যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত বৈঠক রাজনীতিতে কিছু প্রশ্ন তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, আগামী রাজনীতির স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য এবং দলগুলোর অস্বস্তি দূর করতে একান্ত বৈঠকের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত জাতির সামনে উপস্থাপন করা উচিত।

আজ রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ দায়িত্বশীলদের সঙ্গে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় চরমোনাই পীর এ কথা বলেন। বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছে, প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠক দেশের রাজনীতিতে কিছু সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এই বৈঠক রাজনীতিতে একধরনের অস্বস্তিও তৈরি করেছে। বিশেষত, দুই পক্ষের প্রতিনিধিসহ বৈঠকের পর দুই নেতার একান্ত বৈঠক রাজনীতিতে কিছু প্রশ্ন তৈরি করেছে। আগামী রাজনীতির স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য এবং দলগুলোর অস্বস্তি দূর করতে একান্ত বৈঠকের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত জাতির সামনে উপস্থাপন করা উচিত বলে মনে করে ইসলামী আন্দোলন।

চরমোনাই পীর বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি বহুদলীয় রাজনীতি। বিগত ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে দেশের বহুসংখ্যক রাজনৈতিক সংগঠন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অংশ নিয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণে সবাইকে সমান গুরুত্ব ও মর্যাদা দেওয়া নৈতিক কর্তব্য। লন্ডন বৈঠকের চরিত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবমূল্যায়নের ধারণা জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচন আয়োজনের সময় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নানা রকম দাবি থাকা সত্ত্বেও সব উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টা ঈদের আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে একটি সংক্ষিপ্ত সময়সীমা ঘোষণা করেছিলেন।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে যে সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে, তা একটি একান্ত বৈঠকের পর পুনর্বিবেচনা করার যৌথ ঘোষণা দেওয়া রাজনীতিতে অস্বস্তি তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেন সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, ‘সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি নির্মাণের স্বার্থেই এ অস্বস্তি দূর করা উচিত। নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার ও পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করছে ইসলামী আন্দোলন। নির্বাচনের ডামাডোলে সংস্কার ও বিচার যাতে আড়াল না হয়, সেদিকে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এখন দেশকে ভবিতব্য সব স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করতে সাংবিধানিক সংস্কারে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, সংসদীয় কমিটির প্রধান বিরোধী দল থেকে দেওয়াসহ স্বৈরতন্ত্র প্রতিরোধে যেসব সতর্কতামূলক আইনি প্রতিবন্ধকতা প্রস্তাব করা হয়েছে, তাকে বিএনপি সমর্থন করবে বলে আশা করছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চরম ন ই প র র জন ত ক দলগ ল র ইসল ম ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

থানায় হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার আহ্বান আইজিপির

থানায় জনগণকে হয়রানিমুক্ত সেবা দিতে পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

আইজিপি বলেন, “থানায় এসে কেউ যেন অপমানিত না হয়, থানার দরজা যেন মানুষের জন্য খোলা থাকে। থানার পরিবেশ যেন হয় সাহচর্যের, আতঙ্কের নয়। থানাই হোক ন্যায়বিচারের প্রথম ঠিকানা।”

আইজিপি বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজের এর সম্মেলন কক্ষে ‌‘থানায় হয়রানিমুক্ত ও আইনগত সার্ভিস ডেলিভারি প্রদানের মাধ্যমে জনআস্থা পুনরুদ্ধারে পুলিশের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

লোহাগড়ায় ট্রাক চাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত

সুনামগঞ্জে পিকআপের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু

পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এর ভারপ্রাপ্ত রেক্টর এস এম রোকন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সিনিয়র ডাইরেক্টিং স্টাফ (ট্রেনিং) ড. এ এফ এম মাসুম রব্বানী, পিবিআইয়ের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোস্তফা কামাল, ডিআইজি (প্রশাসন) কাজী মো. ফজলুল করিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাহারুল আলম বলেন, “আমাদের পেছনের পথ ছিল অনেক ভুল সিদ্ধান্তের ফলাফল। আমরা মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছি।”

“আমাদের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। আসুন, আমরা প্রতিজ্ঞা করি, আমরা যেন হয়রানিমুক্ত সেবা দেই। থানায় অভিযোগ করতে এসে কেউ যেন অপমানিত না হয়, থানার দরজা যেন মানুষের জন্য খোলা থাকে। আমাদের আচরণ যেন মানবিক হয় এবং আমরা যেন জনমুখী সেবা দিতে পারি।”

পুলিশ প্রধান বলেন, “জুলাই বিপ্লব কেবল একটি ঘটনা প্রবাহ নয়। এটি ছিল ন্যায়, মানবতা ও দায়িত্ববোধের এক জাগরণ। এ জাগরণ আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, সেবাই আমাদের প্রকৃত পরিচয়, জনগণই ক্ষমতার উৎস।”

কর্মশালায় বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) থেকে পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ৫৯ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। 

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ