড়ি হোটেল গাইরিংয়ের ব্যবস্থাপক প্রান্ত ত্রিপুরা বলেন, তাদের সব কটি কক্ষ ১৫ জুন পর্যন্ত বুকিং আছে।
হোটেল অরণ্য বিলাসের ব্যবস্থাপক আহম্মদ রশিদ বলেন, তাঁদের ৪০ শতাংশ বুকিং আছে। বাকি কক্ষগুলো খালি অবস্থায় আছে। পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলেই ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছেন তাঁরা। মূলত খাগড়াছড়িতে বেড়ানোর জায়গা কম হওয়ায় পর্যটকেরা আসেন না।
হোটেলগুলোয় বুকিং না থাকলেও খাগড়াছড়ির পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় ভিড় দেখা গেছে। আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক সোহেল ত্রিপুরা বলেন, ঈদের দিন দেড় হাজারের মতো দর্শনার্থী এসেছিলেন। তবে বেশির ভাগই স্থানীয় লোকজন। আজ দর্শনার্থী আরও বাড়তে পারে।
মাটিরাঙ্গা থেকে পরিবার–পরিজন নিয়ে বেড়াতে এসেছেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন সবাই বেড়াতে যেতে চাই। যেহেতু বয়স্ক ও ছোট ছোট বাচ্চা আছে, দুটি পিকআপ ভাড়া করে ৩১ জন দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরতে এসেছি।’
খাগড়াছড়ি শহরের স্বপ্নচূড়া রেস্টুরেন্টের মালিক নেইম্রা মারমা বলেন, অনেকে ক্রেতা আসছেন। ক্রেতা সামলাতে তাঁদের হিমশিম অবস্থা। খাগড়াছড়ির অন্যতম রেস্তোরাঁ সিস্টেমের কর্মচারী আচিং মারমা বলেন, তাঁদের রেস্টুরেন্টে ঈদের দিন থেকে পর্যটকসহ স্থানীয় লোকজনের ভিড় আছে। আগামী কয়েক দিনের অর্ডার আছে। তাঁদের রেস্তোরাঁয় পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধরনের খাবারের ব্যবস্থা আছে। অগ্রিম অর্ডার দিলে যেকোনো ধরনের খাবার রান্না করে দেন তাঁরা।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটন স্পটগুলোয় ২৪ ঘণ্টাই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।