৪ বছরেও চালু হয়নি ৬৮ লাখ টাকার সেতু, বরাদ্দ নেই সংযোগ সড়কের
Published: 12th, June 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ৬৮ লাখের বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু প্রায় চার বছর ধরে অকেজো পড়ে আছে। অর্থ বরাদ্দের অভাবে মতলব-বাবুরহাট খালের ওপর নির্মিত সেতুটির দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মিত না হওয়ায় এটি চালু করা যাচ্ছে না। ফলে দুই প্রান্তের অন্তত ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাকে ভোগান্তি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় (পিআইও) সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের জুনে মতলব-বাবুরহাট খালের ওপর নিউ হোস্টেল ও চরমুকুন্দি এলাকার মাঝে ৫০ ফুট দীর্ঘ ও ১৪ ফুট প্রশস্ত ওই সেতু নির্মাণ করা হয়। এতে ৬৮ লাখ ৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। সেতুটির নির্মাণে বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় ‘চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই সেতু এলাকায় দেখা যায়, সেতুটির পূর্ব পাশের কিছু অংশ বালু দিয়ে ভরাট করা হলেও পশ্চিম পাশের অংশটি খালি। দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো অকেজো পড়ে আছে সেতুটি। এর দক্ষিণ পাশে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় বয়স্ক, নারী, শিশু ও রোগীদের।
উপজেলার চরমুকুন্দি এলাকার বাসিন্দা জোবায়ের আহম্মেদ বলেন, সেতুটি এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না। এর দুই পাশে ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ১০টি গ্রাম রয়েছে। চরমুকুন্দি, কদমতলী, নবকলস, কলাদী, নিলক্ষী, চরপাথালিয়া, উদ্দমদীসহ মোট ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার লোক আশপাশে বাস করছেন। সেতুটি চালু না হওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে এটির দক্ষিণ পাশে একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার হতে হচ্ছে।
তবে বর্ষায় খালের পানি বাড়লে ওই সাঁকোও পানিতে তলিয়ে যায়। তখন যাতায়াতে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানান নিউ হোস্টেল এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন। তিনি আক্ষেপের সুরে জানান, স্থানীয় লোকজনের দুর্ভোগের বিষয়টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়কে লিখিতভাবে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে ওই সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য কিছু টাকার বরাদ্দ আসে। ওই টাকা ব্যক্তিবিশেষের পকেটে চলে যায়। এ জন্য কাজ হয়নি। ওই কাজের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে নতুন করে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ এলে সেখানে কাজ চালু হবে। তাঁর কার্যালয়ের উদ্যোগে আপাতত দুই লাখ টাকা ব্যয় করে সেতুর পূর্ব পাশের অংশ বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স য গ সড়ক বর দ দ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার
চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিএনপির দুই নেতাকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
চাঁদাবাজি, দখলদারি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই দুজনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান লস্কর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এর মধ্যে মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান লস্করকে চাঁদাবাজির মামলায় গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবদুল মান্নান লস্কর ও আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইমাম হোসেন গাজীকেও দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদের (মানিক) মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেনেছেন। তবে এ ব্যাপারে চিঠি এখনো পাননি। যেকোনো বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটি অন্যান্য নেতার জন্যও একটি বার্তা ও শিক্ষা।