জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা বলেছি—নতুন বাংলাদেশ লাগবে, নতুন সিস্টেম লাগবে। পুরোনো খেলায় আমরা অংশগ্রহণ করব না। চাঁদাবাজির ও সন্ত্রাসের রাজনীতিতে আমরা নেই। আমরা পুরোনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসিনি, আমরা খেলার নিয়ম বদলাতে এসেছি। রাজনীতির নিয়ম বদলাতে হবে। দেশের হাল ধরতে ভালো, গ্রহণযোগ্য ও তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে নিয়ে আসতে হবে।’

আজ শনিবার দুপুর দেড়টায় বগুড়া শহরের সাতমাথার মুক্তমঞ্চে জুলাই পদযাত্রা শেষে এক পথসভায় এ কথাগুলো বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। জুলাই ঘোষণাপত্র অবশ্যই সংবিধানে যুক্ত হবে। জুলাই কোনো আবেগের বিষয় নয়, জুলাইয়ের পথেই আগামীর বাংলাদেশ পরিচালিত হবে।’

আওয়ামী লীগের প্রতি ইঙ্গিত করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘মুজিববাদীরা পলাতক। তারা ভারতে পালিয়েছে, কারণ এটা কোনো বাংলাদেশি দল ছিল না, এটা ছিল ভারতীয় পার্টি। গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ আর কোনো বিদেশি ইশারায় চলবে না। নির্বাচন, রাজনীতি—সবকিছু নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ। আগামী ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নতুন বাংলাদেশের শপথ হবে, ঘোষণা করা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র।’

আওয়ামী লীগ শাসনামলের ১৬ বছরে বগুড়ার প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বগুড়ার নাম শুনলেই চাকরি দেওয়া হতো না, সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হতো না, বরং মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হতো। অথচ এই বগুড়া একসময় বাংলার রাজধানী ছিল। পুণ্ড্র সভ্যতার সূচনা হয়েছিল এখান থেকেই। শিক্ষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য আর জ্ঞানবিজ্ঞানের আঁতুড়ঘর ছিল বগুড়া। আমরা সেই পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই, বগুড়ার উন্নয়নে কাজ করতে চাই। এনসিপি কোনো বৈষম্য চায় না। বগুড়াবাসীর ন্যায্য অধিকার আদায়ে লড়াই করবে। আমরা চাই, যার যা প্রাপ্য তা নিশ্চিত হোক। নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।’

বগুড়ার প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বগুড়ার প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। এ জেলায় দলবাজ প্রশাসন ও পুলিশের কোনো স্থান হবে না। প্রশাসন, পুলিশ ও আদালতকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। যদি কেউ পুরোনো কায়দায় দলবাজ প্রশাসন চালাতে চায়, তাহলে তার পরিণতিও হবে ২০১৮ সালের ভোট ডাকাতির দায়ে অভিযুক্ত ডিসিদের মতো।

সভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসাইন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, নাহিদা সারওয়ার ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাকিব মাহদী।

এর আগে শনিবার বেলা ১১টায় বগুড়ার পর্যটন মোটেলে শহীদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে এনসিপি। সেখানে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিচার, সংস্কার; তারপর নির্বাচন।

পথসভায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি

পথসভায় কেউ এসেছেন কৌতূহলে, কেউ বক্তব্য শুনতে। শহরের নিউমার্কেট এলাকার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব জোবেদুর রহমান বলেন, তিনি এনসিপির সমর্থক নন, তবে নেতারা বগুড়াবাসীর জন্য কী বলেন তা শোনার আগ্রহেই এসেছেন।

বগুড়া থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরের কাহালু উপজেলার বীরকেদার গ্রামের কৃষক ইউনুস আলী বলেন, নাহিদের বক্তব্য মোবাইলে শুনেছেন। এবার সরাসরি শুনতেই এসেছেন। শ্যামবাড়িয়া এলাকার কাঠ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসার কাজে শহরে এসে পথসভায় নেতাদের বক্তব্য শুনছি।’

মালগ্রাম এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন থেকেই তরুণদের কার্যক্রমে মুগ্ধ হয়ে পড়েছি। দল গঠনের পর এনসিপির সমর্থক হিসেবে কর্মসূচিতে এসেছি। তবে অন্য দলের মতো নতুনদের এই দলের কেউ যাতে স্রোতে গা না ভাসায় এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। গতানুগতিক রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডের মতো বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ালে মানুষ এনসিপিকেও প্রত্যাখ্যান করবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পথসভ য় র জন ত এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিষ্টদের ফ্যাসিজমের কার্যক্রমে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করা হলো : প্রিন্সিপাল ড. ইকবাল

জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও এডুকেশন সোসাইটির পরিচালক, নারায়ণগঞ্জ -৩, সোনারগাঁ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রিন্সিপাল ড. মো. ইকবাল হোসাইন ভূইয়া বলেন- ফ্যাসিষ্টদের আর কোন কার্যক্রম করতে  দেওয়া  হবে না। ফ্যাসিষ্টদের ফ্যাসিজমের কার্ক্রমে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করা হলো।

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে কেন্দ্র ঘোষিত গণসংযোগ পক্ষ উপলক্ষ্যে সনমান্দী ইউনিয়ন জামায়াত আয়োজিত গণসংযোগ ও পথসভায় তিনি এ বলেন। শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে উপজেলার সনমান্দী ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ শেষে দড়িকান্দি বাসস্ট্যান্ডে এ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। 

তিনি আরও বলেন, সোনারগাঁয়ে কোন প্রকার চাঁদাবাজি থাকবে না। কেউ যদি অন্যায় অত্যাচার করতে চায় আর কাউকে অন্যায় করার সুযোগ দেওয়া হবেনা। জামায়াত ও শিবিরের কর্মীদের গায়ে যদি হাত তোলা হয়, তাহলে ঐ হাত কিন্তু আর হাতের জায়গায় থাকবেনা।

এ সময় থানা আমির মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে গণসংযোগ ও পথ সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সোনারগাঁ দক্ষিন শাখার আমীর মো. মাহবুবুর রহমান, সোনারগাঁ দক্ষিন শাখার সেক্রেটারী মো.  আসাদুল ইসলাম, সনমানদী ইউনিয়নের আমীর মাওলানা  মোমিনুল ইসলাম ও সেক্রেটারী মাওলানা বেলাল শাহ সহ বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীতে এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ রবিবার
  • ৩ আগস্ট দেশ পুনর্গঠনে ইশতেহার ঘোষণা হবে: নাহিদ ইসলাম
  • রাজনীতির আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা চলছে: জামায়াতের আমীর 
  • আমরা যেনতেন কোনো নির্বাচন চাই না: জামায়াত আমির শফিকুর রহমান
  • মানুষের সমস্যার সমাধান করাই আমাদের রাজনীতি: নাহিদ ইসলাম
  • মাদ্রাসায় তালা দিয়ে জামায়াত প্রার্থীর পথসভায় শিক্ষকরা
  • ফ্যাসিষ্টদের ফ্যাসিজমের কার্যক্রমে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করা হলো : প্রিন্সিপাল ড. ইকবাল
  • চাঁদাবাজ মাফিয়াতন্ত্রের সরকার গড়তে দেওয়া যাবে না
  • হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে: নাহিদ