পুলিশের ৫ অতিরিক্ত ডিআইজি ও ১০ এসপিকে বদলি
Published: 9th, July 2025 GMT
পুলিশের ৫ অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) এবং ১০ জন পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ ১৬ জনকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বদলি করা হয়েছে। আজ বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এসব কর্মকর্তাকে বদলির তথ্য জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো.
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বদলির আদেশ হওয়া পাঁচজন অতিরিক্ত ডিআইজির মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তরের রেবেকা সুলতানাকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), রাজশাহীর সারদার ফয়সল মাহমুদকে সিলেট রেঞ্জ, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) মো. আশরাফুল ইসলামকে পুলিশ সদর দপ্তরে, পুলিশ সদর দপ্তরের ফারুক আহমেদকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদর দপ্তরে এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) মো. মিজানুর রহমানকে ঢাকার ট্রাফিক ড্রাইভিং স্কুলে (টিডিএস) বদলি করা হয়েছে।
একই আদেশে ১০ জন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্যে হাইওয়ে পুলিশের আ ক ম আকতারুজ্জামান বসুনিয়াকে রংপুর রেঞ্জ উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কার্যালয়ে, বরিশাল ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের মো. সাখাওয়াত হোসেনকে রাজারবাগ পুলিশ টেলিকম, হাইওয়ে পুলিশের মো. খাইরুল ইসলামকে ট্যুরিস্ট পুলিশে, পিবিআইয়ের (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) বদলির আদেশপ্রাপ্ত খন্দকার নুর রেজওয়ানা পারভীনকে পুলিশ সদর দপ্তরে, নোয়াখালীর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের (পিটিসি) মীর আবু তৌহিদকে সিআইডিতে, ট্যুরিস্ট পুলিশের মো. মিজানুর রহমানকে এপিবিএনে, খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) উপপুলিশ কমিশনার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমানকে সিআইডিতে, কুষ্টিয়া ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের সৈকত শাহীনকে শিল্পাঞ্চল পুলিশে, এটিইউর কাজী মো. আবদুর রহীমকে চট্রগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে, সিআইডির মো. আব্দুল্লাহ আল ইয়াছিনকে বরিশাল ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে বদলি করা হয়েছে। একই প্রজ্ঞাপনে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. আমিনুর রহমানকে এসবিতে বদলি করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন ড আইজ স আইড
এছাড়াও পড়ুন:
নোবিপ্রবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ, শাস্তি দাবি
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) হাউজিং অ্যান্ড এস্টেট শাখার কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের কর্তৃক ছাত্রীদের নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ উঠেছে। এ কটূক্তির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন নোবিপ্রবির ছাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধন শেষে ওই কর্মকর্তার বরখাস্তের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ তামজিদ হোছাইন বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।
আরো পড়ুন:
নোবিপ্রবি উপাচার্যের সঙ্গে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতবিনিময়
সোনাপুরের যানজটে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের দৈনিক ২৫০০ ঘণ্টা অপচয়
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, বুধবার (১৫ অক্টোবর) নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ছাত্রীসংস্থা নিয়ে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কর্মকর্তা আব্দুল কাদের রহমান মন্তব্য করেন, ‘আর নয় গুপ্ত ও পরকীয়া, এবার স্বামী হিসাবে স্বীকৃতি।’ যা মানহানিকর, কুরুচিপূর্ণ ও বিদ্বেষমূলক।
তারা জানান, মোহাম্মদ রহমান কেবল নোবিপ্রবির ছাত্রীদের ব্যক্তিগত মর্যাদা ও নিরাপত্তাবোধকে হেয় করেনি, বরং নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি সামষ্টিকভাবে ঘৃণাপূর্ণ ও অশালীন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে এ ধরনের নিন্দনীয় বক্তব্য কেবল অনভিপ্রেতই নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা, পেশাগত আচরণবিধি ও নারী-পুরুষ সমতার সাংবিধানিক মূল্যবোধেরও পরিপন্থি।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী তানজিনা আক্তার রিমি বলেন, “ছাত্রীদের নিয়ে এ ধরনের যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ, অবমাননাকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য কোনোভাবেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আওতাভুক্ত নয়, বরং এটি সরাসরি হয়রানি, চরিত্রহনন ও মানসিক নির্যাতনের শামিল। ভিন্ন আদর্শ, মত বা চিন্তার শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ এই আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সম্মানজনক শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার পথে বড় বাধা। আমরা উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”
মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থী রাহীকুম মাখতুম বলেন, “নোবিপ্রবি কর্মকর্তার নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা জানি, আমাদের মা-বাবার পরেই প্রশাসনই আমাদের ভরসার জায়গা। সবসময় তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে অবিভাবকের ভূমিকা পালন করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।”
আরেক শিক্ষার্থী নিশাদ আহমেদ জীবন বলেন, “এক কর্মকর্তা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্লাট শেমিং করা হয়েছে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে এই ক্যাম্পাসে রাজনীতি চাই না। কিন্তু যে শিক্ষার্থী তার মতাদর্শ প্রকাশ করতে চায়, সে একজন নারী শিক্ষার্থী হোক বা ছেলে, শুধু রাজনৈতিকভাবে তাকে স্লাট শেমিং করা হলে এতে আমি বিন্দুমাত্র ছাড় দেব না।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের এই রাজনৈতিক পরিসরে রাজনৈতিক সচেতন নারীদের অভাব। যখন নারীরা রাজনৈতিক সচেতন হয়ে সামনে উঠে আসেন, তখন তাদের স্লাট শেমিং করার একটা কালচার ক্রিয়েট হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে। এটার বিরুদ্ধে আমার অবস্থান সবসময় থাকবে। স্লাট শেমিং এর বিষয়টা আমাদের একজন সহকারী রেজিস্ট্রার করছে। প্রশাসনকে অনতিবিলম্বে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে, যাতে করে একজন নারী মতাদর্শ প্রকাশ করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার না হন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, “এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ কে সামনে রেখে নারীর ক্ষমতায়নকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা জায়গায় আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের মাধ্যমে হেনস্তা করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “ওই কর্মকর্তা নিয়ম ভঙ্গ করে এখনো কর্মরত আছেন। কিন্তু আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কোনো রকম ব্যবস্তা নিতে দেখিনি। তাই মানববন্ধন থেকে প্রশাসনকে আহ্বান জানায়, অনতিবিলম্বে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”
মানববন্ধনে ছাত্রীরা ওই কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে তার মন্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবিলম্বে প্রশাসনিক তদন্ত ও প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নারী শিক্ষার্থীদের সম্মানহানি ও নৈতিক হয়রানির দায়ে তার বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত শাস্তি হিসেবে অবিলম্বে তাকে বরখাস্তের দাবি জানান।
ঢাকা/শফিউল্লাহ/মেহেদী