গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) শিক্ষক, ক্লাস রুম ও ল্যাব সংকট নিরসনসসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

পরে তারা স্মারকলিপি ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সমানে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

আরো পড়ুন:

যবিপ্রবিতে ফিনটেক শিল্পের অগ্রগতি-বিষয়ক সম্মেলন

৯০ দশকের স্মৃতি জাগরণে বাকৃবি টিম উৎসবের ব্যতিক্রমী আয়োজন

এ সময় ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যমের ঠাই নাই’, ‘ভিসি বাংলো ভেতরে, শিক্ষার্থীরা কেন বাহিরে’, ‘এক দুই তিন, আর কত দিন’, ‘একাডেমিক ভবন কই, প্রশাসন জবাই চাই’, ‘ইউজিসি, ছিছিছি’ ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা।

মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি উপাচার্যের কাছে প্রদান করেন। পরে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ আলী তোহা।

মোহাম্মাদ আলী তোহা বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে অন্তবর্তী সরকারের অধীনে রয়েছে। যে সরকার বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জায়গা সমান নজরে দেখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই সময় যদি বিশ্ববিদ্যালয় এত অবহেলা বা বৈষম্যের শিকার হয়, তাহলে পরবর্তীতে অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে হল, ক্লাসরুম ও শিক্ষক সংকট রয়েছে। নেই মেইন গেটও। এগুলো আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। এই মৌলিক অধিকারের জন্য বারবার কেন শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম ছেড়ে রাজপথে আসতে হবে? এতসব সমস্যার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাওয়া যায় না কেন? আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবিগুলো আমলে নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে।”

তিনি আরো বলেন, “এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট অত্যান্ত নিম্নমুখী হয়েছে। বিগত বছরের বাজেটগুলো কি কি খাতে খরচ হয়েছে, তা আমরা জানি না। এসব সংকট ও বাজেটের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবিগুলো পূরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাতদিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হলো। এর মধ্যে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হলে কঠোর আন্দোলন যেতে বাধ্য হবে শিক্ষার্থীরা।”

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী দুর্জয় শুভ, বিএমবি বিভাগের শিক্ষার্থী মঈনুদ্দিন খান সিফাত, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নিঘাত রৌদ্র, ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নূপুর রায় দীপা, নওরীন নীরা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অসমাপ্ত কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। ন্যূনতম ১০০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, একাডেমিক-২ ও অনুষদ ভবনের সম্প্রসারণ করতে হবে; শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন সংকট নিরসনে পর্যাপ্ত হল নির্মাণ করতে হবে। টিএসসি, অডিটোরিয়াম, জিমনেশিয়াম তৈরির কাজ শুরু এবং ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরি, মেডিকেল সেন্টার উন্নয়নে অতিদ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। হল নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দিতে হবে এবং সমস্ত কাজের টেন্ডার সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-প্রত্যেক বিভাগে ন্যূনতম ২০ জন কর্মরত শিক্ষক, পর্যাপ্ত ল্যাব এবং অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিতে হবে এবং শিক্ষকদের জন্য উচ্চশিক্ষায় বিদেশ গমনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে; শিক্ষার্থীদের সব তথ্য, ফলাফল, লেনদেন অনলাইন ভিত্তিক করতে হবে এবং ডিজিটাল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে হবে; বিগত সময়ের দুর্নীতিবাজদের শাস্তির আওতায় আনতে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে এবং লুট হয়ে যাওয়া অর্থ ফেতর আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

এছাড়া দ্রুত সময়ে সমাবর্তনের তারিখ, ছাত্র সংসদ ঘোষণা, রিজেন্ট বোর্ডে চারজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্তকরণ এবং ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

ঢাকা/বাদল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদক ষ প ন

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা

খুলনায় মাত্র আট ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় মনোয়ার হোসেন টগর নামে এক যুবক এবং শনিবার (২ আগস্ট) ভোরে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুরে আল-আমিন সিকদার নামে এক ভ্যানচালক খুন হন। 

দিঘলিয়ায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা
পুলিশ জানায়, শনিবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর নন্দনপ্রতাপ গ্রামে আল-আমিন সিকদার (৩৩) নামে এক ভ্যানচালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আল-আমিন ওই গ্রামের কাওসার শিকদারের ছেলে।

দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম শাহীন বলেন, “আল-আমিনের স্ত্রীর সাবেক স্বামী মো. আসাদুল ঝিনাইদহ থেকে এসে অতর্কিতে তার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর আসাদুল পালিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।”

ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

নগরীতে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
অপরদিকে, শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন সবুজবাগ এলাকায় নিজ বাড়িতে ছুরিকাঘাতে খুন হন মনোয়ার হোসেন টগর (২৫) নামে এক যুবক। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা জামাল হাওলাদারের ছেলে। 

স্থানীয়রা জানান, রাত সোয়া ৯টার দিকে কয়েকজন যুবক টগরের বাড়িতে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা তাকে ছুরিকাঘাত করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার এসআই আবদুল হাই বলেন, “প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হত্যাকারীরা টগরের পূর্ব পরিচিত।  তাদের সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।” 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ