জোটার মৃত্যুতে স্তব্ধ রোনালদো, শোক জানালেন জামাল ভূঁইয়াও
Published: 3rd, July 2025 GMT
মাত্র কিছুদিন আগেই জাতীয় দলের হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলেছেন। নেশন্স লিগ জয়ের উল্লাসে মাতিয়েছেন গোটা দেশ। অথচ আজ সেই সতীর্থ ডিয়োগো জোটা আর নেই। এই খবর কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
বৃহস্পতিবার স্পেনের জামোরা প্রদেশে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন লিভারপুল এবং পর্তুগাল জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড ডিয়োগো জোটা। দুর্ঘটনায় তার ভাই আন্দ্রে সিলভাও নিহত হয়েছেন, যিনি পর্তুগালের ক্লাব পেনাফিয়েলের হয়ে খেলতেন।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’র বরাতে জানা গেছে, জামোরা প্রদেশের সানাব্রিয়া অঞ্চলে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়ে এবং মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলেই দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়।
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে দীর্ঘদিনের প্রেমিকা ও তিন সন্তানের জননী রুতে কারদোসোকে বিয়ে করেছিলেন জোটা। পরিবারের সঙ্গে নতুন জীবনের শুরু উদ্যাপন করতে গিয়েই ঘটে গেল এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বিয়ের ছবি পোস্ট করেছিলেন জোটা ২৮ জুন, আর স্ত্রী রুতে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন বুধবার। এর পরপরই এলো জোতার মৃত্যুসংবাদ।
জোটার মৃত্যুতে শোকাহত রোনালদো সামাজিক মাধ্যমে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন। নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এর কোনো মানে হয় না। এতদিন একসঙ্গে ছিলাম জাতীয় দলে, এই তো মাত্র তোমার বিয়ে হলো। তোমার স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা। আমি জানি তুমি সবসময় তাদের সঙ্গে থাকবে। শান্তিতে ঘুমাও, ডিয়োগো এবং আন্দ্রে, আমরা সবাই তোমাদের খুব মিস করবো।’
শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ‘শান্তিতে থেকো দিয়োগো জোতা (১৯৯৬-২০২৫)। কদিন আগেই সে লিভারপুলের হয়ে প্রিমিয়ার লিগ জিতেছে, আবার পর্তুগালের হয়ে জিতেছে নেশন্স লিগ। ভাইসহ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে সে। খুব দুঃখজনক ঘটনা।’
রোনালদো ও জামালের মতোই স্তব্ধ বিশ্ব ফুটবল। ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে থাকা এক প্রতিভাবান ফুটবলারের এমন প্রস্থান বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেই শোকের ছায়া নামিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ত গ ল দ র ঘটন পর ত গ
এছাড়াও পড়ুন:
পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পে অনিয়ম
‘পানি শুকানোর আগে জেলে এনে মাছ ধরা হয়েছে। পরে পানি শুকিয়ে আরেক দফা মাছ ধরেছে। পুকুরের মাটিও কাটেনি। পুকুরের পাড় দৃষ্টিনন্দন করার জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কাজ না করেই টাকা লুট করা হচ্ছে। পুকুরচুরি নয় যেন সাগরচুরি হয়েছে এখানে।’
নাম না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে এসব কথা বলছিলেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের একজন সাবেক নেতা। বললেন, ‘যারা কাজ করেছে তারা, আর আমরা একদল করি। এজন্য নামটা না ছাপালেই ভালো হয় ভাই।’
উপজেলা পরিষদের পাশে ইউএনওর বাসার সামনের সরকারি পুকুরে উন্নয়নকাজের নামে করা অকাজ হচ্ছে বলে জানিয়ে ওই ছাত্রদল নেতা বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ।
জানা গেছে, এলজিইডির ‘খাল খনন-পুকুর খনন’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লাখ টাকায় পুকুরটির উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। কাজটি পেয়েছে আরতী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু উপঠিকাদার হিসেবে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছেন যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো লোককে সেখানে দেখা যায়নি। উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তুজাম্মিল হক নাছরুম এবং উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল হাসনাত রাসেলসহ কয়েকজন ছাত্র ও যুবদলের নেতারা পুকুরের উন্নয়নকাজ করছেন। এই কাজ করতে গিয়ে তারা পুকুরের আরও বেশি ক্ষতি করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা একজন সরকারি চাকরিজীবী বললেন, পুকুরে আগে থেকেই তিনটি ঘাটলা ছিল। নতুন আরও দুটি ঘাটলা করার কথা ছিল। দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে এবং পশ্চিম কোণে দৃষ্টিনন্দনভাবে বসার স্থান করার কথা ছিল। এছাড়া পুকুরের মাটি খনন করে পাড় ভরাট ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। একটি ঘাটলা নামকাওয়াস্তে করা ছাড়া, আর কিছুই এখানে হয়নি।
অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল হাসনাত রাসেল বললেন, ‘আমরা প্রকল্পে কয়েকজন মিলে কাজ করেছি। পুকুরের পাড়ে মাটি ভরাটও করেছি। কিন্তু মাটি আটকানোর কোনো ব্যবস্থা প্রকল্পে উল্লেখ না থাকায়, বৃষ্টির পানিতে কিছু মাটি পুকুরে গেছে। অন্য ঘাটলাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। ওই পুকুরে তেমন কোনো মাছ ছিল না।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরতী এন্টারপ্রাইজের পরিচালক সহিবুর রহমানের দাবি, তিনি নিজেই কাজ করছেন। প্রাক্কলনে যেভাবে ঘাটলা করার কথা বলা হয়েছে, সেভাবেই তারা করেছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, পুকুরের পানি শুকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ৩০ ফুটের মতো গভীর থাকায়, পানি একেবারে শুকানো যায়নি। তবে পুকুর থেকে মাটি কেটে তোলা হয়েছে।