করোনা মোকাবিলায় অপ্রস্তুত চট্টগ্রাম, নেই শনাক্তের কিট
Published: 12th, June 2025 GMT
আবারও চোখ রাঙাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কভিড)। চট্টগ্রামে গত তিন দিনে দুই নারীসহ চারজনের শরীরে এ রোগ শনাক্ত হয়েছে। তাদের কেউই বিদেশফেরত নন। কয়েকদিন ধরে করোনা রোগী শনাক্ত হলেও তা মোকাবিলায় প্রস্তুত নয় চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসন। কিট সংকটের কারণে সরকারিভাবে কোনো হাসপাতালেই নেই করোনা শনাক্তের ব্যবস্থা। প্রস্তুত নেই ডেডিকেটেড হাসপাতালও।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা.
চট্টগ্রামে করোনা ডেডিকেটেড ছিল ২৫০ শয্যার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালটি। এখন সেটির অবস্থা খুবই নাজুক। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, যন্ত্রপাতির অভাবে স্বাভাবিক রোগীকেই চিকিৎসা নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় বন্ধ রয়েছে আইসিইউ বিভাগ।
আবারও করোনা রোগী বাড়তে থাকায় চসিকের মেমন-২ হাসপাতালকেও কভিড ডেডিকেটেড হিসেবে প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেও করোনা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। চমেক হাসপাতাল, বিআইটিআইডি, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরটিপিসিআর পরীক্ষা চালু করা হচ্ছে। নগরের বিভিন্ন স্থান ও চসিকের মেমন-২ হাসপাতালে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
জরুরি প্রস্তুতি বৈঠকে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের নানা নির্দেশনা দিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত। এর আগে স্বাস্থ্য বিভাগও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছে।
এ ব্যাপারে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমাদের আতঙ্কিত হলে চলবে না। একসঙ্গে কাজ করলে আগের মতো এবারও সফলভাবে করোনা মোকাবিলা সম্ভব। করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র সচেতনতা। তাই মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অভ্যাস করতে হবে।’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন বলেন, করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল পুরোপুরি প্রস্তুত করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনা মোকাবিলায় নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সরকারি কিট নেই, যা ছিল সেগুলোর মেয়াদ শেষ। তবে কিটের বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে চাহিদাও পাঠানো হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে কিট চলে আসবে। কিট আসার পর সরকারিভাবে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। তবে এখন চট্টগ্রামের বেশকিছু বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি সার্ভিস সেন্টার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেখানে নাগরিকরা ফোন করে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবেন। গতবারের মতো অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে মাস্ক, টিকা ও মেডিকেল সামগ্রী নিয়ে নয়ছয় করতে না পারে সেজন্য নিয়মিত বাজার তদারকি করা হবে।
গত তিন দিনে চট্টগ্রামে যে চারজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এর মধ্যে তিনজনই নগরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। অন্যজন মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের বাসিন্দা। তাদের বয়স ৭৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।
আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।