আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছেন দুই বিয়াই
Published: 13th, June 2025 GMT
দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে বিএনপির সার্চ কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে কুমারখালী বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিক এবং সদস্য সচিব লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে। তারা সম্পর্কে বেয়াই।
শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টায় কুমারখালী রেলস্টেশন-সংলগ্ন আব্দুর রশিদ সুপারমার্কেটে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করা হয়। ব্যানার এবং সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির একাংশ। এ সময় বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম শাতিল মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান, সদস্য আবুল কালাম আজাদ, খোন্দকার সামসুউদ্দিন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি নুরুল ইসলাম আনছারকে আহ্বায়ক ও লুৎফর রহমানকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা কমিটি। তিন মাসের এ কমিটি প্রথমে ওয়ার্ড কমিটি এবং পরে ইউনিয়ন কমিটি গঠন করবে। সেই লক্ষ্যে ১১টি ইউনিয়নে ১১টি সার্চ কমিটি, একটি কাউন্সিল কমিটি গঠন করেছেন দুই বিয়াই। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে ত্যাগী নেতাকর্মীকে বাদ দিয়ে ওই দলের নেতাকর্মীকে ঢুকানো হয়েছে কমিটিতে।
বক্তারা বলেন, কাউন্সিল কমিটিতে আহ্বায়কের শ্যালক রাজু আহমেদ বিপ্লবকে প্রধান করা হয়েছে। তিনি কুমারখালী পৌরসভার উচ্চমান হিসাবরক্ষক। পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক মনিরুজ্জামান টুটুল ও কর্মচারী সাইদুল ইসলামকে সদস্য করা হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগের দোসর। দুই বিয়াই দলীয় কোনো কার্যক্রমে অন্য নেতাকর্মীকে ডাকেন না। স্বজন ও পৌরসভার কর্মচারী দিয়ে পকেট কমিটি করেছেন। জেলা কমিটিকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুত আহ্বায়ক ও সার্চ কমিটিসহ সব কমিটি বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলন করা হবে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব লুৎফর রহমান। তাঁর দাবি, অভিযোগকারীদের অনুষ্ঠানে ডাকলেও আসেন না। এখন মনগড়া অভিযোগ করছেন। পরে সমকাল প্রতিনিধিকে সন্ধ্যায় অফিসে এসে বিস্তারিত আলোচনা করার অনুরোধ জানান বিএনপির এই নেতা।
সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি জানেন না জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন। তিনি বলেন, একটি অনুষ্ঠানে আছি। পরে বলা যাবে বিস্তারিত।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত কর ম ক র রহম ন ব এনপ র সদস য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ইরানের
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার জবাব শেষ হয়নি বরং ইসরায়েলের বিরুদ্ধেও ইরানের হামলা ‘চলবে’।
নাম প্রকাশ করেননি এমন একজন কর্মকর্তার বরাতে ফার্স এ তথ্য দিয়েছে। ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের বরাতে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে ইরান ওই অঞ্চলে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।
তেহরানে শুক্রবার পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার জবাবে রাতে ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান। ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩’ নামের এ অভিযানে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা করা হয়। এতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।
অন্যদিকে ইসরায়েলের ইংরেজি পত্রিকা দ্য জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৩ জন আহত হয়েছেন। তেল আবিব ও জেরুসালেমে সতর্কতামূলক সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এছাড়া ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের সমুদ্র উপকূলবর্তী সমতল এলাকায় অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মাঝে একজন ছিলেন ৬০ বছর বয়সী একজন নারী, যাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে, তখন তার শরীরে কোনও প্রাণচিহ্ন পাওয়া যায়নি। এছাড়া ৪৫ বছর বয়সী এক পুরুষকেও উদ্ধার করা হয়, পরে যাকে মৃত ঘোষণা করা হয়, জানিয়েছে এমডিএ।
ইরান ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এ কথা জানিয়েছে।
এক্সে দেওয়া পোস্টে তারা লিখেছে, ‘ইরানের ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার বিষয়টি শনাক্ত হওয়ার পর-ই বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ার্নিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে।’ সেখানে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী হামলার উৎস শনাক্ত করছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী উৎসকে লক্ষ্য করে প্রতিরোধমূলক অভিযানে নামছে। তবে, ইসরায়েলের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তথা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘শতভাগ দুর্ভেদ্য না’ উল্লেখ করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, তারা যেন সমস্ত নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলে।
এর আগে ইরানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় নজিরবিহীন বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার ভোরে বিভিন্ন অঞ্চলে একাধারে চালানো হামলায় দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর অন্তত পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি ও রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি।
জবাবে অন্তত ১০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে পাল্টা হামলা চালায় ইরান। শুক্রবার রাতে চালানো ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩’ নামের ওই অভিযানে ইসরায়েলের তেল আবিবে বিস্ফোরণের শব্দ ও ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। পরপর দুই দফায় ইসরায়েলে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এ সময় সাইরেন বেজে ওঠে এবং বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
এর আগে ইসরায়েলে দফায় দফায় হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত রাজনীতিক আলি শামখানি। অন্তত ২০০ যুদ্ধবিমান দিয়ে চালানো ইরানের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ হামলায় প্রাণ গেছে ছয় পরমাণু বিজ্ঞানীরও। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনা। ভোর থেকে দিনভর দফায় দফায় এ হামলা হয়।
বেসরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, হামলায় নারী-শিশুসহ অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন ৩২০ জন। এটাকে ‘ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে বর্ণনা করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। জাতিসংঘকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেন, নিরাপত্তা কাউন্সিলের উচিত বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসা।
ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষাপটে গতকাল শুক্রবার রাতেও ইরানে হামলা অব্যাহত রাখে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনা ও ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণের স্থানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।