পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে লাল চাঁদ সোহাগ (৩৯) নামে এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যায় জড়িতদের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।’

তিনি বলেন, ‘এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২-এর ধারা ১০-এর অধীনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।’

বুধবার হাসপাতালের সামনে ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার আগে সোহাগকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে এবং ইট-পাথরের টুকরা দিয়ে আঘাত করে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে বিবস্ত্র করা হয়। তার শরীরের ওপর উঠে লাফান কেউ কেউ।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার কেরানীগঞ্জ থেকে এজাহারভুক্ত আসামি মনির হোসেন ও আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১০। এর আগে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে।

সিসিটিভির ছবি দেখে পুলিশ ও স্থানীয়রা আরও চারজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তারা হলেন– মিটফোর্ড হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারী মো.

মনির, অ্যাম্বুলেন্স চালক নান্নু, চকবাজার থানা ছাত্রদলের সদ্য বহিষ্কৃত সদস্য সচিব অপু দাস ও চকবাজার থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সরোয়ার হোসেন টিটু। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল গতকাল এ ঘটনায় নাম আসা পাঁচজনকে নিজেদের সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য ক ণ ড আইন উপদ ষ ট হত য ক ণ ড ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

জুবিন গার্গের মৃত্যু: কারাগারের বাইরে সহিংস বিক্ষোভ

ভারতের বরেণ্য সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গের মৃত্যু নিয়ে ক্রমশ ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। এ গায়কের মৃত্যু মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—শ্যামকানু মহন্ত, সিদ্ধার্থ শর্মা, সন্দীপন গার্গ, নন্দেশ্বর বরা ও প্রবীণ বৈশ্য।   

বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে গ্রেপ্তারকৃতদের কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বাকসা ডিস্ট্রিক্ট জেলে আনা হয়। এসময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কারণ জুবিনের ক্ষুব্ধ ভক্ত ও স্থানীয়রা অভিযুক্তদের “জনতার হাতে তুলে দেওয়ার” দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। 

আরো পড়ুন:

দে দে পেয়ার দে টু: টাবুকে খুঁজছেন ভক্তরা, যা বললেন অজয়

অভিনেতা পঙ্কজ ধীর মারা গেছেন

দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা চিৎকার করে বলছিলেন, “আমরা ওদের এখানে চাই না। ওদের ভেতরে রেখো না। আমাদের হাতে তুলে দাও।” জুবিনের মৃত্যুর পর থেকে এই ক্ষোভ রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবাদকারীরা ‘#JusticeForZubeenGarg’ লেখা পোস্টার ও ব্যানার হাতে পুলিশের গাড়িবহরে পাথর ও জুতা ছুড়তে থাকে। জেল চত্বরে পার্ক করা কয়েকটি গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয়।  

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও ফাঁকা গুলি চালায়। তবু বিক্ষোভকারীরা প্রতিরোধ চালিয়ে যায় এবং অভিযুক্তদের জনসমক্ষে আনার দাবি জানাতে থাকে বলেও এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক আহত হয়েছেন। একজন নারী পুলিশ অফিসারও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পুলিশের একটি গাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

অভিযুক্ত পাঁচজনকে বর্তমানে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বাকসা জেলে রাখা হয়েছে। জেল চত্বরে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে থাকলেও উত্তেজনা পুরোপুরি থামেনি, আর জনতার মধ্যে জুবিন গার্গের জন্য ন্যায়বিচারের দাবিও ক্রমেই বাড়ছে। 

গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে মারা যান জুবিন গার্গ। সময় যত গড়াচ্ছে, তার মৃত্যু নিয়ে তৈরি হচ্ছে ধোঁয়াশা। নানা ধরনের সন্দেহ দানা বাঁধছে। প্রাথমিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে জুবিনের মৃত্যু হয়েছে। পরে দাবি করা হয়, স্কুবা ডাইভিং নয়, সাঁতার কাটতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। তার গানের দলের সদস্য শেখরের দাবি, বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে তাকে। ফলে বরেণ্য এই গায়কের মৃত্যু যেন গোলক ধাঁধায় রূপ নিয়েছে।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুবিন গার্গের মৃত্যু: কারাগারের বাইরে সহিংস বিক্ষোভ