মুমিনুল হককে দেওয়া বাউন্সারে উইকেট পাবেন হয় তো কল্পনা করেননি ইবাদত হোসেন। উইকেট থেকে সরে মুমিনুল আপারকাট করলেন। বল গেল থার্ড ম‌্যান অঞ্চলে। এনামুল ক‌্যাচ নিয়ে ফেরালেন মুমিনুলকে। 

পেসার ইবাদতের দিনের তৃতীয় উইকেট। এর আগে সাদমান ইসলাম ও মুশফিকুর রহিমকে ফিরিয়েছেন তিনি। দারুণ এক ইনসুইং বলে মুশফিকুরের উইকেট উপচে ফেলেন ডানহাতি পেসার। যে উইকেট পাওয়ার পর তার মুখে ছিল চওড়া হাসি। ইনজুরি কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার পর নিজের উইকেট উদযাপনে স্যালুট দিচ্ছিলেন না দ্রুতগতির এই বোলার।

তবে মিরপুর শের-ই-বাংলায় আজ তাকে দুইবার স‌্যালুট দিতে দেখা গেল। শ্রীলঙ্কা সফরের আগে নিজেদের মধ‌্যে দুই দিনের ম‌্যাচ প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। পুরোনো ছন্দ ফিরে পেয়েছেন বলেই কী পুরোনো উদযাপন ফেরালেন ইবাদত? জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু মুঠোফোনে তাকে পাওয়া যায়নি। 

আরো পড়ুন:

বিসিবি নির্বাচনে সৈয়দ আশরাফুলের ‘আগ্রহ’

তামিমের হুঁশিয়ারি, ‘কখনো আপনাদের সঙ্গে হাত মেলাব না’

পায়ের চোটে দুই বছর বাইরে থাকার পর জাতীয় দলে ফিরেছেন দ্রুতগতির এই বোলার। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ চলাকালীন পায়ের গোড়ালিতে চোট পেয়েছিলেন। এ কারণে বিশ্বকাপসহ এক বছরের বেশি সময় সব ধরনের খেলার বাইরে ছিলেন। চোট পাওয়ার ১৬ মাস পর গত বছর নভেম্বরে জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) দিয়ে মাঠে ফেরেন দ্রুতগতির বোলার। এরপর বিপিএল, ঢাকা লিগ ও ‘এ’ দলের ম্যাচ খেলে পুরোনো ডেরায় ফিরেছেন ডানহাতি পেসার। 

জাতীয় দলে ফিরে তার প্রধানতম চ‌্যালেঞ্জ ছিল ছন্দ পাওয়া। শেষ কয়েকদিনের অনুশীলন ও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলে আসায় চ‌্যালেঞ্জটা ভালোভাবেই উতরে যেতে পেরেছেন। ১১ ওভার হাত ঘুরিয়েছেন। ৩ মেডেনে ২৮ রানের খরচায় পেয়েছেন ৩ উইকেট। উইকেট সংখ‌্যা তার কার্যকরী বোলিংয়ের প্রমাণ দিচ্ছে। তার চেয়েও বেশি ছন্দময় ছিল তার লাইন ও লেন্থ ধরে বোলিং। ব‌্যাটসম‌্যানদের ভুগিয়েছেন। 

বাংলাদেশের পেস বোলারদের নতুন কোচ টেইট। ঈদের ছুটির একদিন পরই টেইটকে নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছিলেন ইবাদত। ইনজুরির আগে লাল ও সাদা বলে সমান্তরালে ইবাদত পারফর্ম করেছেন। সেই ছন্দটাই শ্রীলঙ্কায় উড়াল দেওয়ার আগে পেয়ে গেলেন। এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরার পালা। 

হাঁটুর পাঁচটি আলাদা জায়গায় অস্ত্রোপচার করানো লেগেছে ইবাদতের। ট্রেনার নাথান কেলির দারুণ তত্ত্বাবধানে হয়েছে তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ইবাদত বলেছেন, ‘‘সত‌্যি বলতে আমার ক‌্যারিয়ার ২০২৩ সালের পর থেকে থমকে গেছে। আমার প্রধান লক্ষ‌্য যেখানে বিরতি পড়েছে সেখান থেকেই নতুন করে শুরু করা। আমি প্রত‌্যেকের ভালোবাসা ফিরিয়ে দিতে চাই।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী