কক্সবাজারে সৈকতে ভেসে যাচ্ছিলেন বন্ধু, বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারালেন যুবক
Published: 9th, June 2025 GMT
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে মো. রাজিব (৩০) নামের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল চারটার দিকে পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে গোসলে নামেন রাজিব। হঠাৎ এক বন্ধু স্রোতের টানে ভেসে যেতে থাকলে তাঁকে উদ্ধারে এগিয়ে যান রাজিব। এরপর তিনিও স্রোতে তলিয়ে যান।
দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজির পর রাত ১২টার দিকে সৈকতের কবিতা চত্বর পয়েন্টে (লাবনী পয়েন্টের আধা কিলোমিটার উত্তরে) রাজিবের মরদেহ ভেসে ওঠে।
রাজিব চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানহাট বড়পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় গ্রাফিক ডিজাইনার ছিলেন। চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় একটি দোকানে কাজ করতেন। ঈদের ছুটিতে বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী মাহবুব আলম বলেন, রোববার বিকেলে রাজিবসহ পাঁচ বন্ধু সাগরের পানিতে গোসল করতে নামেন। এক বন্ধু স্রোতে ভেসে যেতে থাকলে রাজিব তাঁকে বাঁচাতে ছুটে যান। এরপর আর ফিরে আসেননি। ধারণা করা হচ্ছে যে রাজিব সৈকতের নিচে সৃষ্ট গুপ্ত খালে আটকা পড়েছিলেন।
সম্প্রতি লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলি পয়েন্টে বেশ কয়েকটি গুপ্ত খাল বা চ্যানেলের সৃষ্টি হয়েছে। এসব জায়গায় লাল পতাকা দিয়ে সতর্কতা জারি করা হলেও অনেকেই তা মানছেন না।
ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসছেন। হোটেলমালিকেরা জানান, ৯০ শতাংশ পর্যটক সমুদ্রে গোসলে আগ্রহী। কিন্তু তাঁরা সতর্কতা না মানার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।
সৈকতের কলাতলী থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছেন বেসরকারি একটি সংস্থার ২৭ জন লাইফগার্ড। তবে অবশিষ্ট ১১৫ কিলোমিটার সৈকত এলাকায় কোনো উদ্ধারকর্মী নেই।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স কত র
এছাড়াও পড়ুন:
সুশান্তের মৃত্যু যেভাবে পাল্টে দিয়েছে রিয়ার জীবন
কথা ছিলো সুখে-দুখে একসঙ্গে থাকবেন দুইজন। দুইজন মিলে সাজাবেন নিজেদের সংসার। কিন্তু সুশান্ত সিং রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে রিয়া চক্রবর্তীর স্বপ্নেরও মৃত্যু হয়।
মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হয়েছিল, সুশান্ত সিংহ রাজপুত আত্মহত্যা করেননি। তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। সুশান্তকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দিয়েছেন প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী। প্রয়াত অভিনেতার পরিবার এবং অনুরাগীদের এমনই দাবির প্রেক্ষিতে মিডিয়ার প্রচারণা ছিল তুঙ্গে।
সুশান্তের বাবা ও বোনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিনেত্রী রিয়া এবং তার ভাই শৌভিক চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করেছিল স্থানয় পুলিশ। পরে আদালতে মামলা ওঠার পর তাদের জেলে পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন:
ঈদ স্মৃতি
গরুর সঙ্গে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরতাম
নিজেকে দীপিকার প্রেমিক দাবি করে আলোচনায় মুজম্মেল
সে সময় এ-ও শোনা গিয়েছিল, রিয়া নিয়মিত মাদক সরবরাহ করতেন সুশান্তকে। কিন্তু রিয়া বার বার বলার চেষ্টা করেছিলেন, তিনি কোনোভাবেই সুশান্তের মৃত্যুর ব্যাপারে জড়িত নন। এমনকি সুশান্তকে মাদক সরবরাহ করার নেপথ্যেও তার হাত ছিল না
দীর্ঘ পাঁচ বছর তদন্ত চলে। এরপরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাদের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেয়ে। এতে সিবিআই নিশ্চিত করেছে, আত্মহত্যাই করেছিলেন অভিনেতা। তদন্তে অন্য কোনও দিক উঠে আসেনি। ফলে রিয়া এবং তার ভাইয়ের উপর থেকে যাবতীয় চার্জশিট তুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে কাজ কমতে থাকে রিয়ার। তিনি এরপর শুরু করেন ব্যবসা। এই মুহূর্তে প্রায় ৩৮ কোটি টাকার ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন দুই ভাই-বোন মিলে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রিয়া জানান, ‘‘ সুশান্ত আত্মহত্যা করার পরে আমার অভিনয়ের প্রস্তাব আসা বন্ধ হতে থাকে।’’
রিয়া আরও জানান, ‘‘আমার ভাই শৌভিক ৯৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে এমবিএ পড়ার জন্য ভর্তি হয়েছিল। এর কয়েক মাসের মধ্যেই শৌভিককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুই ভাই-বোন মিলে রেডিমেড পোশাকের ব্যবসা শুরু করেন। তাদের ব্র্যান্ডের অভিনবত্ব হল, টি-শার্টে কিছু না কিছু বিশেষ বার্তা থাকে। প্রায় সব কয়টিতে রয়েছে প্রতিবাদের ভাষা। যখন সুশান্ত-কাণ্ডে অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, সেই সময় রিয়া একটি সোয়েট শার্ট পরে যান, যেটিতে পিতৃতন্ত্রকে পায়ের নীচে পিষে দেওয়ার কথা লেখা ছিল। এরপর ধীরে ধীরে সেই ব্যবসা বড় হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩৮ কোটি টাকার বাজার মূল্য তাদের সংস্থার।
ঢাকা/লিপি