জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি ধরে রাখতে সিকৃবিতে ‘জুলাই ৩৬ গেইট’
Published: 4th, July 2025 GMT
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) প্রধান গেটটি (ফটক) ছিল ছোট আকারের। সেখানে একটি নান্দনিক গেট নির্মাণে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নান্দনিক ফটক নির্মাণ করা হয়েছে। গত বছরের জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি ধরে রাখতে ফটকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জুলাই ৩৬ গেইট’। নির্মাণকাজ শেষে শুক্রবার ফটকটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড.
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. এ টি এম মাহবুব-ই-ইলাহীসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, হল প্রভোস্ট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধন শেষে ভিসি আলিমুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই ৩৬ গেইট’ শুধু একটি গেট নয়, এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ের এক নীরব সাক্ষী। তরুণদের জন্য এটি একটি অনুপ্রেরণা যেন তারা ভুলে না যায়, কীভাবে অধিকার রক্ষায় মানুষ তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন।
জানা গেছে, গত অর্থবছরে সিকৃবিতে ফটক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণকাজ শুরুর আগে ছাত্রলীগের কিছু নেতা ঠিকাদারের কাছে বড় অঙ্কের অর্থ দাবি করে। এক পর্যায়ে ঠিকাদার কাজ না করেই গা ঢাকা দিলে ফটকের নির্মাণকাজ আটকে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ৫ আগস্টের পর দেশে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি রক্ষায় অনেক স্থাপনার নামকরণ করা হলেও এই প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফটক নির্মাণ করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষকদের বাদ দিয়ে সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীর ধান ক্রয়ের অভিযোগ
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় বোরো মৌসুমে কৃষি অফিসের তালিকাভুক্ত কৃষকদের পরিবর্তে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। বিপাকে পড়েছেন তালিকাভুক্ত প্রান্তিক কৃষকরা।
জানা গেছে, চলতি বছর বোরো মৌসুমে কৃষক অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে গুদামে ধান বিক্রির আবেদন করেন কৃষকরা। অনলাইন থেকে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচিত করা হয়। মুন্সিরহাট খাদ্যগুদামের আওতায় ধোবাউড়া সদর, ঘোষগাঁও এবং বাঘবেড় ইউনিয়নের ৬৯৬ জন কৃষক নির্বাচিত হন। প্রত্যেক কৃষকের কাছে তিন টন করে ৬১০ টন ধান ক্রয়ের কথা এই গুদামে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গত ২৮ মে থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু হয়, যা শেষ হয় ২৮ জুন। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এক ছটাক ধান বিক্রি করতে পারেননি কয়েকজন কৃষক।
অভিযোগ রয়েছে, মুন্সিরহাট এলএসডি গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করেছেন। এদিকে তালিকাভুক্ত কয়েকজন কৃষক খাদ্যগুদামে একাধিকবার ধান বিক্রি করতে গেলে বরাদ্দের ধান কেনা শেষ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
বাঘবেড় ইউনিয়নের মান্দালিয়া এলাকার প্রান্তিক কৃষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমার পরিবারের পাঁচটি নাম তালিকায় রয়েছে। সরকারি শর্ত পূরণ করে আমি ধান রেডি করে গুদামে বিক্রি করতে গেলে বলা হয় ধান কেনা শেষ। পরে আবার বরাদ্দ পেলে ধান নেওয়া হবে। এদিকে দেখি রাতের আঁধারে গুদামে গাড়ি ভর্তি ধান যাচ্ছে অথচ আমাদের ধান নিচ্ছেন না। পরে জানতে পারলাম, একটি প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে গুদামের কর্মকর্তারা ধান কিনছেন।’
এমন অভিযোগ মুন্সিরহাট এলাকার ওলি মাহমুদেরও। তার ভাষ্য, তিনি ধান নিয়ে গেলে বলা হয় ধান কেনা শেষ। অথচ রাতে গাড়িতে করে আসা ধান কিনছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও ধান দিতে পারলাম না। অথচ ধান কেনা শেষ হয়ে গেল। তাহলে আমার বরাদ্দের ধান দিল কে? এই বিচার কে করবে?’
কৃষকদের বাদ দিয়ে বাইরের ব্যবসায়ী চক্রর কাছ থেকে ধান কেনার অভিযোগ তুলে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন কৃষক শাহ আলম।
সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান সংগ্রহের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুন্সিরহাট এলএসডি খাদ্যগুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। তার ভাষ্য, যারা অনলাইনে আবেদন করেছেন সবারই তালিকায় নাম আসায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। একদিকে বরাদ্দের পরিমাণ কম ও কৃষক বেশি থাকায় যারা আগে ধান নিয়ে আসছে তাদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন বলেন, এ বছর নিবন্ধিত কৃষকদের কাছে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। যারা আগে আসছেন, তারা আগে ধান বিক্রি করতে পারবেন। মুন্সিরহাটের এই ঘটনা জানার পর খাদ্য কর্মকর্তাকে সরেজমিন তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ধান ক্রয়ে কোনো অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেউ অনিয়ম করলে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।