ঈদে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে এসে ফুফাত ভাইয়ের ধর্ষণের পর প্রাণ হারাতে হয়েছে ১০ বছরের শিশুকে। তার মরদেহ পুকুরে ফেলে দিয়ে নিখোঁজ হওয়ার খবর প্রচার করে ওই ফুফাত ভাই। কিন্তু পুলিশের নিবিড় তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে এসেছে।

ফুফাত ভাই নাজমুস সাকিব ওরফে নয়নকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নয়ন পাশের উপজেলা মনিরামপুরে কাওমী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। তিনি ঝিকরগাছা উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের ইলিয়াস রহমানের ছেলে।

আর নিহত শিশুর নাম সোহানা আক্তার (১০)। সে ঝিকরগাছা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে এবং বায়সা-চাঁদপুর মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। রবিবার (৮ জুন) পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আরো পড়ুন:

কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভাতিজার বিরুদ্ধে চাচিকে হত্যার অভিযোগ

মাঠে পড়ে ছিল স্ত্রীর মরদেহ, গাছে ঝুলছিল স্বামীর লাশ

ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী জানান, ৭ জুন ঈদের দিন সোহানা হাড়িয়া গ্ৰামে ছোট ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। এর কিছুক্ষণ পর তার সাত বছরের ভাই বোনের পিছু পিছু ফুফু বাড়িতে যায়। এদিন দুপুরে নয়ন মামাত ভাইকে মামা বাড়ি দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। এসে দেখে নয়নের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া বোন তন্বী ঘুমিয়ে আছে। আর সোহানা উঠানে দোলনায় খেলছে।

জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন পুলিশকে জানায়, এ সময় পরিবারের আর কোনো সদস্য বাড়িতে ছিল না। এ সুযোগে তিনি সোহানাকে জাপটে ধরে তার রুমে নিয়ে যায়। সেখানে সোহানার গলা ও মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে সোহানা শ্বাসরোধে মারা যায়। এরপর নয়ন মৃতদেহটি বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে আসে।

পুলিশ আরো জানায়, নিজের অপরাধ ঢাকতে নয়ন এরপর তার বোন তন্বীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে মিথ্যা গল্প সাজাতে থাকে। সোহানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায়। পরে তারা দুজন মিলে সোহানার বাড়িতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার খবর জানায়।

বিকেলে খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে বাড়ির পাশের পুকুরে তার মরদেহ ভাসতে দেখা যায়।

সোহানার বাবা আব্দুল জলিল ঝিকরগাছা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার মেয়ের ঠোঁটে জখমের চিহ্ন এবং মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখেছেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। মঙ্গলবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় পুলিশ নয়নকে তাদের বাড়ি থেকে আটক এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে। নয়নকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার রওনক জাহান জানান, ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। 
 

ঢাকা/রিটন/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ঝ করগ ছ র মরদ হ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২

ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। 

বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়। 

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির

বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’ 

বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’

এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।

শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’ 

গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। 
 

ঢাকা/নুর/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে খুন, এরপর...
  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২