চুরির অভিযোগে দুই কিশোরকে বেঁধে মারধর, ভিডিও ভাইরাল
Published: 6th, July 2025 GMT
চুরির অভিযোগে দুই কিশোরকে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। মারধরের সেই ভিডিও আজ রোববার সকালে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। মারধরের শিকার এক কিশোরের বয়স ১৭ বছর, অপরজনের বয়স ১৬ বছর। দুজনের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার একটি গ্রামে।
ডাসার থানা-পুলিশ বলছে, দেড় মাস আগে ভ্যান চুরির অভিযোগে ডাসার উপজেলার পাশে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানাধীন ভাঙ্গারহাট এলাকায় ওই দুই কিশোরকে আটক করে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে সোপর্দ করে। তবে কোটালীপাড়া থানা-পুলিশ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় বলে জানিয়েছে।
ডাসার উপজেলার স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার দাবি, প্রায় এক মাস আগে ডাসার উপজেলার একটি বাড়িতে রাতে চুরি করতে যায় ওই দুই কিশোর। বাড়ির লোকজন টের পেয়ে দুই কিশোরকে আটক করে প্রথমে হাত বেঁধে রাখেন। পরে সকালে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে দুই কিশোরকে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে লাঠিসোঁটা দিয়ে পেটান। এরপর ওই দুই কিশোরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এ ঘটনার ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, হাত বাঁধা অবস্থায় দুই কিশোরকে বেঁধে মারধর করছেন কয়েকজন। পরে দুজনকে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখতে দেখা যায়। শাহাদাত আকন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, হাত বেঁধে দুই কিশোরকে মারধরের ভিডিওটি দেখেছেন। প্রকাশ্যে এভাবে নির্যাতন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কাম্য নয়।
এদিকে ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্বমাইজপাড়া এলাকায় মহিউদ্দিন মাতুব্বরের বাড়িতে এক সপ্তাহ আগে একটি চুরির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ডাসার থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারে এই চুরির সঙ্গে ওই দুই কিশোরের একজন জড়িত। ওই কিশোরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ধরনের চোরাই মাল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে ওই কিশোর পুলিশের গ্রেপ্তার–আতঙ্কে পলাতক আছে।
মারধরের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে অভিযুক্ত এক কিশোর বলে, ‘আমি কোনো চুরির সঙ্গে জড়িত নই। বিনা অপরাধে আমার ওপর চুরির দায় চাপানো হইতাছে। আমাকে ও আমার এক বন্ধুকে বিনা কারণে শুধু সন্দেহ কইরা বেঁধে মারধর করা হইছে। হাত বেঁধে মারধরের ঘটনা আরও আগের। এহন আবার নতুন করে আমার ঘরে চোরাই মাল পাওয়া গেছে অভিযোগ তুলে হয়রানি শুরু করছে। এ কারণে আমি এলাকায় নাই।’
অভিযুক্ত অপর কিশোর মুঠোফোনে আলাপকালে দাবি করে, তাদের দুজনের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। বিনা কারণে তাদের মারধর করে সেই ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দিয়ে চোর বানানো হয়েছে। সমাজে তাদের হেয়প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। অথচ কোনো চুরির সঙ্গে তারা কেউ জড়িত নয়।
ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ এহতেশামুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাত বেঁধে মারধরের ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। দেড় মাস আগে ডাসারের পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানাধীন ভাঙ্গারহাট এলাকায় ভ্যান চুরি করতে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হয়েছিল ওই দুই কিশোর। তখন তারা কীভাবে যেন ছাড়া পেয়ে যায়। তবে ডাসার থানাধীন কোনো এলাকায় তাদের বেঁধে পেটানো হয়নি। দুই কিশোরের বিরুদ্ধে ডাসার থানায় চুরির একাধিক অভিযোগ আছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড স র উপজ ল র ওই দ ই ক শ র দ ই ক শ রক ম রধর র এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নৌকায় বসিয়ে নদীতে ডুব দিয়ে আর উঠতে পারেননি তিনি
চার বছর বয়সী মেয়ে রুসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পাশের করতোয়া নদীতে গোসল করতে গিয়েছিলেন মাসুম আল মামুন (৪২)। নদীর ধারে বেঁধে রাখা নৌকায় মেয়েকে বসিয়ে রেখে পানিতে ডুব দিয়েছিলেন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ বাবাকে উঠতে না দেখে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি মাকে জানায় রুসফিয়া। পরে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। পরে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর উদ্ধার হয়েছে মাসুমের লাশ।
রোববার বিকেলে পঞ্চগড় পৌরসভার আহমদনগর এলাকাসংলগ্ন করতোয়া নদীতে এ ঘটনা ঘটে। মৃত মাসুম আল মামুনের বাড়ি আহমদনগর এলাকায়। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন।
নিহত মাসুম আল মামুনের মামাতো ভাই জাফর আহমদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নদীতে নেমে তাঁকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে বিকেল ছয়টার দিকে পানির নিচে মাসুমকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তিনি বলেন, তাঁরা শুনেছেন মাসুমের হৃদ্রোগ ছিল। পানিতে ডুব দেওয়ার পর তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে তাঁরা ধারণা করছেন।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘খবর পেয়ে বিকেল পাঁচটার দিকে আমরা নিখোঁজ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারে নদীতে নামি। এ সময় আমাদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনও নদীতে নেমেছিলেন। প্রায় ৪৫ মিনিট খোঁজাখুঁজির পর হঠাৎ করেই স্থানীয় একজনের পায়ে মানুষের শরীরের মতো কিছু একটা লাগে। পরে সেখান থেকে মাসুম আল মামুনের লাশ খুঁজে পাই। পরে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।’
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।