বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা বহাল তবিয়তে রয়েগেছে। তারা চান না দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হোক। 

এইসব দোসরদের অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। একই সাথে স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাঁধা দুর্নীতি এই দুর্নীতিরোধ করে স্বাস্থ্য খাতকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সবার সমন্বিত প্রয়াস দরকার।

সোমবার (৭ জুলাই) ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) নারায়ণগঞ্জ শাখার আয়োজনে “ডেঙ্গু রোগের সাম্প্রতিক চিকিৎসা ও সচেতনতা” শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা.

পঙ্কজ নাহা। প্যানেল অফ এক্সপার্ট হিসেবে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ড্যাবের সদস্য সচিব ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ।

ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, “আপনাদের মনে আছে, ২০২৩ সালে যখন দেশে ডেঙ্গুর পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়, তখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী মেয়র তাপস বিদেশ সফরে ছিলেন ১৭ দিন। দৃশ্যত সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো সমন্বিত কার্যক্রম ছিল না।”

চলতি বছরে ডেঙ্গু সংক্রমনের হার বিগত দুই বছরের তুলনায় কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, "চলতি বছর ২০২৫ সালের ৬ জুলাই পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১২,২৭১ জন। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩১৭ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ইতোমধ্যে পৌঁছেছে ৪৫ জনে। এই হার যেনো বিগত বছরের মত না হয় সেই ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।"

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “বারবার বলেছি—পুরোনো, নিষ্ক্রিয় ফগিং মেশিন দিয়ে লোক দেখানো কর্মসূচি বন্ধ করুন। এখন সময় এসেছে মশক নিধনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার। জেনেটিক কৌশল, ‘উলবাকিয়া’ পদ্ধতির মতো বৈজ্ঞানিক পন্থাগুলোর বাস্তবায়ন জরুরি।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রফেসর মামুন মাহমুদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাসার, নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. এএফএম মুশিউর রহমান।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সোসাইটি অফ মেডিসিনের সদস্য সচিব ডা. জাকারিয়া আজিজ, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাহমুদুর রহমান নোমান, ডা. জাহিদুল কবির, প্লাস্টিক সার্জন ডা. শরীফ, ডা. মিতালী, ডা. সাইফুল আলম বাদশাসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসকবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা ডেঙ্গু মোকাবিলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং বলেন, এ ধরনের স্বাস্থ্য সংকট প্রতিরোধে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র জন ত ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ন র য়ণগঞ জ জ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।

নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।

নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।

তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা। 

এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।

তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা। 

এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। 

তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।

চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না। 

এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। 

এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই। 

তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।

তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো? 

আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।

এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

 এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • “শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, ইন্ধন থাকতে পারে তৃতীয় পক্ষের”
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০ (ভিডিও)
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০
  • ফতুল্লায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
  • সোনারগাঁয়ের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির চিঠি
  • নারায়ণগঞ্জে বিদেশি পিস্তল-গুলিসহ গ্রেপ্তার ৩
  • সড়ক দুর্ঘটনায় যুবদল নেতা রিয়াদের দুই মেয়ে গুরুতর আহত : দোয়া প্রার্থনা 
  • আড়াইহাজারের সেপটি ট্যাংকির ঝুঁকি ও করণীয় নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা
  • বন্দর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত
  • ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে