মাছ ধরার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ১২ জুন সাগরে নেমেছিলেন জেলেরা। গতকাল রোববার সকালে ও গত শনিবার গভীর রাতে চট্টগ্রামের উপকূলে ফিরেছেন অনেকে। গতকাল সকালে নগরের সবচেয়ে বড় মাছের আড়ত ও মৎস্য অবতরণকেন্দ্র ফিরিঙ্গীবাজারের ফিশারিঘাটে গিয়ে দেখা গেছে জেলে ও বিক্রেতার ভিড়। সাগর থেকে ধরে নানা জাতের মাছ নিলামে তোলা হয় এখানে। এর মধ্যে চিংড়ি, লইট্টা, ছুরি, শাপলা, কালো চাঁদা, ফাইস্যা, চেউয়া, পোয়া, রিস্যা ও রুপচাঁদা মাছই বেশি দেখা গেল। ইলিশের পরিমাণ বেশ কম।

কেবল ফিশারিঘাট নয়, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে কর্ণফুলী নদী ও সাগরের ঘাটগুলোতে। এত দিন অলস সময় পার করা জেলেরা এখন ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন মাছ শিকার, আহরণ ও বিক্রির কাজে। ট্রলারভর্তি মাছ ঘাটে এনে খালাসের পর ঠেলাগাড়িতে করে পৌঁছে যাচ্ছে শহরের বাজারে বাজারে। জেলেরা জানালেন, ইলিশ বা বড় মাছ না মিললেও ঝুড়ি ঝুড়ি চিংড়ি, লইট্টা, ছুরি, শাপলা, কালো চাঁদা ও রুপচাঁদা মিলছে জালে। মৌসুমের শুরু হওয়ায় মাছের দামও বেশ ভালো। তাই খুশি জেলেরা।

গতকাল সকালে ফিশারিঘাটে কথা হয় জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। এখন বেশি মাছ না পেলেও সামনে ভালো মাছ উঠবে বলে জেলেদের আশা। তবে এবার নিষেধাজ্ঞা এগিয়ে আনায় অন্তত এক মাস বেশি মাছ ধরার সময় পাচ্ছেন তাঁরা। তাই এবার মাছ বেশি পাবেন বলে মনে করছেন। এর মধ্যে গত তিন দিনে নগরের ঘাটগুলোতে মাছ আসতে শুরু করেছে।

এর আগে মা মাছ রক্ষায় বঙ্গোপসাগরে প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা দিত সরকার। তবে এ বছর ভারতের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমার সঙ্গে মিল রেখে এই সময়সীমা পুনর্বিন্যাস করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, গত ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত, মোট ৫৮ দিন সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগেই সাগরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন চট্টগ্রামের জেলেরা। গত বুধবার থেকেই সাগরের ফিরেছেন জেলেরা। এ তিন দিন ছোট প্রজাতির ১৫-২০ রকমের মাছ উঠছে ঘাটে। এর মধ্যে ইলিশের পরিমাণ ১০ থেকে ২০ শতাংশ।

জেলে ও মৎস্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রত্যাশা অনুযায়ী এখনো মাছ আসছে না ঘাটে। তবে এবার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় বাড়তি সময় পাচ্ছেন জেলেরা। ১০ থেকে ১৫ দিন পর সাগরের পানি বাড়বে। তখন মাছ উঠবে বেশি। গত তিন দিনে তুলনামূলক কম মাছ এসেছে। তারপরও জেলেরা খুশি; কারণ, এবার আগেই সাগরে গেছেন জেলেরা।

আড়তদার ও মৎস্য বিভাগের পরিদর্শনের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম তিন দিনে জেলার ঘাটগুলোতে গড়ে ৫০০ কেজির মতো মাছ উঠেছে। তবে নগরের ঘাটগুলোতে তা ৭০০ থেকে ১ হাজার কেজি। এর মধ্যে লইট্টা, পোয়া, ইলিশ, চিংড়ি, চেউয়াসহ বিভিন্ন মাছ রয়েছে। আহরিত মাছের মধ্যে ইলিশের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩০ ও সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ। এগুলোর ওজন ৩০০ থেকে ৬০০ গ্রাম।

উত্তর চট্টলা উপকূলীয় মৎস্যজীবী জলদাস সমবায় কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি লিটন জলদাস প্রথম আলোকে, এ বছর এখনো তেমন মাছ নেই। সামনে জো আছে। তখন মাছ আসবে। ইলিশ তেমন নেই, তবে লইট্টা মাছ আছে ভালো পরিমাণে। বড় মাছের জন্য আরও ১০ থেকে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকটি ঘাট পরিদর্শন করেছি। মোটামুটি মাছ আসছে। তবে বড় মাছের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন। এবার নিষেধাজ্ঞার সময় এগিয়ে আনায় জেলেরা লাভবান হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ম ণ লইট ট মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’

ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী। 

গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?  

ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”

আরো পড়ুন:

কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী

পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি

কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”

কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ