বিশ্বে ইসলাম ধর্মের অনুসারী সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে
Published: 11th, June 2025 GMT
সারা বিশ্বে গত এক দশকে ইসলাম ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা অন্য সব ধর্মের সম্মিলিত বৃদ্ধির চেয়েও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ইসলাম এখন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম। পিউ রিসার্চ সেন্টারের নতুন এক গবষেণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত—এই এক দশকের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে।
গত সোমবার পিউ রিসার্চের ‘গ্লোবাল রিলিজিয়াস ল্যান্ডস্কেপ’ শীর্ষক এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ইসলাম ধর্মে এই প্রবৃদ্ধি মূলত প্রাকৃতিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফল। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে ধর্মান্তরের ভূমিকা খুবই সামান্য।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মুসলিমদের সন্তানের সংখ্যা অন্য সব বড় ধর্মের অনুসারীদের তুলনায় বেশি এবং মুসলিমরা তুলনামূলকভাবে কম বয়সী।
গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, খ্রিষ্টধর্ম এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্ম। বিশ্বের মোট প্রায় ২৩০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী। তবে ইসলাম ও খ্রিষ্টধর্মের মধ্যে ব্যবধান দিন দিন কমছে।২০১৫ থেকে ২০২০ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, গড়ে একজন মুসলিম নারী তাঁর জীবনে ২.
গবেষণায় ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের ধর্মীয় অনুপাতে কী পরিবর্তন এসেছে, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, খ্রিষ্টধর্ম এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্ম। বিশ্বের মোট প্রায় ২৩০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী। তবে ইসলাম ও খ্রিষ্টধর্মের মধ্যে ব্যবধান দিন দিন কমছে।
গবেষণার তথ্যমতে, ২০১০ সালের পর থেকে বিশ্বে খ্রিষ্টান জনসংখ্যা প্রায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে।
আঞ্চলিক পরিবর্তন
বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মূলত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেই।
ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে বড় প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে কাজাখস্তান, বেনিন ও লেবাননে। অন্যদিকে ওমান ও তানজানিয়ায় মুসলিমদের অনুপাত কমে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয়ভাবে কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক নেই—এমন মানুষের সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় ৯৭ শতাংশ বেড়েছে।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ধর্মহীন মানুষ বাস করেন চীনে। সেখানে প্রায় ১৩০ কোটি মানুষ কোনো ধর্মের সঙ্গে যুক্ত নন। আরও পরিষ্কার করে বলতে গেলে, তাঁরা কোনো ধর্মের অনুসারী নন।
পিউ রিসার্চের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এখনো ৬০ শতাংশ দেশ ও অঞ্চলে খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ৪০টি দেশে অন্তত ৫ শতাংশ করে কমেছে এবং মাত্র একটি দেশে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যখন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেছেন, সেখানে তিনজন খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করেছেন।পিউ গবেষণা সংস্থা এই কমার একটি কারণ হিসেবে দেখিয়েছে, অনেক মানুষ খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করছেন। তাঁরা যেই ধর্মে বড় হয়েছেন, পরবর্তী সময়ে সেই ধর্ম পরিবর্তন করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছেন। এমন প্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা গণনা করেই পিউ এই বিশ্লেষণ করেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যখন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেছেন, সেখানে তিনজন খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করেছেন।
অন্যদিকে কোনো ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যেখানে ধর্মহীনতা ছেড়ে গেছেন, সেখানে তিনজন ব্যক্তি নতুন করে ধর্মহীন হয়েছেন।
গবেষণায় দেখা যায়, বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মেও ধর্ম গ্রহণের চেয়ে ধর্ম ত্যাগের হার বেশি ছিল।
ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যেখানে যাঁরা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তাঁদের সংখ্যা ধর্মত্যাগী ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি।
ইসলামের প্রবৃদ্ধি
ইসলাম এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। প্রায় ২০০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ।
২০১০ সাল থেকে ইসলাম ধর্মে প্রায় ৩৫ কোটি নতুন মানুষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সংখ্যা খ্রিষ্টধর্মের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি এবং অন্যান্য সব ধর্মের সম্মিলিত বৃদ্ধির চেয়েও বেশি।
ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যেখানে যাঁরা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তাঁদের সংখ্যা ধর্মত্যাগী ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি।বিশ্বে কোনো ধর্মের বিশ্বাসী নন (ধর্মহীন), এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০০ কোটিতে পৌঁছেছে, যা ২০১০ সাল থেকে ২৭ কোটি বেড়েছে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বে ধর্মহীন মানুষের সংখ্যাও অন্যান্য ধর্মের তুলনায় বেশি হারে বেড়েছে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম। এই ধর্মের অনুসারী ১২০ কোটি মানুষ। ২০১০ সাল থেকে এক দশকে এই ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৬০ লাখ বেড়েছে। তবে এই ধর্মের অনুপাত বিশ্ব জনসংখ্যায় অপরিবর্তিত আছে।
শিখ, বাহাইসহ অন্যান্য ধর্মে মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ দশমিক ২ শতাংশ।
বৌদ্ধধর্ম একমাত্র প্রধান ধর্ম, যার অনুসারীর সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় ২০২০ সালে কমে গেছে। এই সময়ের মধ্যে অনুসারী কমেছে ১ কোটি ৮৬ লাখ।গত এক দশকে ইহুদি ধর্মের অনুসারী প্রায় ১০ লাখ বেড়েছে। এই ধর্মের অনুসারী বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ০ দশমিক ২ শতাংশেই রয়েছে।
বৌদ্ধধর্ম একমাত্র প্রধান ধর্ম, যার অনুসারীর সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় ২০২০ সালে কমে গেছে। এই সময়ের মধ্যে অনুসারী কমেছে ১ কোটি ৮৬ লাখ। এই ধর্মের অনুসারীর হার ৫ শতাংশ থেকে কমে ৪ শতাংশ হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অন স র র স খ য প র প তবয স ক খ র ষ টধর ম র ২০২০ স ল র ২০১০ স ল র ২০১০ থ ক র সবচ য জনস খ য একম ত র এক দশক ম এখন
এছাড়াও পড়ুন:
এই ঈদে যে নাটকগুলো আলোচনায় এলো
ঈদে বাংলাদেশ টেলিভিশন [বিটিভি], বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি ইউটিউবে নাটক দেখেন দর্শক। ঈদের সবচেয়ে আলোচিত নাটক ছিল ‘আশিকি’। সিএমভি’র ইউটিউব চ্যানেলে এটি ৮ জুন রাতে প্রকাশ পেয়েছে। যা এরই মধ্যে উঠে এসেছে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ের এক নম্বরে। ইতোমধ্যে নাটকটি মুক্তি তিন দিনের মাথায় অতিক্রম করেছে ৫০ লাখ ভিউ-এর ঘর। ১৩ হাজারের বেশি মন্তব্য যুক্ত হয়েছে ইউটিউব লিঙ্কের নিচে।
এ নাটকে জোভানকে দেখা যাচ্ছে মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে আশিক চরিত্রে। তাঁর বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য শহরে এসে একটি কলেজে ভর্তি হয়। ভালো গান করে, স্বপ্ন দেখে বড় গায়ক হওয়ার। একই কলেজের শিক্ষার্থী ধনীর দুলালী জেস। কলেজে যার প্রভাবের অন্ত নেই। এই জেস চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজনীন নাহার নিহা। নাটকের গল্পে রয়েছে জটিল সব বাঁক। রয়েছে আনন্দ আর বিষাদের অসাধারণ মেলবন্ধন। রয়েছে দুটি গানও। সব মিলিয়ে এবারের ঈদে ‘আশিকি’ যেন মেলো-ড্রামাটিক এক সিনেমার স্বাদ নিয়ে হাজির হয়েছে ইউটিউব পর্দায়। ‘আশিকি’ প্রসঙ্গে এর নির্মাতা জানান, নাটকটির মধ্য দিয়ে অনেকগুলো বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। একজন শিল্পীর স্ট্রাগল এবং সেটি জয়ের গল্প যেমন আছে, তেমনি একজন ধনীর দুলালীর অসাধারণ এক প্রেমের বয়ানও রয়েছে।
প্রযোজক-পরিবেশক এসকে সাহেদ আলী পাপ্পু বলেন, ‘‘আশিকি’ নাটকটি প্রকাশের পর থেকে দর্শক-সমালোচকদের পক্ষ থেকে যে সাড়া ও প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি, সেটি সচরাচর মেলে না। দর্শকরা নাটকটি দেখার পর যে মন্তব্যগুলো করছেন, সেসব পড়লে এমন ভালো কাজ আরও করার আগ্রহ জন্মায়। ধন্যবাদ জানাই পুরো ‘আশিকি’ টিমের প্রতি। কারণ, নাটকটির এই সফলতার পেছনে মূল কারিগর তারাই।’’ ‘আশিকি’ নির্মাণ করেছেন ইমরোজ শাওন। পারভেজ ইমামের চিত্রনাট্যে নাটকটির সিনেমাটোগ্রাফিতে ছিলেন খায়ের খন্দকার।
সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলে ঈদে প্রকাশ হওয়া মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘ক্ষতিপূরণ’ নাটকটিও দর্শক প্রশংসা পেয়েছে। এর মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো দর্শকদের সামনে হাজির হয়েছেন তারকা অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর ছোট বোন মালাইকা চৌধুরী। এবার তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান। নাটকটি ১৪ ঘণ্টায় দশ লাখেরও বেশি দর্শক দেখেছেন।
নাটকটিতে সন্তানের প্রতি মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। সন্তানের জন্য একজন মায়ের ভালোবাসা সব পরিমাপের ঊর্ধ্বে। কোনো কিছু দিয়েই এই ঋণের শোধ হয় না। কেননা, পৃথিবীর সবচেয়ে অমূল্য এই উপহারের যোগ্য কোনো প্রতিদান নেই। এটিও দেখানো হয়েছে নাটকে। এমনি আবেগঘন গল্পকে আরও গভীরতা এনে দিয়েছে আরেফিন রুমির একটি গান। গানটিতে কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন রুমি নিজেই। গানটির গীতিকার রবিউল ইসলাম জীবন। নাটকটির অন্যান্য অভিনয়শিল্পীরা হলেন নাদের চৌধুরী, মনিরা আক্তার মিঠু, রাশেদ মামুন অপু, সুষমা সরকার প্রমূখ।
এ ছাড়াও ঈদে ইউটিউবে প্রকাশ হওয়া সকাল আহমেদের ‘চিফ গেস্ট’, তোমার জন্য ভালোবাসা’, মাসরিকুল আলমের ‘ঘ্রান’, মিতুল খানের ‘কোটিপতি চেয়ারম্যান’, কে এম সোহাগ রানার ‘চাঁদের হাট-২’, জাকারিয়া সৌখিনের ‘প্রিয় প্রজাপতি’, সাজিন আহমেদ বাবুর ‘অশিক্ষিত এমডি’-সহ আরও কয়েকটি নাটকও আছে আলোচনায়।