মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
Published: 14th, June 2025 GMT
ঈদে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে এসে ফুফাত ভাইয়ের ধর্ষণের পর প্রাণ হারাতে হয়েছে ১০ বছরের শিশুকে। তার মরদেহ পুকুরে ফেলে দিয়ে নিখোঁজ হওয়ার খবর প্রচার করে ওই ফুফাত ভাই। কিন্তু পুলিশের নিবিড় তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে এসেছে।
ফুফাত ভাই নাজমুস সাকিব ওরফে নয়নকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নয়ন পাশের উপজেলা মনিরামপুরে কাওমী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। তিনি ঝিকরগাছা উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের ইলিয়াস রহমানের ছেলে।
আর নিহত শিশুর নাম সোহানা আক্তার (১০)। সে ঝিকরগাছা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে এবং বায়সা-চাঁদপুর মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। রবিবার (৮ জুন) পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আরো পড়ুন:
কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভাতিজার বিরুদ্ধে চাচিকে হত্যার অভিযোগ
মাঠে পড়ে ছিল স্ত্রীর মরদেহ, গাছে ঝুলছিল স্বামীর লাশ
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী জানান, ৭ জুন ঈদের দিন সোহানা হাড়িয়া গ্ৰামে ছোট ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। এর কিছুক্ষণ পর তার সাত বছরের ভাই বোনের পিছু পিছু ফুফু বাড়িতে যায়। এদিন দুপুরে নয়ন মামাত ভাইকে মামা বাড়ি দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। এসে দেখে নয়নের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া বোন তন্বী ঘুমিয়ে আছে। আর সোহানা উঠানে দোলনায় খেলছে।
জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন পুলিশকে জানায়, এ সময় পরিবারের আর কোনো সদস্য বাড়িতে ছিল না। এ সুযোগে তিনি সোহানাকে জাপটে ধরে তার রুমে নিয়ে যায়। সেখানে সোহানার গলা ও মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে সোহানা শ্বাসরোধে মারা যায়। এরপর নয়ন মৃতদেহটি বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে আসে।
পুলিশ আরো জানায়, নিজের অপরাধ ঢাকতে নয়ন এরপর তার বোন তন্বীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে মিথ্যা গল্প সাজাতে থাকে। সোহানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায়। পরে তারা দুজন মিলে সোহানার বাড়িতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার খবর জানায়।
বিকেলে খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে বাড়ির পাশের পুকুরে তার মরদেহ ভাসতে দেখা যায়।
সোহানার বাবা আব্দুল জলিল ঝিকরগাছা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার মেয়ের ঠোঁটে জখমের চিহ্ন এবং মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখেছেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। মঙ্গলবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় পুলিশ নয়নকে তাদের বাড়ি থেকে আটক এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে। নয়নকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার রওনক জাহান জানান, ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
ঢাকা/রিটন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ঝ করগ ছ র মরদ হ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট এলাকায় আশরাফুর রহমান (১৪) নামের এক কিশোর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
আশরাফুর রহমান ওই এলাকার মিজানুর রহমানের একমাত্র ছেলে। সে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সীতাকুণ্ডে এই প্রথম একজন মারা গেল।
আশরাফুর রহমানের দাদা এম এ আলীম আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার তাঁর নাতির জ্বর আসে। সামান্য ব্যথাও ছিল। জ্বর কমছে না দেখে রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর আশরাফুরকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে সে মারা যায়। দুপুরে মডেল মসজিদ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ফকিরহাট নলুয়া দিঘি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আশরাফকে।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালের দায়িত্বগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কিশোর ভালো ছিল। আজ ভোর চারটার দিকে তার পাতলা পায়খানা ও খিঁচুনি হয়। এরপর তারা দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে কিশোরটি মারা যায়।
সীতাকুণ্ডে আজ এক দিনেই ৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন।