ঘাড়ের সমস্যায় হাসপাতালে ভারত অধিনায়ক, বোলিং কোচ বললেন ঘুমের সমস্যা
Published: 16th, November 2025 GMT
ঘাড়ে টান লাগায় ভারত অধিনায়ক শুবমান গিলকে শনিবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রোববার সকালেও তিনি হাসপাতালে আছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। কলকাতায় চলমান ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টে তিনি আর মাঠে ফিরছেন না।
বিসিসিআইয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘(গতকাল) দিনের খেলা শেষে গিলকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি এখন সেখানে পর্যবেক্ষণে আছেন। এই টেস্টে তিনি আর খেলতে পারবেন না। বিসিসিআইয়ের মেডিকেল দল তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখবে।’
শনিবার রাতেই গিলের মাঠে ফেরার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে ওঠে। ক্রিকেটবিষয়ক পোর্টাল ইএসপিএনক্রিকইনফো জানায়, ঘাড়ে টান লাগার পর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাঁকে স্ট্রেচারে করে মাঠ থেকে বের করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তখন তাঁর গলায় নেক ব্রেস ছিল এবং দলের চিকিৎসক সঙ্গে ছিলেন।
গতকাল ব্যাটিংয়ের সময় ঘাড়ে ব্যথা পান গিল। সাইমন হারমারের বলে সুইপে বাউন্ডারি মারার পরই অস্বস্তি অনুভব করে ঘাড়ের পেছনে হাত রাখেন, এরপর ফিজিওকে ডাকেন। পরে দ্রুত মাঠ ছেড়ে যান। গিল এরপর আর ব্যাট করতে নামেননি। ভারত প্রথম ইনিংসে ১৮৯ রানে অলআউট হয়।
ইএসপিএনক্রিকইনফো তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, গতকাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু হওয়ার আগে সম্প্রচারকরা গিলকে কোচিং স্টাফ এবং মেডিকেল দলের একজন সদস্যের সামনে ঘাড়ের ব্যায়াম করতে দেখেন। এর আগেও ২০২৪ সালের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘাড়ে ব্যথার কারণে একটি টেস্ট খেলতে পারেননি তিনি।
ভারতের বোলিং কোচ মরনে মরকেল অবশ্য এটিকে গুরুতর হিসেবে দেখছেন না।
শনিবার দিনের খেলা শেষে তিনি বলেছেন, ‘গিল খুব ফিট খেলোয়াড়। নিজেকে খুব ভালোভাবে দেখাশোনা করে। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে তাঁর ঘাড় শক্ত হয়ে যায়, এটা দুঃখজনক। আমার মনে হয়, আগে আমাদের বুঝতে হবে ঘাড়ের জড়তা কীভাবে হয়েছে। হয়তো আগের রাতে ঠিকমতো ঘুম হয়নি। আমি মনে করি না এটা ওর ওপর খেলাজনিত চাপের কারণে হয়েছে।'
গিলের অনুপস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঋষভ পন্ত।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্পিন-জালে আয়ারল্যান্ডকে ‘শিকার’ বাংলাদেশের
প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংটাই বড় পার্থক্য তৈরি করে দিল দুই দলের। তা আংশিক সত্য। পুরোটা হলো, বাংলাদেশের স্পিন-জালে আটকা পড়েছে আয়ারল্যান্ড। বোলাররা টেস্ট ম্যাচ জেতায়। প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নিতে না পারলে যতই ভালো ব্যাটিং হোক না কেন ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা থাকে না। সিলেটে তেমন কিছুই হলো। আয়াল্যান্ডকে ২৮৬ রানে আটকে দেওয়ার পর বাংলাদেশ ৫৮৭ রান করে ৮ উইকেটে। ৩০১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে আয়ারল্যান্ড পারেনি ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে। ইনিংস ও ৪৭ রানের দারুণ জয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ।
দুই ইনিংস মিলিয়ে আয়ারল্যান্ডের ২০ উইকেটের ১৪টি নিয়েছেন বাংলাদেশের তিন স্পিনার। আর বাংলাদেশের ৮ উইকেটের ৬টিই পেয়েছেন আইরিশ স্পিনাররা। বাংলাদেশ নিজেদের শক্তির জায়গা স্পিনে ফাঁদ পেতেছিল। সেই স্পিনেই শেষ পর্যন্তই ধরাশয়ী আয়ারল্যান্ড। অভিষিক্ত হাসান মুরাদ প্রথম ইনিংসের ২ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছেন ৪ উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে তাইজুলের শিকার ৫টি। দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজ কোনো উইকেট না পেলেও প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নিয়ে ছিলেন দলের সেরা। সব মিলিয়ে স্পিন আক্রমণে আয়ারল্যান্ডকে উড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ২৮৬ রান করা আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে করে ২৫৪ রান।
আরো পড়ুন:
ইনিংস ও ৪৭ রানে জিতল বাংলাদেশ
রেকর্ডময় দিনে বড় জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ
গতকাল তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পেতে থাকে বাংলাদেশ। ৫ উইকেটে ৮৬ রানে দিনের খেলা শুরু করে তারা। মাথায় ছিল ইনিংস হার এড়ানোর বোঝা। আগের দিন শেষ বিকেলে যে লড়াইটা তারা করতে পারেনি, আজ প্রায় তিন ঘণ্টার লড়াইয়ে তা পেরেছিল অতিথিরা। পরাজয় অনুমিতই ছিল। তবুও শেষ ৫ উইকেট হাতে রেখে আজ ১৬৮ রান যোগ করতে পারে।
দিনের শুরুতে তাইজুল সাফল্য এনে দেন। তার বল স্লগ সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে শর্ট ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে সাদমানের হাতে ক্যাচ দেন হামফ্রিজ। এরপর সপ্তম উইকেটে জুটি বাঁধেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ও অ্যান্ডি বালবিরনি। প্রতি আক্রমণে গিয়ে খুব সহজেই ব্যাটিং করেন তারা। মুরাদ বোলিংয়ে এসে এই জুটি ভাঙেন। তার সোজা বল স্লগ করতে গিয়ে এলডিব্লিউ হন আইরিশ অধিনায়ক। বালবিরনি ৬৩ বল খেলে ৫টি চারে ৩৮ রানে লড়াকু ইনিংস খেলে যান।
সকালের সেশনে বাংলাদেশের সাফল্য ২ উইকেট। দ্বিতীয় সেশনে ফিরে বাকি ৩ উইকেট নিয়ে জয়ের কাজ সারেন স্পিনাররা। হাসান মুরাদ আবার আক্রমণ করে ফেরান ম্যাকব্রাইনকে। এরপর তার শিকার জর্ডান নীল। নবম উইকেটে জর্ডান নীল ও ব্যারি ম্যাকার্থি ৫৬ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়েন। তাতে আড়াইশ পেরিয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের রান। মনে হচ্ছিল, ইনিংস পরাজয় এড়িয়ে যাবেন তারা। কিন্তু তাইজুল ম্যাকার্থিকে থামিয়ে দিলে সব আশা শেষ হয়ে যায়। ২৭ বলে ২টি চার ও ১ ছক্কায় ২৫ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ওখানেই শেষ হয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের প্রতিরোধ।
প্রথম ইনিংসে ১৭১ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে ১-০ ব্যবধানে। ১৯ নভেম্বরে মিরপুরে শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। যেই ম্যাচ দিয়ে মুশফিকুর রহিম ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট খেলবেন।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল